সুব্রত ধর, শিলিগুড়ি: ভোটে শিলিগুড়ি সহ উত্তরবঙ্গে ‘হায়ারে’ আসতে পারে ভিনরাজ্যের দাগি দুষ্কৃতীরা। এমনই আশঙ্কা করছে পুলিস ও গোয়েন্দারা। তাই তারা বিভিন্ন রাজ্য পুলিস এবং নেপাল ও বাংলাদেশ সীমান্তে কর্তব্যরত জওয়ানদের সঙ্গে সমন্বয় বৈঠক শুরু করেছেন। ইতিমধ্যে সিকিম পুলিসের সঙ্গে বৈঠক করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, শিলিগুড়ি সহ দার্জিলিং জেলায় গড়া হয়েছে অসংখ্যা নাকা চেকিং পয়েন্ট। দুষ্কৃতীদের অবাধ যাতায়াত, হিসেব বহির্ভূত অর্থ, মদ, মাদক, আগ্নেয়াস্ত্র প্রভৃতির লেনদেন রুখতেই এমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। পুলিস অফিসাররা বলেন, বিধানসভা ভোট অবাধ ও শান্তিপূর্ণ করতে উত্তরবঙ্গজুড়েই পুলিস সতর্ক রয়েছে। 
উত্তরবঙ্গের সীমান্তবর্তী জেলাগুলির মধ্যে দার্জিলিং অন্যতম। জেলার সমতলভাগে উত্তরবঙ্গের অঘোষিত ‘রাজধানী’ শহর শিলিগুড়ি অবস্থিত।  এই শহরের পাশেই প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশ ও নেপাল। এছাড়া এই শহর থেকে প্রতিবেশী রাজ্য বিহারের দূরত্বও খুব বেশি নয়। এর বাইরে জেলার কিছু এলাকা সিকিম সংলগ্ন। পাশের জেলা কালিম্পংয়ের ভৌগোলিক অবস্থানটাও অনেকটা একইরকম। এমন ভৌগোলিক অবস্থানকে কাজে লাগিয়ে দুই জেলাতেই দীর্ঘদিন ধরে ভিনরাজ্যের দুষ্কৃতীরা সক্রিয়। ভোটের ময়দানে ওই দুষ্কৃতীদের দাপাদাপি রুখতেই তৎপর হয়েছে পুলিস। তারা  ফেব্রুয়ারি মাসে সিকিম পুলিসের সঙ্গে সমন্বয় বৈঠক করেছে। 
দার্জিলিং জেলা পুলিসের এক অফিসার বলেন, সীমান্তে যৌথ তল্লাশি চালানো, দুষ্কৃতীদের গতিবিধির উপর নজর রাখা সহ বিভিন্ন বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা করা হয়েছে। শীঘ্রই বিহার পুলিস এবং নেপাল সীমান্তে কর্মরত এসএসবি ও বাংলাদেশ সীমান্তে কর্মরত বিএসএফের সঙ্গে সমন্বয় বৈঠক করা হবে। ইতিমধ্যে জেলায় ২৭টি নাকা চেকপোস্ট চালু করা হয়েছে। কালিম্পংয়ের পুলিস সুপার হরিকৃষ্ণ পাই বলেন, সিকিম পুলিসের সঙ্গে প্রথম পর্যায়ে সমন্বয় বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। পরবর্তীতে ফেরার দুষ্কৃতীদের তালিকা তাদের সঙ্গে আদান-প্রদান করা হবে। এছাড়া জেলায় ছ’টি নাকা চেকিং পয়েন্ট চালু করা হয়েছে। একটি জায়গায় আবগারি দপ্তরের সঙ্গে যৌথভাবে তল্লাশি অভিযান চালানো হচ্ছে। 
প্রসঙ্গত, মাস খানেক আগে শিলিগুড়ি শহর ও গ্রামীণ এলাকায় পুলিসের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র, গুলি ও মাদক সহ ধরা পড়েছে বিহারের কয়েকজন দুষ্কৃতী। এনজেপি থানা এলাকায় মাদক কারবারের প্যাকেজিং ইউনিট সিল করেছে এসটিএফ। সংশ্লিষ্ট ঘটনাগুলি পর্যালোচনা করার পর পুলিস ও গোয়েন্দাদের একাংশ রীতিমতো উদ্বিগ্ন। তাঁদের আশঙ্কা, ভোটের দিন ভিনরাজ্য ও প্রতিবেশী রাষ্ট্র থেকে ‘হায়ার’ করা দুষ্কৃতীরা এখানে এসে গোলমাল পাকাতে পারে। শিলিগুড়ি শহরের নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে মেট্রোপলিটন পুলিস কমিশনারেট। এ জন্য কমিশনারেটের অফিসাররা ইতিমধ্যে জলপাইগুড়ি ও দার্জিলিং জেলা পুলিসের সঙ্গে সমন্বয় বৈঠক করেছেন। 
ডেপুটি পুলিস কমিশনার (সদর) জয় টুডু বলেন, শহরে ছ’টি নাকা চেকিং পয়েন্ট চালু করা হয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে পুলিস সতর্ক রয়েছে। বিএসএফের সঙ্গেও সমন্বয় বৈঠক করা হবে।