বিদ্যার্থীদের বেশি শ্রম দিয়ে পঠন-পাঠন করা দরকার। কোনও সংস্থায় যুক্ত হলে বিদ্যায় বিস্তৃতি ঘটবে। কর্মপ্রার্থীরা ... বিশদ
শনিবার ট্যুইট করে রৌহানি বলেন, এই মারাত্মক ভুলের জন্য ইরান গভীরভাবে ক্ষমাপ্রার্থী। তিনি আরও জানান, বিমান ভেঙে পড়ার পর সেনা উচ্চপর্যায়ের অভ্যন্তরীণ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল। তা সম্পন্ন হয়েছে। তদন্তে উঠে এসেছে যে, মানুষের ভুলের কারণেই ক্ষেপণাস্ত্রটি ইউক্রেনের বিমানে গিয়ে আঘাত করেছিল। প্রাণ হারিয়েছিলেন ১৭৬ জন নিরীহ মানুষ। সেই সঙ্গে, ক্ষমার অযোগ্য এই ভুলের জন্য যারা দায়ী, তাদেরও খুঁজে বের করে শাস্তি দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট।
শনিবার, ইরানের সেনাই প্রথমে বিবৃতি জারি করে হামলার কথা স্বীকার করে। তারা জানায়, সংঘাতের আবহে বোয়িং ৭৩৭ বিমানটিকে ভুল করে শত্রুপক্ষের বলে মনে করা হয়েছিল। তাতেই এই দুর্ঘটনাটি ঘটে। অন্যদিকে, এই ঘটনার জন্য ক্ষমা চেয়েছেন ইরানের বিদেশমন্ত্রী মহম্মদ জাভেদ জারিফ। তিনি বলেন, নিহতদের পরিবারকে সমবেদনা জানাচ্ছি। আমরা ক্ষমাপ্রার্থী। আমেরিকার সঙ্গে উত্তেজক পরিস্থিতির মধ্যে মানুষের ভুলের কারণে এই ঘটনা ঘটেছে। আমরা অত্যন্ত দুঃখিত। উল্লেখ্য, দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমানটিতে ইরান, ইউক্রেন, আফগানিস্তান, ব্রিটেন ও সুইডেনের নাগরিকরা ছিলেন। তাঁদের প্রত্যেকের মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে, বুধবারে ইরানে বিমান ভেঙে পড়ার পরই আন্তর্জাতিক মহলে টানাপোড়েন শুরু হয়। এর মধ্যে, একটি ভিডিও প্রকাশ্যে আসে। তাতে দেখা যায়, দ্রুতগতির একটি বস্তু বিমানটিতে আঘাত করে। কয়েক সেকেন্ড পরেই তাতে বিস্ফোরণ হয় এবং বিমানটিতে আগুন জ্বলে ওঠে। যদিও, এই ভিডিও’র সত্যতা প্রথমে মানতে চায়নি ইরান। দেশের অসামরিক বিমান পরিবহণের প্রধান ওই ভিডিওটিকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দেন। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই, সুর বদলে তেহরানের পক্ষ থেকে বিমান লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়ার কথা মেনে নেওয়া হল। প্রসঙ্গত, ১৯৮৮ সালের পর ইরানে কোনও অসমারিক বিমান দুর্ঘটনায় এত মানুষের প্রাণহানি হয়নি। সেবারও ভুল করে মার্কিন সেনা একটি ইরানি বিমানকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। তাতে, ২৯০ জন প্রাণ হারায়।
সেনাকর্তা কাশেম সোলেমানির হত্যার বদলা নিতে মঙ্গলবার ভোর রাতে ইরাকে অবস্থিত মার্কিন সেনাঘাঁটি লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। তাতে প্রায় ৮০ জন মার্কিন সেনা মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করে তারা। কিন্তু, সেই দাবি খারিজ করে দেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যদিও, ইরানের ওই হামলার পরই সম্ভাব্য যুদ্ধের প্রহর গুনতে থাকে পশ্চিম এশিয়া। এই পরিস্থিতির মধ্যে বুধবার ইউক্রেনের বিমানটি ভেঙে পড়ে। এর পর থেকেই আমেরিকা বলছে, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র আঘাতেই সেটি ভেঙে পড়েছে। প্রথমে তা অস্বীকার করলেও, আন্তর্জাতিক চাপে দায় স্বীকার করতে বাধ্য হল তেহরান।
প্রাথমিকভাবে একে দুর্ঘটনা বলেই মনে করা হচ্ছিল। সময় কিছুটা গড়াতেই ইরানের হামলার বিষয়টি সামনে আসে। একাধিক দেশও এই ঘটনায় নিরপেক্ষ আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি তুলেছিল। পাশাপাশি, ইরানের আকাশ দিয়ে বিমান চলাচলও বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয় বহু দেশ।
অন্যদিকে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, ইরানই এই কাজ করেছে বলে আমরা সন্দেহ করেছিলাম। পাশাপাশি, দোষীদের শাস্তি ও মৃতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণেরও দাবি তুলেছেন তিনি। সুর চড়িয়েছে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোও। ইরানের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া ছাড়াও মৃতরা যাতে সঠিক বিচার পায়, সেই দাবিও তুলেছেন তিনি।