অতিরিক্ত পরিশ্রমে শারীরিক ক্লান্তি। প্রিয়জনের বিপদগামিতায় অশান্তি ও মানহানির আশঙ্কা। সাংসারিক ক্ষেত্রে মতানৈক্য এড়িয়ে চলা ... বিশদ
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, সুনীল বিহারের ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ অভিযুক্তদের মধ্যে অন্যতম। অনেকদিন ধরেই তাকে খুঁজছিল সেখানকার পুলিস। বিহারের লখিসরাই জেলার বাসিন্দা সুনীল অনেকদিন ধরেই মাওবাদী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত। বাম জমানায় এ রাজ্যে যখন মাও আন্দোলন তুঙ্গে, সেই সময় সে সংগঠনে নাম লেখায়। এ রাজ্যেও সে বেশ কয়েকবার এসেছে। তার সঙ্গে বিহারের শীর্ষ মাওবাদী নেতাদের নিয়মিত যোগাযোগ ছিল বলে জানা গিয়েছে। বিহার ও ঝাড়খণ্ডের সীমান্ত লাগোয়া জেলাতেই তার কাজকর্ম বিস্তৃত ছিল। মূলত অপারেশন স্কোয়াডের দায়িত্ব দেওয়া হয় তাকে। তার বিরুদ্ধে বিহারের একাধিক ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে নিয়ে এসে টাকা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। একাধিক খুনের ঘটনাতেও সে অভিযুক্ত। তার নেতৃত্বে বিহারে বিভিন্ন জায়গায় হামলা হয়েছে। বিস্ফোরণ ঘটিয়ে উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে রেললাইন, সরকারি বাসভবন, ব্রিজ প্রভৃতি। বিহারে মাওবাদীরা যে সমস্ত জেলায় পুলিসের উপর হামলা চালিয়েছে, তার প্রত্যেকটিতে সে জড়িত ছিল বলে বিহার পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে। তার বিরুদ্ধে ডজনখানেক মামলা রয়েছে। মাসছয়েক আগেও তার নেতৃত্বে পুলিসের উপর হামলা চালানো হয়। তাতে একাধিক পুলিসকর্মী আহত হন।
তার খোঁজে বিহারের একাধিক জায়গায় তল্লাশি শুরু করে বিহার পুলিস। এরপর সে পালিয়ে আসে কলকাতায়। জানা গিয়েছে, এখানে সুনীলের শ্বশুরমশাই থাকে। তাঁর সঙ্গেই যোগাযোগ করে। শ্বশুরমশাই তাকে স্ট্রান্ড রোডের একটি গোডাউনের ঠিকানা দেন। তিনি তাকে বলেন, সেখানে লখিসরাইয়ের অনেক বাসিন্দা রয়েছেন। থাকার ব্যাপারে তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে পারে সুনীল। এরপরই সেখান যায় এই মাও নেতা। সে তাঁদের জানায়, এখানে কাজের খোঁজে এসেছে। গোডাউনের লোকজনই কাজের ব্যবস্থা করে দেয়। মুটিয়া হিসেবে স্ট্র্যান্ড রোডে কাজ করতে শুরু করে। আড়ালে বিহারের মাওবাদী নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিল। গোপন সূত্রে উত্তর বন্দর থানার পুলিসের কাছে খবর আসে, স্ট্রান্ড রোডের একটি গোডাউনে এক কুখ্যাত দুষ্কৃতী লুকিয়ে রয়েছে। বুধবার রাতে পুলিসের একটি টিম সেখানে হানা দিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে। জেরার পর জানা যায়, সে সাধারণ অপরাধী নয়, মাওবাদী নেতা। সঙ্গে সঙ্গে বিহার পুলিসকে বিষয়টি জানানো হয়। বিহার পুলিসের একটি টিম বৃহস্পতিবার শহরে আসে। তাকে আদালতে তোলা হয়। বিচারক দু’দিনের ট্রানজিট রিমান্ডের নির্দেশ দেন।