কর্মপ্রার্থীদের বিভিন্ন দিক থেকে শুভ যোগাযোগ ঘটবে। ব্যবসায় যুক্ত হলে ভালোই হবে। প্রেম-প্রণয়ে নতুনত্ব আছে। ... বিশদ
বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভুট্টা নিয়ে গবেষণা চালানো বিজ্ঞানী ডঃ শ্রাবণী দেবনাথ বলেছেন, গোটা দেশের পাশাপাশি আমাদের রাজ্যেও বেবিকর্নের জনপ্রিয়তা ক্রমেই বাড়ছে। এটি কম ক্যালোরিযুক্ত সব্জি। অতিরিক্ত ওজন কমাতে সাহায্য করে। কম কার্বোহাইড্রেটযুক্ত, উচ্চ ফাইবারযুক্ত এবং কম ফ্যাটযুক্ত। বেবিকর্ন উচ্চ পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ এবং এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও মিনারেল রয়েছে। সাধারণ ভুট্টার তুলনায় বেবিকর্নের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স অনেকটাই কম। ফলে রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে এটি। কম সময়ের মধ্যে ভালো ফলন পাওয়া যায়, বেবিকর্নের এমন কয়েকটি জাত হল, প্রকাশ, বিবেক মেজ হাইব্রিড ২৩, সি ও বিসি ১, বিবেক মেজ হাইব্রিড ২৫, ডিএইচএম ১০৯, গোল্ডেন বেবি প্রভৃতি। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, উজ্জ্বল সূর্যালোক এবং ২২-২৮ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রা বেবিকর্ন চাষের জন্য আদর্শ।
তবে তাপমাত্রা ৩০ ডিগ্রির বেশি হয়ে গেলে ফলন মার খায়। নিম্ন তাপমাত্রাতেও ভালো ফলন হতে পারে, বেবিকর্নের এমন বেশকিছু জাত এখন পাওয়া যাচ্ছে। জল নিকাশি ব্যবস্থাযুক্ত বেলে-দোঁয়াশ মাটিতে বেবিকর্ন চাষ করা যেতে পারে। মাটির পিএইচ মাত্রা হতে হবে ৬-৭। মাটি একটু বেশি আম্লিক হলেও বেবিকর্ন চাষ সম্ভব। কিন্তু, জমিতে যেন কোনওভাবেই জল না দাঁড়ায়। যেসব কৃষক বেবিকর্ন চাষ করবেন, তাঁদের প্রথমে হেক্টরপ্রতি ১৫টন জৈবসার দিয়ে জমি ভালোভাবে ২-৩বার চাষ দিয়ে নিতে হবে। মাটি যেন একেবারে ঝুরঝুরে হয়। এতে বীজের অঙ্কুরোদগম যেমন ভালো হয়। তেমনই মাটিতে বাতাস চলাচল করতে পারবে। সারি থেকে সারি ৪৫ সেমি এবং বীজ থেকে বীজ ১৫ সেমি দূরত্বে ভেলি করে বুনতে হবে। বোনার আগে অবশ্যই বীজ শোধন করে নিতে হবে। এক হেক্টরের জন্য ২০-২৫ কেজি বীজের প্রয়োজন। ব্যাভিস্টিন বা থাইরাম বা কার্বেন্ডাজিম ২-৩গ্রাম মাত্রায় দিয়ে প্রতি কেজি বীজ শোধন করা যেতে পারে। পোকার আক্রমণ রুখতে কেজি প্রতি বীজে ৪ গ্রাম ফিপ্রোনিল দিয়ে বীজ শোধন করতে পারলে ভালো। শ্রাবণীদেবী জানিয়েছেন, সারা বছরই বেবিকর্ন চাষ করা যায়। চাষিরা সাধারণত জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত এই ফসলটি বুনে থাকেন।
তবে এপ্রিল-মে মাসে বেবিকর্ন বুনলে ফলন অনেক বেশি পাওয়া যায়। প্রতিটি খুপিতে ১-২টি বীজ বুনতে হবে। গাছ যখন ৩-৪মিটার উঁচু হবে, তখন একবার, ফুল আসার সময় একবার অবশ্যই সেচ দিতে হবে। তবে জমিতে যেন কোনওভাবেই জল দাঁড়িয়ে না যায়। আগাছা পরিষ্কার করতে হবে। কাণ্ড ছিদ্রকারী পোকা বেবিকর্নের ক্ষতি করে। ফল আর্মি ওয়ার্ম পোকাও এই ফসলটির মারাত্মক ক্ষতি করে। এছাড়া পাতা ধসা রোগ দেখা যায় এই ফসলে। চারাগাছে নিমের নির্যাস স্প্রে করলে পোকার উপদ্রব অনেকটাই কমানো যায়। রোগ দমনে ১০ দিন অন্তর ২-৩ গ্রাম ম্যানকোজেব প্রতি লিটার জলে গুলে জমিতে স্প্রে করতে হবে।