মেষ: পঠন-পাঠনে আগ্রহ বাড়লেও মন চঞ্চল থাকবে। কোনও হিতৈষী দ্বারা উপকৃত হবার সম্ভাবনা। ব্যবসায় যুক্ত ... বিশদ
সকাল সাড়ে ৯টা, ৫বি জাজেস কোর্ট। দেখা গেল, পুলিসি নজরদারি থাকায় বহুতল আবাসনে শাক-সব্জি ঢোকানোর আগে জীবাণুমুক্ত করা হচ্ছে। এলাকায় মাইকিং করছে প্রশাসন। তবে পুলিস ফিরে যেতেই বদলে গেল ছবি। তারপর ব্যারিকেড বা প্রশাসনিক কড়াকড়ির দেখা মেলেনি।
ডোভার টেরেসের বাসিন্দাদের মধ্যে খুব একটা সচেতনতা লক্ষ্য করা যায়নি। সেখানে না ছিল পুলিস পিকেট, না ছিল ব্যারিকেড। তবে পুলিস মাইকিং করেছে, জানালেন বাসিন্দারা। ১/১ এবং ৮/৪বি পণ্ডিতিয়া রোডও কন্টেইনমেন্ট বলে চিহ্নিত। সেখানকার পরিস্থিতিও সমান। সিংহভাগ মানুষের মুখে মাস্ক নেই। পাড়ার মোড়ে, চায়ের ঠেকে সামাজিক দূরত্ব বিধি উড়িয়ে চলছে দেদার আড্ডা।
৬৪এ আলিপুর রোডে অভিজাত আবাসন সত্যম টাওয়ার। সেটি অবশ্য পুরোপুরি সিল করে দেওয়া হয়েছে। এই বহুতলেই ৫৮টি পরিবার থাকে। এছাড়াও ২২টি অফিস রয়েছে। সংক্রমণের তালিকায় উপরের দিকেই রয়েছে এই আবাসন। এখনই এখানে ৫৩ জন আক্রান্ত। স্বাভাবিকভাবেই লকডাউনের বাঁধন এখানে তুলনায় কড়া ।
তবে, বেলা গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতি অবশ্য বদলেছে। ১১ এলগিন রোড, পি ১২ (কাঁকুড়গাছি), সিআইটি স্কিম ৭ এম, অধরচন্দ্র দাস লেন, আরিফ রোড, ২৫ শরৎ বোস রোড, পণ্ডিতিয়া রোডের দুটি এলাকা, ডোভার টেরেস প্রায় প্রতিটি জায়গাতেই বসে যায় পুলিস পিকেট। সংশ্লিষ্ট রাস্তা, নির্দিষ্ট বহুতল বা আবাসন সিল করে দিয়ে যায় স্থানীয় থানা। বসানো হয় ব্যারিকেড। উত্তর কিংবা দক্ষিণ, শহরের সর্বত্র এই কন্টেইনমেন্ট জোনে দুই থেকে তিনজন করে পুলিসের দেখা মিলেছে। কিছু কিছু জায়গায় অবশ্য গত কয়েকদিন ধরেই নজরদারি বাড়ানো হয়েছিল। গত দু’সপ্তাহে শহরের ৩৩টি এলাকা বা আবাসনে আক্রান্তের সংখ্যা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছিল। সেকারণেই লকডাউনে আরও কড়াকড়ি করার ভাবনাচিন্তা করেছিল পুরসভা। পুলিসকে সঙ্গে নিয়ে সেইসব এলাকায় নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
তবে, প্রশাসনিক কর্তাদের দুশ্চিন্তা অন্য জায়গায়। এত লক্ষণরেখা টানার পরেও সামলানো যাবে তো? যে সব এলাকায় ভাইরাসের বাড়বাড়ন্ত, সেগুলিতে মূলত উচ্চবিত্ত বা উচ্চ-মধ্যবিত্তদের বাস। সেখানকার মানুষজনের উদাসীনতাই কি এই বাড়-বৃদ্ধির জন্য দায়ী, উঠছে সেই প্রশ্নও।
পণ্ডিতিয়া রোডে এমনই একটি চায়ের দোকানে বসেছিলেন কয়েকজন যুবক। তাঁদের কারও মুখে মাস্ক আছে, কেউ আবার সেটা পকেটে ঢুকিয়ে ‘সুখটানে’ ব্যস্ত। জিজ্ঞাসা করতেই বললেন, এখানে পুলিসের তেমন কড়াকড়ি নেই। তবে পুলিসের গাড়ি এলে এদিক-ওদিক সরে যাই। ডোভার টেরেস লেনে সেলুনের ভিতর তিল ধারণের জায়গা ছিল না।
অনেকেই আবার নতুন করে কড়াকড়ি হওয়ার কথা জানেনই না। নতুন করে কি লকডাউন হচ্ছে? প্রশ্ন শুনেই যেন আকাশ থেকে পড়লেন বছর চল্লিশের এক ব্যক্তি। তাঁর কথায়, সবই তো স্বাভাবিক রয়েছে। আবার নতুন করে লকডাউনের প্রয়োজন কী?