নতুন কোনও কর্ম পরিকল্পনায় সাফল্যের ইঙ্গিত। লটারি বা ফাটকায় প্রাপ্তি যোগ। খেলাধূলায় কৃতিত্ব। বাক্যে ও ... বিশদ
কাটোয়া-১ ব্লকের কৃষিদপ্তরের উদ্যোগে কোশিগ্রাম পঞ্চায়েতের রাজুয়া গ্রামে এক কৃষকের বিঘা খানেক জমিতেই পরীক্ষামূলকভাবে মালতা লেবু চাষ শুরু হয়। এই ধরনের লেবু চাষ সাধারণত কাশ্মীরের আবহাওয়া ও মাটিতেই বেড়ে ওঠে। তাই এরাজ্যের মাটি এবং আবহাওয়ায় মালতা লেবু চাষ কতটা সফল হবে তা নিয়ে সংশয় দূর করেছেন কৃষি বিশেষজ্ঞরাই। এবিষয়ে কাটোয়া-১ ব্লকের এডিএ আজমীর মণ্ডল বলেন, আমরা মালতা লেবুর চারা রাজ্য বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নিয়ে এসেছি। সেখানকার কৃষি বিশেষজ্ঞরা এ রাজ্যের জলবায়ুর জন্যই এই প্রজাতির চারগাছ তৈরি করেছেন। আমাদের আশা, কৃষকরা এই ধরনের লেবু চাষ করে বাড়তি আয় করতে পারবেন।
কৃষি দপ্তর সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, মালতা লেবুর চাষে এক বিঘা জমিতে প্রায় ৩০ হাজার টাকা খরচ হবে। আর ব্লকের কৃষিদপ্তর থেকেই পাওয়া যাবে এই প্রজাতি লেবুর চারা। লেবু বিক্রি করে বছরে প্রায় ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা পাওয়া যাবে। প্রতিবছর ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা লাভ করতে পারবেন চাষিরা। এছাড়া ১০ বছর পর্যন্ত একটি গাছ থেকে আয় করতে পারবেন চাষিরা। কাটোয়া-১ ব্লকের কোশিগ্রাম পঞ্চায়েতের রাজুর গ্রামের চাষি আশরফ মোল্লা তাঁর এক বিঘা জমিতে কৃষি দপ্তরের পরামর্শ মেনে আতমা প্রকল্পের মাধ্যমে মালতা লেবু চাষ করেছেন। তিনি বলেন, আমি বরাবরই বিকল্প চাষে বিশ্বাসী। যেমন কাশ্মীরি কুল, অ্যালোভেরা চাষ করি সারাবছর। তাই ব্লকের কৃষি দপ্তরের পরামর্শ মেনে মালতা লেবু চাষ করেছি। আশা করছি ভালোই ফলন হবে।
প্রসঙ্গত, এর আগে আতমা প্রকল্পের মাধ্যমেই খাঁটি মধু পেতে কাটোয়া-১ ব্লকের কৃষি দপ্তর ইতালিয়ান প্রজাতির মৌমাছি প্রতিপালন শুরু করেছে। কাটোয়ার খাজুরডিহি পঞ্চায়েতের একাইহাট এলাকায় ১৫০ জন চাষি ও স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের তারজন্য প্রশিক্ষণও দিয়ে মৌমাছি প্রতিপালন শুরু হয়েছে। তারপর এই প্রকল্পেই প্রাথমিকভাবে শুরু হয়েছে কাশ্মীরি আপেল চাষ। তারজন্য কৃষিদপ্তরের পিছনের একটি জায়গাকে বেছে নেওয়া হয়েছে। কেতুগ্রামের এক কৃষক হৃদয় গোপাল সাহা, মঙ্গলকোটের কৃষক নিমাইচন্দ্র হাজরা বলেন, আমাদের জেলার মাটিতে যদি এই ধরনের মালতা লেবুর চারা হয়, তাহলে খুবই ভালো হবে। তাহলে গতানুগতিক চাষাবাদ ছেড়ে অন্যরকম চাষও আমরা করতে রাজি।
কাটোয়া-১ ব্লক কৃষিদপ্তরের আধিকারিকরা জানান, কোনও চাষি এই ধরনের মালতা লেবু চাষ করতে চাইলে দপ্তরে যোগাযোগ করলেই মিলবে পরামর্শ। এছাড়া চারাগাছ সংগ্রহের বিষয়েও পরামর্শ পাওয়া যাবে দপ্তরেই। কৃষি বিশেষজ্ঞরা জানান, পূর্ব বর্ধমান জেলায় সাধারণত ধান চাষেই বেশি আগ্রহ চাষিদের। তাই বিকল্প চাষ হিসেবে পূর্বস্থলী-২ ব্লকের বেশিরভাগ চাষি সব্জি চাষ এবং কাটোয়া-২ ব্লকের অগ্রদ্বীপের ভাগীরথীর তীর এলাকায় বাদাম চাষ করেন কিছু চাষি।
কিন্তু, গতানুগতিক চাষে চাষিদের তেমন আগ্রহ নেই। তবে বিকল্প চাষ হিসেবে চাষিরা যদি এই ধরনের কিছু অর্থকরী ফল চাষ করে তাহলে চাষিরা ভালো আয় করবেন। কিন্তু তারজন্য ভালো মার্কেটিং দরকার। যেমন এখানকার মাটিতেও ভুট্টা চাষ ভালো হয়। কিন্তু ভুট্টা চাষের জন্য ভালো মার্কেটিং না থাকলে চাষিরা কীভাবে বিক্রি করবে, সেকথাও আমাদের ভাবতে হবে। তবে, মালতা লেবুর চাষে রাজ্য সরকার উদ্যোগ নেওয়ায় খুশি জেলার চাষি মহল।