উত্তম বিদ্যালাভের যোগ আছে। কাজকর্মে উন্নতি ও কাজে আনন্দলাভ। অর্থাগমের উত্তম যোগ। ... বিশদ
গত কয়েকদিনে শান্তিপুরের একাধিক আবাস যোজনার আবেদনকারীকে অচেনা নম্বর থেকে ফোন করে এমনই টোপ দিয়ে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে। নতুন এই প্রতারণার দাপটে তটস্থ শান্তিপুরের প্রশাসনিক কর্তা থেকে আমজনতা। একাধিক অভিযোগ দায়ের হয়েছে শান্তিপুর থানায় এবং বিডিও অফিসে।
রাজ্যজুড়েই বাংলা আবাস যোজনার সার্ভে চলছে। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়েই সক্রিয় হয়ে উঠেছে প্রতারণা চক্র। প্রথমে বিডিও অফিসের নাম করে ফোন, তারপর ১ লক্ষ ৬১ হাজার টাকা দেওয়ার নামে লুঠ করে নেওয়া হচ্ছে হাজার হাজার টাকা। শান্তিপুর ব্লকের লালমাঠ পোলতা গ্রামের বাসিন্দা বছর সাতান্নর প্রৌঢ় দীনবন্ধু বিশ্বাসের কাছে ৯ অক্টোবর একটি অচেনা নম্বর থেকে ফোন আসে। বিডিও অফিসের কর্মী পরিচয় দিয়ে তাঁকে বলা হয়, আবাস যোজনার ১ লক্ষ ৬১ হাজার টাকা বরাদ্দ হয়েছে। সেই ঢাকা পেতে গেলে অ্যাকাউন্ট নম্বর এবং আধার কার্ড জমা দিতে হবে। ফোনেও বললেও চলবে। বিশ্বাস করে তা দিয়ে ফেলেন দীনবন্ধুবাবু। কিছুক্ষণের মধ্যেই তার ফোনে আসে ওটিপি। সেটিও কৌশলে আদায় করে নেয় প্রতারকরা। পরে ওই প্রৌঢ় খেয়াল করেন, তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে ২০০০ টাকা এবং তাঁর ছেলের অ্যাকাউন্ট থেকে ২৫৯০ টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। প্রতারিত হয়েছেন বুঝতে পেরে তিনি শান্তিপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
ওই গ্রামেরই বাসিন্দা সুকুমার বিশ্বাস। তাঁর কাছেও বিডিও অফিসের কর্মী পরিচয় দিয়ে একটি ফোন আসে। বলা হয়, এক্ষুনি তাঁর আবাসের টাকা ঢুকবে। তার জন্য দিতে হবে ৯৯৯ টাকা। সেইমতো ওই টাকা দিয়ে দিতে রাজিও হয়ে যান সুকুমারবাবু। কিন্তু তারপরেও টাকা ঢুকছে না দেখে সন্দেহ হয় তাঁর। ফের প্রতারকদের ফোন আসে। অন্যপ্রান্ত থেকে তারা জানায়, ৯৯৯ টাকা দিলেও এখনও সমস্যা মিটছে না। আরও আড়াই হাজার টাকা লাগবে। সুকুমারবাবু বুঝতে পেরে যান তিনি ফাঁদে পড়েছেন। টাকা দিতে অস্বীকার করলে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে ফোন কেটে দেওয়া হয়। সোমবার সকালেই তিনি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন শান্তিপুর থানার ফুলিয়া ফাঁড়িতে এবং বিডিও অফিসে। সুকুমারবাবুর ছেলে রানা বিশ্বাস বলেন, ‘প্রথমে বুঝতে পারিনি। তাই টাকাটা পাঠিয়ে দিয়েছিলাম। তারপর যখন দ্বিতীয়বার টাকা চাইল, তখনই বুঝতে পেরেছি কোনও গণ্ডগোল হচ্ছে। আমি সরাসরি বলি, আর টাকা দিতে পারব না।’
শান্তিপুরের বিডিও সন্দীপ ঘোষ বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। পুলিসকে জানিয়েছি। একই সঙ্গে সাইবার ক্রাইম থানাতেও বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ জমা পড়ছে। যিনি প্রতারিত হয়েছেন তার অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত হবেই। আমরাও বিষয়টি দেখছি। বিডিও অফিসের নাম করে এই প্রতারণা বরদাস্ত করা হবে না। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। তাছাড়া রাজ্য সরকারের আবাস যোজনায় ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা দেওয়ার কথা। যে পরিমাণ টাকা দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে, তার সঙ্গে প্রকল্পের কোনও যোগ নেই।