বিদ্যার্থীরা মাঝে মধ্যে মানসিক উদ্বেগের জন্য শিক্ষায় অমনোযোগী হয়ে পড়বে। কর্মপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে নানা সুযোগ আসবে। ... বিশদ
প্রতিবেশী বাংলাদেশে মাদকের চাহিদা ব্যাপক। আগে প্লাস্টিকের প্যাকেটে, ঘাসের বস্তায় কিংবা গোরু পাচারের সঙ্গে যুক্ত ক্যারিয়ারদের মাধ্যমে বাংলাদেশে মাদক পাঠাত পাচারকারীরা। বর্তমানে মাদক পাচারের কৌশলে কিছুটা পরিবর্তন করা হয়েছে। গত ৭ জুলাই রায়গঞ্জের হরিহরপুর সীমান্তে একটি সাইকেলে তল্লাশি চালিয়ে ৪৬০টি ইয়াবা ট্যাবলেট বাজেয়াপ্ত করেছে বিএসএফ জওয়ানরা। বিএসএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, কাঁটাতারের বেড়ার কাছে সাইকেল নিয়ে এক গ্রামবাসী যায়। কর্তব্যরত জওয়ানরা থামতে বললে সাইকেল ফেলে ওই ব্যক্তি পালিয়ে যায়। এরপর তল্লাশি চালিয়ে সাইকেলের হ্যান্ডেল থেকে উদ্ধার হয় প্লাস্টিকে মোড়া ইয়াবা ট্যাবলেট। যার দাম ২ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা।
শুধু সাইকেল নয়, আরও নানা উপায়ে মাদক পাচার হচ্ছে। বিএসএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, বাইকের তেলের ট্যাঙ্কের নীচে চেম্বার করে গাঁজা ও কাশির সিরাপ ছোটো ছোটো প্যাকেটে লুকানো হচ্ছে। কাঁটাতারের বেড়ার কাছে গিয়ে বাইক থেকে ওই চেম্বার খুলে ছোঁড়া হচ্ছে বাংলাদেশে। কখনও কখনও লাউয়ের পেটে ছোটো কুঠুরি তৈরি করা হচ্ছে। তাতে ইয়াবা ট্যাবলেট, গাঁজা ও কাশির সিরাপ ঢুকিয়ে পাচার করা হচ্ছে। একইভাবে মিষ্টি কুমড়া ও তরমুজেও চলছে পাচার।
উল্লেখ্য, বিএসএফের উত্তরবঙ্গ ফন্টিয়ারের অধীনে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকা রয়েছে প্রায় ৯৩৬ কিলোমিটার। সংশ্লিষ্ট এলাকায় মালদহের একাংশ, বালুরঘাট, উত্তর দিনাজপুর, বিহারের কিষানগঞ্জ, জলপাইগুড়ি এবং মেখলিগঞ্জে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকা রয়েছে। বিএসএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত এপ্রিল থেকে জুন এই তিন মাসে সংশ্লিষ্ট সীমান্ত এলাকা থেকে প্রায় ২ কোটি ১৯ লক্ষ ৬৩ হাজার ৪৭০ টাকার বিভিন্ন সামগ্রী বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এরমধ্যে ইয়াবা ট্যাবলেট সহ অন্যান্য উপকরণের বাজার মূল্য প্রায় ৫৪ লক্ষ ২৯ হাজার ৮৩৮ টাকা। নিষিদ্ধ কাশির সিরাপ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে প্রায় ১৪০৪৭টি বোতল। যার মূল্য প্রায় ২৪ লক্ষ ৩৮ হাজার ৪৬১ টাকা। যারমধ্যে ৯০৭টি গোরুও রয়েছে। যার বাজারমূল্য প্রায় ১ কোটি ২৯ লক্ষ ৯৩ হাজার ১৭১ টাকা। এরবাইরে ১৩০.২ কেজি গাঁজা, ৩৭ হাজার টাকার সোনা এবং ১০ লক্ষ ৬৫ হাজার টাকার রূপা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
পাচারের ওই ঘটনা এবং পরিসংখ্যান ঘাঁটাঘাটি করে গোয়েন্দারা চাঞ্চল্যকর কিছু তথ্য পেয়েছে। গোয়েন্দা সূত্রের খবর, বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশ থেকেই বেশি গোরু আসছে এই রাজ্যে। এছাড়া, হরিয়ানা, মধ্যপ্রদেশ ও রাজস্থান থেকেও সীমান্তে আসছে গোরু। এবার মাদকও এই রাজ্যে আসছে বিজেপি শাসিত উত্তর-পূর্ব ভারতের ত্রিপুরা ও মণিপুর থেকে। সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলি থেকে গাঁজা আসছে বেশি। আর মায়ানমার থেকে আসা ইয়াবা ট্যাবলেটও ওই রাজ্যগুলি হয়ে উত্তরবঙ্গে আসছে। এর থেকেই মনে হচ্ছে ওইসব রাজ্যের মাদক কারবারিরা উত্তরবঙ্গ জুড়ে জাল বিস্তার করেছে। এই কারবার দমাতে সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলিতে পুলিসি নজরদারি বাড়ানোর দাবি তুলেছে বিভিন্ন মহল।