কর্মক্ষেত্রে অশান্তির সম্ভাবনা। মাতৃস্থানীয় কার শরীর-স্বাস্থ্যের অবনতি। প্রেমে সফলতা। বাহন ক্রয়-বিক্রয়ের যোগ। সন্তানের বিদ্যাশিক্ষায় উন্নতি।প্রতিকার: ... বিশদ
প্রচারপত্রে বলা হচ্ছে, ধান চাষে জল অনেক বেশি লাগে। কিন্তু, এবার জলাধারে জল কম থাকায় তৈলবীজ ও ডালশস্য চাষ করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। প্রসঙ্গত, গত বছর রাজ্য সরকার প্রায় ১২ লক্ষ হেক্টর জমিতে রবি চাষের জন্য জল দিয়ে রেকর্ড করেছিল। সামনেই লোকসভা ভোট। তার আগে বোরো চাষে জল দিতে না পারায় গ্রামাঞ্চলে কৃষকদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হতে পারে বলে ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে।
রাজ্যের সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র বলেন, বর্ষা মরশুমের পর আর সেভাবে বৃষ্টি হয়নি। সেই কারণেই জলাধারগুলিতে জল কমে গিয়েছে। তাই আমরা চাষিদের কাছে বিকল্প চাষ করার জন্য অনুরোধ করছি। ইতিমধ্যেই জল ছাড়া নিয়ে আমরা একটি বৈঠক করেছি। সেখানে কৃষি দপ্তর ও ক্ষুদ্র সেচ দপ্তরের অফিসাররা উপস্থিত ছিলেন। এখন সকলেই গঙ্গাসাগর মেলায় ব্যস্ত আছেন। মেলা শেষ হওয়ার পর ফের আমরা এই নিয়ে বৈঠক করে কত পরিমাণ জল ছাড়া হবে তা জানিয়ে দেব।
যদিও রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, সেচের জলের জন্য চাষের কোনও সমস্যা হবে না বলেই আমি মনে করি। কারণ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে ক্ষুদ্রসেচ দপ্তর রিভার লিফটিং পাম্পগুলি চালাবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। এছাড়াও প্রতিটি বিধায়ককে এলাকায় সাবমার্সিবল পাম্প বসানোর জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এতে জলের চাহিদা অনেকখানি মিটে যাবে। তাছাড়া আমরা চাষিদের কাছে বিকল্প চাষের জন্য প্রস্তাব দিয়েছি। এতে চাষিরা লাভবান হবেন।
সেচ দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, কত পরিমাণ জল ছাড়া হবে, তা জলাধারে মজুতের উপর নির্ভর করে। গত বছর জলাধারে যথেষ্ট পরিমাণ জল মজুত ছিল। সেই কারণে সেচ দপ্তর জলাধারগুলির কর্তাদের সঙ্গে কথা বলে পর্যাপ্ত পরিমাণ জল ছেড়েছিল। কিন্তু, এবার বন্যার আশঙ্কায় জলাধারগুলি থেকে বর্ষায় প্রচুর পরিমাণে জল ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। সেই কারণেই সেখানে জলের পরিমাণ অনেক কমে গিয়েছে। ডিভিসি’র মাইথন জলাধারে যেখানে ৪৮০ ফুট জল মজুত থাকলে জল ছাড়া হয়, সেখানে এখন সেখানে মাত্র ৪৫৮ ফুট জল আছে। ফলে সেখান থেকে খুব বেশি জল দেওয়া যাবে না বলে ইতিমধ্যেই ডিভিসি কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দিয়েছে। একইভাবে পাঞ্চেত জলাধারেও জল কম আছে।
ময়ূরাক্ষীর জলে বীরভূম ও মুর্শিদাবাদ জেলার বিস্তীর্ণ অংশে চাষ হয়। এই এলাকার চাষিরা সেচের জলের উপর নির্ভর করেই বোরো চাষ করেন। কিন্তু, এখানেও প্রয়োজনীয় স্তরের অনেক নীচে জল আছে। কংসাবতীর জল থেকে বাঁকুড়া, পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম জেলার বিস্তীর্ণ অংশের চাষ হয়। কিন্তু, এখানেও জলস্তর অনেক কম। গত বছর এই এলাকায় ভালো চাষ হয়েছিল। কিন্তু, এবার বোরোর জন্য পর্যাপ্ত জল দেওয়া যাবে না— এই খবরে কৃষি দপ্তরের অফিসাররাও চিন্তিত। কেননা, এর জন্য রাজ্যে ধানের ফলন কমে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই রাজ্যে লোকসভা ভোট। তার আগে বোরো মরশুমে চাষিরা পর্যাপ্ত জল না পেলে পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে বলেও অনেকে মনে করছেন। কেননা, রাজ্যের কৃষিপ্রধান এলাকার ভোটব্যাঙ্ক এখনও তৃণমূলের কাছে অটুট। এই অবস্থায় কৃষকদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হলে ভোটে তার প্রভাব পড়বে কি না তা নিয়েও গ্রামীণ নেতৃত্ব দুশ্চিন্তায় পড়ে গিয়েছে।