গুরুজনের চিকিৎসায় বহু ব্যয়। ক্রোধ দমন করা উচিত। নানাভাবে অর্থ আগমনের সুযোগ। সহকর্মীদের সঙ্গে ঝগড়ায় ... বিশদ
রাজ্যে এনআরসি হবে না। রাজ্য বিধানসভায় তাঁর উদ্যোগে সর্বদলীয় প্রস্তাব পাশ করিয়ে কেন্দ্রকে বার্তা দিয়েছিলেন মমতা। তারপরেই এনপিআর নিয়েও কঠোর অবস্থান নেন তিনি। আগামী এপ্রিলে গোটা দেশের সঙ্গে এরাজ্যেও এনপিআর চালু হওয়ার কথা। সেখানে বাড়ি বাড়ি গিয়ে বাসিন্দাদের নামের তালিকা সহ জন্মতারিখ ও জন্মস্থান নথিভুক্ত করার কথা। বিরোধীদের দাবি, এনআরসির প্রাথমিক ধাপ হিসেবে এনপিআর করার পরিকল্পনা রয়েছে কেন্দ্রের। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এনআরসি হবেই বলে দফায় দফায় ঘোষণা করেছেন। তাতে দেশে বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে বিরুপ প্রতিক্রিয়া হয়, এনআরসি বিরোধী আন্দোলন তীব্র আকার নেয়। এরই মধ্যে নাগরিকত্ব আইন সংশোধনী (সিএএ) পাশ হওয়ার পর কেন্দ্র বিরোধী আন্দোলন আরও ছড়িয়ে পড়ে। বাংলায় মুখ্যমন্ত্রী নিজেই রাস্তায় নেমেছেন, সিএএ প্রত্যাহারের দাবিতে। শুধু তাই নয়, গত সপ্তাহে রাজ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরকালে তাঁকে সিএএ প্রত্যাহারের আর্জি জানিয়ে এসেছেন বলে দাবি মমতার। পাশাপাশি দলের ছাত্র শাখাকে নির্দেশ দিয়েছেন, সিএএ প্রত্যাহারের দাবিতে ধর্মতলায় ধর্না দেওয়ার। সেই ধর্না মঞ্চে চারদিন এলেন মুখ্যমন্ত্রী। ষষ্ঠ দিনের ধর্নামঞ্চ থেকে তাঁর ঘোষণা, এনপিআর নিয়ে কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্র দপ্তরের ডাকা আগামী ১৭ জানুয়ারির বৈঠকে রাজ্য যোগ দেবে না। উল্লেখ্য, এই রাজ্যে এনপিআর করার জন্য সরকারি কর্মীদের একদফা প্রশিক্ষণ শেষ হয়ে গিয়েছিল। এদিন তাঁর কথায়, দলের রাজ্যসভার সদস্য ডেরেক ও’ব্রায়েন তাঁকে জানান, এনপিআর-এর নামে বাসিন্দাদের পূর্বপুরুষের জন্মস্থান, জন্মতারিখের প্রামাণ্য শংসাপত্র চাওয়া হবে। তা জানার পরেই তিনি এনপিআর রাজ্যে স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেন। নবান্ন থেকে সেই স্থগিতাদেশের বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এনপিআর রুখতে তিনি বদ্ধপরিকর। তাই দিল্লির বৈঠকে রাজ্য যোগ দেবে না।
আধার কার্ড নিয়েও কেন্দ্রের নয়া উদ্যোগে ফের বিভ্রান্তি দেখা দিতে পারে বলে মনে করেন মুখ্যমন্ত্রী। সভায় ২০১৬ সালে করা নিজের আধার কার্ডের ফটোকপি তুলে তিনি বলেন, এখানে তাঁর বাবার নাম রয়েছে। কিন্তু এদিন ফের অনলাইনে নিজের আধার কার্ড বের করে দেখে তিনি বিস্মিত। সেখানে তাঁর বাবার নামের উল্লেখ নেই। দু’টি কার্ড জনসমক্ষে তুলে ধরে মমতা বলেন, নতুন আধারে কোথাও গার্জিয়ানের নাম নেই। পুরোটাই ধাপ্পা। লোক ঠকানো হচ্ছে বলে সন্দেহ তাঁর। বিজেপি নেতৃত্বের প্রতি কটাক্ষের সুরে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন, ওরা বলে এক দেশ, এক সংবিধান, এক ভোট। তাহলে দুইরকম আধার কার্ড কেন? এই বিষয়ে বিশদে তিনি কিছু জানেন না বলে স্বীকার করেছেন। তাঁর মতে, এই ধরনের আধার কার্ড কেন, তা নিয়ে সন্দেহ হলেও, তা ভুল প্রমাণিত হলেই তিনি খুশি হবেন। এমনকী ভুল হলে তিনি ক্ষমা চেয়ে নিতেও প্রস্তুত। তবে কোনও মতেই আধার কার্ডের মাধ্যমে মানুষকে ঠকানোর রাস্তা তৈরি হলে তা তিনি মেনে নেবেন না বলে এদিন হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মমতা।