কর্মরতদের সহকর্মীদের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো থাকবে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা ও ব্যবহারে সংযত থাকা দরকার। ... বিশদ
এবিষয়ে পুরাতন মালদহ পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার সৌমেন সরকার বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে বাইরে আছি ব্যবসায়িক কাজে। তবুও এলাকার মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে। আমরা কয়েকজন কাউন্সিলার একসঙ্গেই ছিলাম। তবে বাকিরা চলে গিয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক তৃণমূল কাউন্সিলার বলেন, কার্নিভালের পরে একটু ছুটি কাটাতে গিয়েছিলাম। তবে বাড়ি ফিরে এসেছি। পরিষেবা নিয়ে কোনও সমস্যা হওয়ার কথা নয়। কারণ সার্টিফিকেট দেওয়ার জন্য কর্মীরা ছিলেন।
পুরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার সিপিএমের সুজন সাহা বলেন, ওরা কি করছে, আমার জানা নেই । তাঁদের সঙ্গে আমার যোগাযোগও নেই। আমি নিয়মিত বাড়ির অফিস খোলা রাখি। সাধারণ মানুষজন আসছেন। তাঁদের সমস্যা, সুবিধা অসুবিধা সবকিছুই শোনা হচ্ছে।
পুরসভার ভাইস-চেয়ারম্যান তৃণমূল কংগ্রেসের চন্দনা হালদার বলেন, কয়েকজন কাউন্সিলার ব্যবসায়িক কাজে শহরের বাইরে যাতায়াত করেন, সেকথা অস্বীকার করার নয়। তবে বাসিন্দারা পরিষেবা পাচ্ছেন না,একথা মানতে পারছি না। আমি নিয়মিত বাড়ির অফিসে বসি। সবারই ব্যক্তিগত কোনও কাজ থাকে। হয়তো সেরকম কোনও কাজে কাউন্সিলাররা বাইরে যেতে পারেন।
এদিকে শহরের বাসিন্দারা বলেন, নতুন বছরের শুরু থেকেই কাউন্সিলারদের দেখা মিলছে না। তাঁদের পুরসভাতেও দেখা যাচ্ছে না। তাঁরা নিজস্ব অফিসেও থাকছেন না। ভোটার কার্ড বা রেশন কার্ডের বিভিন্ন কাজে কাউন্সিলারদের দ্বারস্থ হই আমরা। এছাড়া পুর পরিষেবা সংক্রান্ত অন্য সমস্যাও রয়েছে। কিন্তু তাঁদের দেখা না মেলায় আমরা হয়রান হয়ে যাচ্ছি। সরকারি অফিস থেকে অনেক সময় কাউন্সিলারদের রেফারেন্স সার্টিফিকেট চায়। সেটিও দিতে পারছি না।
পুরাতন মালদহ পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান তৃণমূল কংগ্রেসের বিভূতিভূষণ ঘোষ কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে এবিষয়ে পুরাতন মালদহ পুরসভার আরও এক প্রাক্তন চেয়ারম্যান বিশ্বনাথ সুকুল বলেন, কাউন্সিলারদের সবসময়ই জনসাধারণকে সময় দিতে হবে। তা না করে অনেকেই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকেন, তাহলে মানুষ তাঁদের বাড়িতে গিয়ে পাবেন কি করে? অনেকেরই কাউন্সিলারের কাছ থেকে চেয়ারম্যানের সার্টিফিকেট নেওয়ার প্রয়োজন হয়। তাঁরা যদি নাই থাকেন, তাহলে বাসিন্দারা বিপাকে পড়বেন।
তৃণমূল পরিচালিত পুরাতন মালদহ পুরসভায় কুড়িজন কাউন্সিলার রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে একজন মাত্র কাউন্সিলার বাদ দিয়ে বাকি ১৯ জন কাউন্সিলার তৃণমূল কংগ্রেসের। শহরের বাসিন্দাদের অভিযোগ, বোর্ডের মেয়াদ তো এখনও শেষ হয়নি। কিন্তু এখনই কাউন্সিলারদের দেখা মিলছে না। যে কারণে নাগরিক পরিষেবা পেতে বাসিন্দাদের হয়রানি হচ্ছে।
এনআরসি আতঙ্কে অনেকেই প্রয়োজনীয় সার্টিফিকেট নিতে কাউন্সিলারদের কাছে যাচ্ছেন আর তাঁদের দেখা না পেয়ে ফিরে আসছেন। বেশিরভাগ সময়ে ওয়ার্ড কর্মীদের কাছ থেকে সাহায্য নেওয়া হচ্ছে। ছাত্রছাত্রীরাও সার্টিফিকেটের জন্য কাউন্সিলারদের খোঁজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। কাউন্সিলাররা না থাকলে এলাকার নাগরিক পরিষেবা নিয়ে নজরদারি তেমন করা হয় না বলেও অভিযোগ উঠেছে। ফলে পরিষেবার মান কমে যাচ্ছে।