সম্পত্তিজনিত মামলা-মোকদ্দমায় সাফল্য প্রাপ্তি। কর্মে দায়িত্ব বৃদ্ধিতে মানসিক চাপবৃদ্ধি। খেলাধূলায় সাফল্যের স্বীকৃতি। শত্রু মোকাবিলায় সতর্কতার ... বিশদ
পুরুলিয়ার পাড়া থানার আদ্রা রেলকলোনিতে জন্ম চিত্রপরিচালক বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের। বাবা আনাড়া রেল হাসপাতালের চিকিৎসক ছিলেন। তাঁদের রেলের কোয়ার্টারে রাঁধুনির কাজ করতেন আনাড়া গ্রামের বাসিন্দা ধ্রুবলাল দেওঘরিয়া। প্রায় ১০ বছরেরও বেশি সময় তিনি সেখানে কাজ করেছিলেন। ধ্রুবলালবাবু আগেই প্রয়াত হয়েছেন। তাঁর স্ত্রী যশোদাদেবী বলেন, আমার স্বামী কম বয়স থেকেই ডাক্তারবাবুর কোয়ার্টারে রান্নার ও বাগান পরিচর্চার কাজ করত। স্বামীর কাছেই শুনেছি, সেসময় বুদ্ধদেব আর তার ভাই খুবই ছোট ছিল। তাদের কোলেপিঠে করে মানুষ করেছিল আমার স্বামী। রান্নার কাজ সেরে ওদের কাঁধে চাপিয়ে ঘুরে বেড়াত। এরপর ডাক্তারবাবু কলকাতায় চলে গেলেন। আমার স্বামীও রেলে চাকরি পেলেন।
কয়েকবছর আগে একটা সিনেমার শ্যুটিংয়ে পুরুলিয়া এসেছিল বুদ্ধদেব। সেখানে খোঁজ পেয়ে সোজা আমাদের বাড়িতে চলে এসেছিল। বার তিনেক আনাড়ার বাড়িতে এসেছে। দুর্গাপুজোর আগে একবার শাড়ি আর মিষ্টি নিয়ে এসেছিল। ওই দিনই চালগুঁড়ির পিঠে আর লাড্ডু করে খাইয়েছিলাম। তারপর কতবার ওর জন্য হাঁসের ডিম আর মাছ কলকাতার বাড়িতে পাঠিয়েছি। ওরা আমাদের সন্তানের মতো। বুদ্ধদেব চলে গেল। সন্তান হারানোর কষ্ট বুকে বিঁধছে।
যশোদাদেবীর ছেলে মধুসূদন বলেন, উনি অনেক বড় পরিচালক। বাবার কাঁধে চেপে বড় হয়েছেন শুনলেও কাছে ঘেঁষার সাহস পাইনি। তবে ‘জানালা’ সিনেমার শ্যুটিংয়ের সময় সাহস করে কাছে গিয়ে বলেছিলাম, আমি ধ্রুবলাল দেওঘরিয়ার ছেলে। সঙ্গে সঙ্গে আমাকে জড়িয়ে ধরেছিলেন। সেকথা আমি কোনও দিন ভুলতে পারব না। বাবার কথা শোনার পরই তিনি আমাদের বাড়ি এসেছিলেন।
পুরুলিয়ায় বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের একাধিক সিনেমায় অভিনয়ের পাশাপাশি কখনও তাঁর সহকারী পরিচালক, কখনও আবার লোকেশন কো-অর্ডিনেটরের কাজ করেছেন পুরুলিয়া শহরের বাসিন্দা অনুপ মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, পুরুলিয়ার অপরূপ প্রকৃতিকে বুদ্ধদেববাবু সিনেমার পর্দায় জায়গা করে দিয়েছিলেন। তিনি বারবার বলতেন, পুরুলিয়ায় যে কোনও জায়গায় ক্যামেরা অন করলেই হল। চারদিকে মনের মতো লোকেশন। আলাদা করে খুঁজতে হয় না।