কর্মক্ষেত্রে অশান্তির সম্ভাবনা। মাতৃস্থানীয় কার শরীর-স্বাস্থ্যের অবনতি। প্রেমে সফলতা। বাহন ক্রয়-বিক্রয়ের যোগ। সন্তানের বিদ্যাশিক্ষায় উন্নতি।প্রতিকার: ... বিশদ
শক্তিগড়ের ল্যাংচা ব্যবসায়ীদের দাবি, প্রতিবছর ২১জুলাই শহিদ সভার দিনেও কেনাকাটা বেশি হয়। কিন্তু, শনিবার ব্রিগেড সমাবেশ উপলক্ষে যে পরিমাণ বিক্রি হয়েছে তা কোনও বছর ২১জুলাই হয়নি। সেদিক থেকে সাম্প্রতিক অতীতে রেকর্ড পরিমাণ ল্যাংচা বিক্রি হল শক্তিগড় ল্যাংচা মার্কেটে। বিকেলের পর দুর্গাপুরমুখী লেনে ল্যাংচার দোকানগুলির সামনে জাতীয় সড়কের ধারে কাতারে কাতারে বাস ও অন্যান্য ছোট গাড়ি দাঁড়িয়ে পড়ে। অনেক গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গা না পেয়ে বামচাঁদাইপুরে মিষ্টিহাবে এসে দাঁড়ায়। সেখানেও কিছুটা কেনাকাটা হয়েছে। শক্তিগড়ে ঝালমুড়ি বিক্রেতাদের মুখেও হাসি ফুটিয়েছেন ব্রিগেড ফেরত শাসক দলের কর্মীরা।
শক্তিগড় থানার প্যামড়ায় ২নম্বর জাতীয় সড়কের দু’ধারে রয়েছে ৩৮টি ল্যাংচার দোকান। শক্তিগড়ের ল্যাংচার সুনাম গোটা রাজ্যজুড়ে রয়েছে। শনিবার ব্রিগেড সমাবেশ থাকায় এদিন রেকর্ড বিক্রি হবে বলে আগে থেকেই অনুমান ছিল ব্যবসায়ীদের। সেজন্য শুক্রবার সারাদিন প্রতিটি দোকানে ল্যাংচা প্যাকেট করে রাখা হয়েছিল। ১০, ১৫, ২০ এবং ২৫টি ল্যাংচার শ’য়ে শ’য়ে প্যাকেট সারি সারি রাখা ছিল বেশিরভাগ দোকানে। দৈনিক ভাতা দিয়ে অতিরিক্ত কর্মীও নিয়োগ করা হয়েছিল। শনিবার বিকেল থেকেই তৃণমূল কর্মীদের স্রোত নামতে শুরু করে শক্তিগড় ল্যাংচা মহল্লায়। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই লক্ষ লক্ষ টাকার কেনাকাটা হয়ে গেল।
শক্তিগড়ের মিষ্টি ব্যবসায়ী সিধু ঘোষ বলেন, এদিন প্রতিটি দোকানেই লক্ষ টাকার বেশি কেনাকাটা হয়েছে। ২১জুলাই ধর্মতলা ফেরত তৃণমূল কর্মীদের ভিড় থাকে। ওইদিন কেনাকাটা অনেকটা বেশি হয়। তবে, শনিবার ব্রিগেড সমাবেশ শেষ হওয়ার পর ২১জুলাইয়ের তুলনায় অনেক বেশি ভিড় ছিল এবং কেনাকাটা বেশি হয়েছে। প্রভাত ঝা নামে আরেক ল্যাংচা ব্যবসায়ী বলেন, শক্তিগড়ে আমার দু’টো দোকান আছে। এদিন খুব ভালো বিক্রি হয়েছে। প্রতিটি দোকানে এক থেকে দেড় লক্ষ টাকার বেশি বিক্রি হয়েছে।
পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ জেলার বিস্তীর্ণ এলাকার হাজার হাজার তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী সকাল থেকেই বাস ও অন্যান্য ছোট গাড়িতে চেপে ২নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে ব্রিগেড সমাবেশে যান। বিকেলের পর থেকেই প্রত্যেকেই বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন। ব্রিগেড সমাবেশ শেষে জাতীয় সড়ক বরাবর ফেরার সময় বেশিরভাগ গাড়ি শক্তিগড়ে সারিবদ্ধ ল্যাংচা দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে পড়ে। থিকথিকে ভিড় একের পর এক দোকানে গিয়ে হামলে পড়ে। দীর্ঘক্ষণ ধরে রাস্তার ধারে পার্কিংয়ের জায়গা না পেয়ে বহুদূর পর্যন্ত সারি সারি গাড়ি দাঁড়িয়ে পড়ে। বাঁকুড়ার ইন্দাস থানা এলাকার তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী বাবলু সর্দার, নিখিল মাহাতো, অমিয় দে প্রমুখ বাস থেকে নেমে হামলে পড়েন ল্যাংচার দোকানে। তাঁরা বলেন, শক্তিগড়ের ল্যাংচার কদর রয়েছে। তাই কলকাতা থেকে ফেরার পথে ল্যাংচার কেনার সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইনি।
গত ১৬জানুয়ারি বর্ধমানে বামচাঁদাইপুর মৌজায় মিষ্টিহাবে মিষ্টি উৎসবের সূচনা হয়েছে। ২২তারিখ পর্যন্ত মিষ্টি উৎসব চলবে। মিষ্টি উৎসব উপলক্ষে বিভিন্ন স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে ক্যুইজ, সন্ধ্যায় লোকগীতির মতো অনুষ্ঠান হচ্ছে। কিন্তু, ১৬তারিখের পর থেকে মাছি তাড়ানো ছাড়া স্টলগুলিতে সেভাবে কোনও কাজ ছিল না। এদিন সকাল থেকে স্টল প্রাপকরা ৮০হাজার থেকে এক লক্ষ টাকার মিষ্টি মজুত রেখেছিলেন। তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীবোঝাই কিছু সংখ্যক বাস এদিন মিষ্টিহাবের সামনে দাঁড়িয়েছিল। তারফলে টানা কয়েক দিনের খরা কাটিয়ে এদিন কিছুটা হলেও মুখে হাসি ছিল ব্যবসায়ীদের।