কর্মক্ষেত্রে অশান্তির সম্ভাবনা। মাতৃস্থানীয় কার শরীর-স্বাস্থ্যের অবনতি। প্রেমে সফলতা। বাহন ক্রয়-বিক্রয়ের যোগ। সন্তানের বিদ্যাশিক্ষায় উন্নতি।প্রতিকার: ... বিশদ
রপ্তানির কথা বাদ দিলেও কৃষি উৎপাদনে ব্যয় সঙ্কোচের ক্ষেত্রে অনবদ্য ভূমিকা রয়েছে কেঁচোসারের। একেই মানুষের স্বাস্থ্যের নিরিখে রাসায়নিক সারের ব্যবহার বিপদ-বার্তা বহন করে। তার উপর এই সারের দামও লাগাম ছাড়া। প্রয়োগবিধি ঠিকঠাক না জানলেও বিপত্তি। ফসল মার খাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। সে দিক দিয়ে কেঁচোসার অনেকটাই নিরাপদ। এমনটাই মনে করেন কৃষিবিজ্ঞানীদের একটা বড় অংশ। এখন সব্জি থেকে শুরু করে ডালশস্য কিংবা চায়ের বাজারে চলছে ‘অর্গানিক যুগ’। রাসায়নিক সার ও কীটনাশক বর্জিত সব্জির চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। দামও মিলছে ভালোই। আর এই সব ‘অর্গানিক’ সব্জি কিংবা ডালশস্য উৎপাদনে অন্যতম রসদ কেঁচোসার। একদিকে ফসল উৎপাদনের খরচও যেমন কমে, তেমনই উৎপাদিত পণ্যের দামও বেশি পাওয়া যায়। ফলে ঘরোয়া বাজারেও কেঁচোসারের কদর ক্রমেই বাড়ছে।
অথচ, এখনও সিংহভাগ কৃষকই মনে করেন, কেঁচোসার ব্যবহার করলে নাকি উৎপাদন বৃদ্ধি পায় না! লোকসান হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এমন ধারণা পুরোপুরি ভ্রান্ত। হাতে গরম উদাহরণ দিয়ে বলা যেতে পারে, কেঁচোসার ব্যবহারে উৎপাদন মার খাওয়ার ন্যূনতম সম্ভাবনা নেই। বরং সঠিক পরিচর্যা করলে রাসায়নিক সারকে টেক্কা দিয়ে বেশি ফসল ঘরে তুলতে পারেন যে কোনও কৃষক। এখানেই পেভলিস ব্যাখ্যা, জমি হল প্রকৃতির সম্পদ। সেই জমির উর্বরতা বাড়াতে হলে মাটিতে যোগ করতে হবে প্রকৃতি প্রদত্ত কোনও জৈব-যৌগকে। সহজ কথায় যাকে আমরা বলছি জৈবসার। কেঁচোসার হল প্রকৃতি সৃষ্ট সেই যৌগ। রান্নাঘরের বর্জ্যই কেঁচো সারের মূল কাঁচামাল। পরিকাঠামো তৈরিতেও তেমন কোনও খরচ নেই। খড়ের কিংবা পলিথিনের ছাউনি হলেই চলবে। তা হলে কেনই বা পিছিয়ে পড়ছে কেঁচোসার উৎপাদন প্রক্রিয়া? কেনই বা উৎসাহ হারাচ্ছেন কৃষকরা?
পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় বছর দু’য়েক আগেও বেশ সাড়া ফেলেছিল কেঁচোসার উৎপাদন। মূলত মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীরা এই সার উৎপাদনে এগিয়ে এসেছিল। সরকারি মদতে বেশ ভালোই চলছিল বিক্রিবাটা। উদ্যানপালন ও কৃষি দপ্তর উৎপাদিত সার দেদার ক্রয় করেছিল। ব্লক, পঞ্চায়েতও কেঁচোসার কিনেছিল। কিন্তু এখন বেশিরভাগই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। কেন? পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কালুর ভেড়িরর কমলাসিন্ধু সহায়ক গোষ্ঠীর নেত্রী তথা জেলা কৃষক কল্যাণ অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদিকা নির্মলা দাসের অভিযোগ, কেঁচোসার নিয়ে সরকার আর প্রশাসনিক স্তরে কোনও বোঝাপড়া নেই। আমরা বারবার বিভিন্ন দপ্তরে সার ক্রয়ের ব্যাপারে আবেদন করেছি। আনন্দধারা প্রকল্পের নিয়ন্ত্রণে বিক্রির জন্যও অনুরোধ করেছি। কিন্তু কেউই কোনও উদ্যোগ নেয়নি। ফলে কেঁচোসার উৎপাদন থেকে প্রায় সব স্বনির্ভর গোষ্ঠীই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। নতুন করে এই সার উৎপাদনে উৎসাহ দেখাচ্ছে না কেউই। কৃষিক্ষেত্রে কেঁচোসার ব্যবহারে সম্ভাবনার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি দেবব্রত দাসও। তবে তিনিও জানেন না, কেন এই সার ক্রয় থেকে সরে দাঁড়াল সরকারি দপ্তরগুলি। মঙ্গলবার এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, বিষয়টি নিয়ে আমার কাছে কেউ অভিযোগ করেনি। লিখিতভাবে বিষয়টি আমাকে জানানো হোক। জেলা পরিষদের স্থায়ী সমিতির বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হবে।