কর্মক্ষেত্রে অশান্তির সম্ভাবনা। মাতৃস্থানীয় কার শরীর-স্বাস্থ্যের অবনতি। প্রেমে সফলতা। বাহন ক্রয়-বিক্রয়ের যোগ। সন্তানের বিদ্যাশিক্ষায় উন্নতি।প্রতিকার: ... বিশদ
টেস্টের পরে ওয়ান ডে সিরিজ জিতে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ‘গোল্ডেন ডাবল’ অর্জন করল কোহলি ব্রিগেড। আর তার অন্যতম কাণ্ডারি হয়ে উঠলেন ধোনি। অথচ তাঁকে নিয়ে ইদানীং কম সমালোচনা হয়নি। ২০১৮ সালে ব্যাট হাতে ব্যর্থতার জেরে প্রশ্ন উঠে গিয়েছিল তাঁর রিফ্লেক্স নিয়ে। মাঝের ওভারগুলিতে ঠিকঠাক স্ট্রাইক রোটেট করতে পারছিলেন না। আবার আবার আগের মতো বিগ হিটও আসছিল না। ফলে সমালোচনা ক্রমশ বাড়ছিল। ভারতের বিশ্বকাপ পরিকল্পনা থেকে তাঁকে ছেঁটে ফেলার দাবিও জোরাল হচ্ছিল। কারণ ঋষভ পন্থের মধ্যে ধোনির উত্তরসূরি খুঁজে নেন অনেকেই। এমনই কঠিন সময়ে ডন ব্র্যাডম্যানের দেশে টানা তিনটি একদিনের ম্যাচে মাহির হাফ-সেঞ্চুরি রীতিমতো তাৎপর্যপূর্ণ। মেলবোর্নে সিরিজ নির্ণায়ক তৃতীয় ম্যাচে ধোনি দেখালেন আজও তিনি পারেন ম্যাচ ফিনিশ করে মাঠ ছাড়তে। ১১৪ বলে তাঁর অপরাজিত ৮৭ রানে ভর করে ৭ উইকেটে জয় পেল ভারত। একই সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে একদিনের ক্রিকেটে চতুর্থ ভারতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে হাজার রান পূর্ণ করলেন মাহি। মাইলস্টোন ছোঁয়ার জন্য এদিন ধোনির প্রয়োজন ছিল ৩৪ রান। দায়িত্বশীল ইনিংস খেলার পথে সেই লক্ষ্যে পৌঁছে গেলেন তিনি। এর আগে ভারতীয়দের মধ্যে শচীন তেন্ডুলকর, বিরাট কোহলি ও রহিত শর্মা অজি মুলুকে হাজার ওয়ান ডে রান করার কৃতিত্ব দেখিয়েছিলেন। এবার সেই তালিকায় নিজের নাম জুড়ে নিলেন ধোনি।
সিডনিতে প্রথম ম্যাচে ৯৬ বলে ৫১ রান করলেও মন্থর ব্যাটিংয়ের জন্য তাঁকে শুনতে হয়েছিল সমালোচনা। অ্যাডিলেডে ধোনি তারই জবাব দিয়েছিলেন শেষ ওভারে ম্যাচ জিতিয়ে। ৫৪ বলে ৫৫ রান করে অপরাজিত ছিলেন তিনি। আর এদিন মেলবোর্নে আরও একটা ম্যাচ জেতানো ইনিংস খেলে ধোনি বুঝিয়ে দিলেন, দলে তাঁর অপরিহার্যতা এখনও ফুরিয়ে যায়নি। সাধারণত ছয় নম্বরে ব্যাট করলেও এদিন তাঁকে নামতে হল চার নম্বরে। টিম ম্যানেজমেন্টের আস্থার মর্যাদা রাখতে পেরে খুশি ধোনি। সিরিজ সেরার পুরস্কার হাতে নিয়ে জানালেন, ‘যে কোনও পজিশনেই আমি খুশি মনে ব্যাট করতে পারি। আমার কাছে দলের স্বার্থই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। চার বা ছয় যে পজিশনেই খেলি না কেন, নিজের সেরাটা মেলে ধরার জন্য আমি মুখিয়ে থাকি। দীর্ঘ ১৪ বছর ক্রিকেট খেলার পর আজ যদি বলি, আমি ছয় নম্বরে ব্যাট করতে পারি না, তবে সেটা হাস্যকর হবে। আজ চার নম্বরে নেমে নিজের দায়িত্ব যথাযথ ভাবে পালন করতে পেরে আমি খুশি। আরও ভালো লাগছে, দলের ম্যাচ ও সিরিজ জয়ে প্রয়োজনীয় অবদান রাখতে পেরে।’ নিজের ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ধোনি সামনে মেলে ধরেছেন কেদার যাদবের অপরাজিত ৬১ রানের ইনিংসের গুরুত্বও। তাঁর কথায়, ‘উইকেট মন্থর হওয়ার কারণে স্ট্রোক নেওয়া কঠিন ছিল। এই পরিস্থিতিতে আমি ও কেদার খুচরো রানেই জোর দিয়েছিলাম। ধীরে ধীরে পার্টনারশিপ লম্বা করাই ছিল আমাদের প্রাথমিক লক্ষ্য। আমার মতো কেদারও দারুণ ভাবে চ্যালেঞ্জটা গ্রহণ করেছে। ওর ইনিংসটা সত্যিই অসাধারণ।’
ধোনির প্রশংসায় পঞ্চমুখ রবি শাস্ত্রী। ভারতীয় দলের প্রধান কোচ জানিয়েছেন, ‘এমএসডি নিজেকে কিংবদন্তির পর্যায়ে তুলে নিয়ে গিয়েছে। নিঃসন্দেহে সে ভারতীয় ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা খেলোয়াড়। চুপচাপ নিজের কাজ করে যায়। সত্যি বলতে কি, শচীন তেন্ডুলকরকেও আমি রাগ প্রকাশ করতে দেখেছি, কিন্তু ধোনিকে কখনও তেমনটা দেখিনি।’ এমন হিমশীতল মস্তিষ্কই মাহির সাফল্যের গোপন রহস্য বলে মনে করছেন কোচ শাস্ত্রী।