বিএনএ, রায়গঞ্জ: বুধবার পৃথক দু’টি ঘটনায় কালিয়াগঞ্জে এক গৃহবধূ ও এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত গৃহবধূ একটি বেসরকারি ঋণদানকারী সংস্থার কাছ থেকে ঋণ নিয়েছিলেন। তার কিস্তির টাকা চাইতে ওই দিন দুপুরে শেঠ কলোনির বাড়িতে সংস্থা থেকে দুই ব্যক্তি এসেছিলেন। এরপর সন্ধ্যায় ঘরের ভিতর থেকে ওই গৃহবধূর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। অপর দিকে, কালিয়াগঞ্জের সুখানদিঘিতে এক ব্যক্তিকে মারধর করা হলে ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়। অভিযোগ, ওই ব্যক্তি মাঝেমাধ্যেই সুখানদিঘিতে তার আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়ে গন্ডগোল করতেন। এদিনও সেখানে গিয়ে ওই ব্যক্তি একজনকে মারধর করে বলে অভিযোগ। এরপরেই প্রহৃত ব্যক্তির আত্মীয়স্বজন তাকে মারধর করলে তার মৃত্যু হয়। পুলিস দু’টি ঘটনারই তদন্ত শুরু করেছে।
পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কালিয়াগঞ্জের শেঠ কলোনী এলাকায় মৃত গৃহবধূর নাম নয়নী রায়(৪৭)। তার স্বামী ডলু পেশায় ভ্যান চালক। এই দম্পতির দুই মেয়ে আছে। তাঁদের বিয়েও হয়ে গিয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, নয়নীদেবী বিভিন্ন অনুষ্ঠান বাড়িতে রান্নার কাজে সহায়তা করতেন। তিনি একটি বেসরকারি ঋণদানকারী সংস্থার থেকে কিছু দিন আগে ঋণ নিয়ে ছিলেন। মাসে মাসে তার কিস্তির টাকা তাঁকে দিতে হতো। বুধবার সেই কিস্তির টাকা দেওয়ার কথা ছিল। কিস্তির টাকা নিতে ওই সংস্থার দুই ব্যক্তি ওই দিন দুপুরে তাঁর বাড়িতেও এসেছিলেন। কিন্তু তিনি কিস্তির টাকা সেদিন দিতে পারেননি। নয়নীদেবীর স্বামী ওই সময় বাড়ি ছিলেন না। তিনি সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরলে ঘর বাইরে থেকে তালা দেওয়া দেখতে পান। স্ত্রীর খোঁজ করলে তাঁকে পাওয়া যাচ্ছিল না। এরপর প্রতিবেশীরাও খোঁজ শুরু করেন। সেই সময়েই বাড়ির শোওয়ার ঘরের ভিতরেই তাঁকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পাওয়া যায়। এরপর পুলিস এসে মৃতদেহ উদ্ধার করে।
নয়নীদেবীর প্রতিবেশীরা বলেন, তিনি একটি ঋণদানকারী সংস্থা থেকে ঋণ নিয়েছিলেন। সেখানকার কিস্তির টাকা নিতে দুই ব্যক্তি বাড়িতে এসেছিলেন। কিন্তু নয়নীদেবী সেদিন কিস্তির টাকা দিতে পারেননি। তাঁরা পরে আবার আসবেন বলে চলে গিয়েছিলেন। এরপরেই বিকালে ঘর থেকে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। তিনি ঘরে ঢুকে বেড়ার দরজার বাইরের দিকে চেন সহ তালাটিকে ঘুরিয়ে দিয়ে ছিলেন। সেই কারণেই প্রথমে বাইরে থেকে কিছু বোঝা যাচ্ছিল না। পুলিস এসে মৃতদেহ উদ্ধার করে।
এদিকে, কালিয়াগঞ্জের সুখানদিঘি এলাকায় মৃত ব্যক্তির নাম পদ্দ মার্ডি(৫০)। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে তিনি রায়গঞ্জে থেকে রিকশ চালাতেন। মাঝেমধ্যেই তিনি সুখানদিঘিতে তাঁর এক আত্মীয়ের বাড়িতে আসতেন। সেখানে এসে মদ্যপ অবস্থায় গ্রামবাসীদের সঙ্গে গণ্ডগোলও করতেন বলে অভিযোগ। অন্যান্য দিনের মতো এদিনও ওই ব্যক্তি গ্রামে গিয়ে বিমল বর্মন নামে ৭০ বছর বয়সি এক ব্যক্তিকে নিগ্রহ করেন। ওই ব্যক্তিকে কালিয়াগঞ্জ স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। লাোকজন এই ঘটনার প্রতিবাদ করেন। সেই সময় তাকে মারধর করা হলে ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়। এই ঘটনাতেও পুলিস নির্দিষ্ট মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে।