কর্মক্ষেত্রে অশান্তির সম্ভাবনা। মাতৃস্থানীয় কার শরীর-স্বাস্থ্যের অবনতি। প্রেমে সফলতা। বাহন ক্রয়-বিক্রয়ের যোগ। সন্তানের বিদ্যাশিক্ষায় উন্নতি।প্রতিকার: ... বিশদ
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জগন্নাথ সরকার বলেন, বৃহস্পতিবার শিশুটিকে হাম ও জেই’র ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছিল। তারপরই শিশুটির মৃত্যু হয়েছে। ওইদিন একটি সেন্টারে অনেক শিশুকেই জেই ও হামের ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছিল। অন্য সব শিশু ভ্যাকসিন নেওয়ার পর পুরোপুরি সুস্থ রয়েছে। কেন একটি শিশু অসুস্থ হয়ে মারা গেল, সেটা নিয়ে আমাদেরও সন্দেহ আছে। তাই শিশুটির মৃতদেহ শুক্রবার ময়নাতদন্ত করানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট দেখার পর মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।
মৃত শিশুটির বাবা সঞ্জয় রায় বলেন, আমার যমজ ছেলে শিবম ও শুভমকে বৃহস্পতিবার শিকারপুর ললিতাবাড়ি আইসিডিএস সেন্টারে টিকা দিতে নিয়ে যাওয়া হয়। বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টা নাগাদ শুভম টিকা নিলেও কোনও কান্নাকাটি কিছুই করেনি। কিন্তু শিবমকে টিকা দেওয়ার পর প্রচন্ড কান্নাকাটি করে। সে সময় যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকে। টিকা দেওয়ার একটু আগে ওই ছেলে সেন্টারের মাঠে খেলাধুলা করছিল। অনেকক্ষণ কান্নাকাটি করলেও বাড়িতে এসে সে ঘুমিয়ে পড়ে। টিকা নেওয়ার প্রায় দু’ঘণ্টা পরে ছেলের কোনও সাড়াশব্দ না পেয়ে সন্দেহ হয়। ছেলের শরীরটা কেমন যেন নেতিয়ে গিয়েছিল। দেহে প্রাণ নেই সন্দেহ হওয়ায় টিকা দেওয়া স্বাস্থ্যকর্মীদের খবর দিই। তারা এসে রাজগঞ্জ ব্লকের মগড়াডাঙ্গি গ্রামীণ হাসপাতালে শিশুটিকে নিয়ে যেতে বলেন। হাসপাতালে শিশুটিকে দেখে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন। ইনজেকশন দেওয়ার দু’ঘণ্টার মধ্যে শিশুটি মারা গিয়েছে। সঞ্জয়বাবুর অভিযোগ, কোনও একটি ভুল ইনজেকশন দিয়ে আমার তরতাজা সন্তানকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। সঞ্জয়বাবু বলেন, ইনজেকশনে ভুল না হলে অন্যরা সকলে ঠিক থাকলো আমার একটা ছেলে যন্ত্রণায় কাতরাতে কাতরাতে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ল কেন? বিষয়টি নিয়ে তিনি পুলিসেও অভিযোগ জানাবেন বলে জানিয়েছেন।
সরকারি উদ্যোগে প্রত্যেকটি শিশুকে যে টিকাগুলি দেওয়া হয়, রাজগঞ্জ ব্লকের মান্তাদারি ঠিকনিভিটা গ্রামের ওই শিশুটিকেও পরিবারের লোকেরা সেন্টারে টিকাকরণ করাতে বৃহস্পতিবার নিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু টিকাকরণের পর একটি শিশু এভাবে নিস্তেজ হয়ে প্রাণটাই চলে যাবে সেটা কোনওভাবেই মেনে নিতে পারছেন না শিশুটির মা দীপিকা রায়। বারবার ছেলের কথা বলতে বলতেই জ্ঞান হারিয়ে ফেলছেন তিনি। মৃত শিশুটির পিসি রত্না রায় বলেন, বোন ও বৌদি বৃহস্পতিবার সুস্থ ছেলেটাকে সেন্টারে নিয়ে গেল, যখন বাড়ি ফিরলো তখন শিবম যেন নিস্তেজ হয়ে ঘরে ফিরলো। মৃত শিশুটির দাদু বিজয় রায় বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে আমি যখন চা বাগানে কাজে যাই, তখন শিবম আমার কাছে খাবারের বাটি হাতে ছুটে এসে বলেছিল, দাদু আমি তোমার সঙ্গে যাবো। আমি নিয়ে যাইনি। কিন্তু পরে এসে যেটা দেখলাম সেটা মেনে নেওয়া যায় না। সঞ্জয়বাবু পেশায় রাজমিস্ত্রি। তাদের প্রথম যমজ সন্তানকে নিয়ে পরিবারে সকলের মধ্যে আনন্দ ছিল। কিন্তু ভ্যাকসিন দেবার পর শিশুটির মৃত্যুতে রায় পরিবারে এখন শোকের ছায়া। পাড়ার সকলেই শিশুর ওই মৃত্যুকে কোনওভাবেই যেন মেনে নিতে পারছেন না। শিশুমৃত্যুর ঘটনায় স্বাস্থ্যকর্মীদের উপর আস্থা যেন বাসিন্দাদের হারিয়ে গিয়েছে।