সন্তানের সাফল্যে গর্ব বোধ। আর্থিক অগ্রগতি হবে। কর্মে বিনিয়োগ বৃদ্ধি। ঘাড়, মাথায় যন্ত্রণা বৃদ্ধিতে বিব্রত ... বিশদ
খোঁজ নিয়ে জানা গেল, ওই যুবকের বাড়ি ছয়ঘরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের হরিদাসপুর উত্তরপাড়ায়। নাম বিশু বিশ্বাস। মা বেবী বিশ্বাস। তাঁর বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল দারিদ্রের ছাপ। এক চিলতে টালি ও বাঁশের বেড়া দিয়ে তৈরি ছোট্ট একটা ঘর। ছোটবেলায় যুবকটির বাবা মারা গিয়েছেন। মা ভিক্ষা করে দিন কাটান। এই ছেলেকে নিয়েই থাকতেন বৃদ্ধা মা। ভিক্ষা করে বাড়ি ফিরে মাঝেমধ্যেই ছেলেকে দেখতে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করতেন। ছেলে আর পাঁচটা ছেলের মতো স্বাভাবিক নয়, তাই যদি দূরে কোথাও চলে যান, সেকারণেই শিকল দিয়ে বেঁধে রাখেন তাঁকে। দিন দশেক আগে কোনওভাবে বাঁশের খুঁটির সঙ্গে বাঁধা শিকল খুলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান বিশু। এরপর থেকে বনগাঁ শহরে শিকল হাতেই ঘুরে বেড়াচ্ছেন তিনি।
ছোটবেলা থেকেই বিশুর মধ্যে অস্বাভাবিকতা দেখা দেয়। দারিদ্রের কারণে ছেলের চিকিৎসা করাতে পারেননি মা। শত অভাবের মধ্যেও ছেলেকে বুকে আগলে রেখেছিলেন। এখন ছেলের পথ চেয়ে বসে আছেন মা। মাঝে মাঝেই ভাবেন ছেলে হয়তো ফিরে এল। ভিক্ষা করে ফিরে শূন্য ঘরের দিকে তাকিয়ে মায়ের চোখে জল এসে যায়। ছেঁড়া আঁচলে চোখ মুছে নেন তিনি। আশা করেন, পরদিন হয়তো ছেলে ফিরে আসবে। জনে জনে জিজ্ঞাসা করে ছেলের খোঁজ নেন। তাঁর আর্তি, কেউ আমার একমাত্র ছেলের দেখা পেলে একটু খবর দেবেন। ওর পায়ের ভারী শিকলটার তালা ভেঙে ওকে মুক্ত করে দেবেন।
পরিচয় জানার পর বিশু বিশ্বাসের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন বনগাঁর বাসিন্দা শিক্ষক দেবাশিস বসু। তাঁর চিকিৎসা করানোরও প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। শিক্ষক বলেন, সঠিক চিকিৎসা হলে সমাজের মূল স্রোতে ফিরতে পারে ছেলেটি। এবিষয়ে ছয়ঘরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান প্রসেনজিৎ ঘোষ বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। আমি খোঁজ নেব এবং পাশে থাকব।
তবে শেষ পর্যন্ত ছেলে বনগাঁয় আছেন জেনে আশ্বস্ত হয়েছেন মা। বললেন, কালই আমি বনগাঁয় গিয়ে রাস্তায় রাস্তায় ছেলেকে খুঁজব। কাল আর ভিক্ষা করতে বেরব না।
অনেকেই এখন মা ও ছেলের মিলন ঘটিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। কালই হয়তো দেখা হবে মা ও ছেলের। নিজস্ব চিত্র