সঠিক বন্ধু নির্বাচন আবশ্যক। কর্মরতদের ক্ষেত্রে শুভ। কর্মক্ষেত্রে বদলির কোনও সম্ভাবনা এই মুহূর্তে নেই। শেয়ার ... বিশদ
শহরতলির পাহাড়পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে বালাপাড়ায় রায় পরিবারের আদি বাস। এখন অবশ্য পরিবারের সদস্যরা কিছুটা ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছেন। কুশদেব রায় বলেন, বৈকুণ্ঠপুর এস্টেটের রাজা প্রসন্ন দেব আমার ঠাকুরদা ধৈর্য্য নারায়ণ রায়কে রাধাকৃষ্ণের পিতলের বড় মূর্তি উপহার দিয়েছিলেন। ছেলেবেলায় সেই মূর্তি দেখেছি। ঠাকুরের স্নানের জন্য শ্বেত পাথরের থালাও উপহার দিয়েছিলেন। তবে ১৯৭০ সালে ওই মূর্তি চুরি হয়ে গিয়েছে। তবে শ্বেত পাথরের থালাটি আজও রয়ে গিয়েছে। রায় পরিবারের আরেক সদস্য সুবেন রায় বলেন, আমাদের বাড়িতে রাজার হাতি বাঁধা থাকত। রাজা কোথাও গেলে এমনকী বনবিহারে গেলে এখান থেকে রাজবাড়িতে হাতি চলে যেত। রাজ পরিবারের দুর্গাপুজোয় আগে মহিষ বলি হতো। সেখানে ঠাকুরদা ধৈর্য্য নারায়ণ রায় মহিষ বলি দিতেন। রাজার দেওয়া খর্গটি আজও পরিবারের কাছে রয়ে গিয়েছে। এছাড়াও একটি বহু পুরনো ও বিশালাকার রাজ পরিবারের দেওয়া শঙ্খ এখনও আমাদের পরিবারেই রয়ে গিয়েছে। রায়বাড়িতে দোল পুজো হতো। রাজা নিজে হাতির পিঠে চেপে সেই পুজোয় আসতেন। রাজ পরিবারের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক থাকলেও রায় পরিবার বংশপরম্পরায় আগে কৃষিকাজ করত। পরিবারের সদস্যরা বলেন, এক সময় রাজা ছিল রাজার রাজত্ব ছিল, এখন সবকিছুই হারিয়ে যাওয়া স্মৃতি সেই গল্পকথা পরবর্তী প্রজন্মও শুনতে চায়। অনেক কথা অনেক স্মৃতি বিস্মৃতির অতলেও তলিয়ে গিয়েছে।
জলপাইগুড়ির ইতিহাস গবেষক উমেশ শর্মা বলেন, বৈকুণ্ঠপুর রাজ এস্টেটের প্রতিষ্ঠা হয়েছিল ১৫২৩ সালে। শিষ্য সিংহ ছিলেন প্রথম রাজা। এখানকার প্রথম রাজবাড়ি ছিল সন্ন্যাসীকাটায়, পরবর্তীতে বোদাগঞ্জে রাজবাড়ি স্থানান্তরিত হয়। শেষে জলপাইগুড়ি শহরে বর্তমান রাজবাড়িতে বৈকুণ্ঠপুর এস্টেট হয়েছে। রাজ পরিবারের শেষ রাজা প্রসন্ন দেব রায়কত ১৯০৪ সালে সিংহাসনে বসেন। ১৯৪৬ সালে তাঁর জীবনাবসান হয়। রাজার মৃত্যুর পর তাঁর মেয়ে প্রতিভাদেবী ১৯৫৪ সাল পর্যন্ত রাজকার্য চালিয়েছেন। এরপর রাজ আমলের অবসান হয়েছে। গবেষক উমেশবাবু আরও বলেন, রাজা প্রসন্ন দেব রায়কত শিক্ষানুরাগী ছিলেন। তাঁর জনহিতৈষী ও সমাজসেবা মূলক নানা কাজের কথা গবেষণায় উঠে এসেছে। বৈকুণ্ঠপুর রাজ পরিবারের সঙ্গে জলপাইগুড়ির বালাপাড়ার রায় পরিবারের যোগসূত্র অনেক আগে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলেও কিছু উপহার সামগ্রী আজও রাজ আমলের স্মৃতি বহন করে চলেছে।