কর্মপ্রার্থীদের কোনও চুক্তিবদ্ধ কাজে যুক্ত হবার যোগ আছে। ব্যবসা শুরু করা যেতে পারে। বিবাহের যোগাযোগ ... বিশদ
বর্ধমান শহরের ফাগুপুরে নতুনরূপে মাদার ডেয়ারির ওই ইউনিট তৈরি হয়েছে। রাজ্যের প্রাণিসম্পদ বিকাশ দপ্তরের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বলেন, কংগ্রেস সরকারের আমলে বর্ধমান ডেয়ারি নামে এই ইউনিট চালু হয়েছিল। আগে ভালোই চলত। কিন্তু, যারা মুখে শিল্পের কথা বলে সেই সিপিএমের আমলেই ২০০৪ সালে বর্ধমান ডেয়ারি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। সিপিএম এই ইউনিট খোলার কোনও উদ্যোগও নেয়নি। ফলে, যে মেশিনপত্র ছিল দীর্ঘদিন ধরে অব্যবহারের ফলে সেগুলিও নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। আমাদের সরকার গঠন হওয়ার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে এই ইউনিট খোলার উদ্যোগ নেন। ২০১৪ সালে চালু করা হয়। সেই সঙ্গে বর্ধমান ডেয়ারিকে মাদার ডেয়ারিতে রূপান্তর করে পুনরুজ্জীবিকরণ করাও হয়। তার জন্য আমাদের সরকার পাঁচ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছিল। সেই টাকায় পরিকাঠামোগত উন্নয়ন, মেশিনপত্র কেনা, স্টোরেজ ইউনিট, প্যাকেজিং ইউনিট প্রভৃতি করা হয়েছে। মন্ত্রী বলেন, বর্ধমান মাদার ডেয়ারি থেকে প্যাকেজিং দুধ ডানকুনির মূল মাদার ডেয়ারি ইউনিটে যায়। আমরা এখানে প্রতিদিন এক লক্ষ প্যাকেট দুধ উৎপাদন করার উদ্যোগ নিয়েছি। আমি নিজে বেশ কয়েকবার পরিদর্শন করেছি। সেখানকার কর্মী এবং আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেছি। আরও যা যা উন্নয়ন করতে হবে, সেগুলি দ্রত করা হবে। যাতে আমরা আমাদের লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছাতে পারি।
দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যে দুধের ঘাটতি মেটাতে জেলায় জেলায় দুগ্ধ কো-অপারেটিভ সোসাইটিদের নিয়ে বৈঠকও শুরু করা হয়েছে। অক্টোবর মাসের শুরুতেই এই পূর্ব বর্ধমান জেলাতেও ওই বৈঠক হয়েছে। এই জেলায় মোট ৪৩টি দুগ্ধ কো-অপারেটিভ সোসাইটি রয়েছে। তার মধ্যে ছ’টি মহিলা দ্বারা পরিচালিত। রাজ্যের গ্রামীণ এলাকায় দুধ সংগ্রহ করে ‘দুগ্ধ সমবায় সমিতি’। তাদের কাছ থেকে দুধ সংগ্রহ করে ‘মিল্ক ইউনিয়ন’ । আবার মিল্ক ইউনিয়নের কাছ থেকে দুধ সংগ্রহ করে ‘দুগ্ধ ফেডারেশন’। সকলকেই দুধের ঘাটতি মেটানোর দিকে নজর দিতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে কোথায় কী সমস্যা রয়েছে, কার কী সুবিধা-অসুবিধা রয়েছে, ইত্যাদি বিষয়গুলিও খতিয়ে দেখছে প্রাণিসম্পদ বিকাশ দপ্তর।
উল্লেখ্য, দুধ সংগ্রহের নতুন পদক্ষেপ হিসাবে এই পূর্ব বর্ধমান জেলার ৮০টি গ্রাম থেকে ৮০ জন বেকার যুবককে নিয়োগের সিদ্ধান্তও নিয়েছে রাজ্যের প্রাণিসম্পদ বিকাশ দপ্তর। লিটারপিছু কমিশন ভিত্তিক তাদের বেতন দেওয়া হচ্ছে। দুধের চাহিদা মেটানোর জন্য পাইলট প্রজেক্ট হিসাবে এই অভিনব উদ্যোগ নিচ্ছে রাজ্য সরকারের। যা পূর্ব বর্ধমান জেলা দিয়েই শুরু হবে। এই নতুন উদ্যোগ সফল হলে অন্যান্য জেলাতেও একইভাবে বেকারদের নিয়োগ করা হবে। ফলে, বেকার যুবকরা আর্থিকভাবে উপকৃত হবেন।
মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বলেন, আমরা ডিমের ঘাটতি মেটানোর জন্য যেমন উদ্যোগ নিয়েছি, তেমনই দুধের ঘাটতি পূরণ করারও লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছি। তার জন্য একগুচ্ছ উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। বর্ধমান মাদার ডেয়ারির উৎপাদন বৃদ্ধি তার মধ্যে অন্যতম। দুধের ঘাটতি মেটাতে খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও উদ্যোগী হয়েছেন। তিনি বলেন, আমাদের সরকারের আমলে রাজ্যে দুধের উৎপাদন বেড়েছে। ২০১০-’১১ সালে যেখানে রাজ্যে ৪৪ লক্ষ মেট্রিক টন দুধ উৎপাদন হয়েছে, সেখানে ২০১৮-’১৯ সালে দুধ উৎপাদন হয়েছে ৫৬.০৩ লক্ষ মেট্রিক টন। অর্থাৎ দুধের উৎপাদনও আমরা বাড়িয়ে চলেছি। শীঘ্রই ঘাটতিও মেটাতে পারব বলে আশাবাদি। তার জন্যই নতুন নতুন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।