বিদ্যার্থীদের বেশি শ্রম দিয়ে পঠন-পাঠন করা দরকার। কোনও সংস্থায় যুক্ত হলে বিদ্যায় বিস্তৃতি ঘটবে। কর্মপ্রার্থীরা ... বিশদ
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন ও এনআরসি বিরোধী আন্দোলন যখন তুঙ্গে, তখনই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দু’দিনের সফরে কলকাতা এসেছেন শনিবার। দুপুর থেকেই শহরের প্রাণকেন্দ্র ধর্মতলা বিক্ষোভ-মিছিল-অবস্থানে স্তব্ধ হয়ে যায়। কংগ্রেস, শাসকদলের ছাত্র সংগঠন থেকে নকশালপন্থী আইসা, সংখ্যালঘু যুব ফেডারেশন কে নেই বিক্ষোভে! স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, প্রধানমন্ত্রীর সফর চলাকালীন এতগুলি সংগঠনকে একসঙ্গে বিক্ষোভ প্রদর্শনের অনুমতি দেওয়া হল কেন? এই প্রশ্নের উত্তর অবশ্য দিতে চাননি কোনও পুলিসকর্তাই। পরে রাতের দিকে কয়েকটি অতি বাম ছাত্র সংগঠন ব্যারিকেড ভেঙে রাজভবনের দিকে এগতে গেলে পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়ে ওঠে।
দুপুর থেকেই একদিকে ধর্মতলায় একটানা বিক্ষোভ সমাবেশ, অন্যদিকে রেসকোর্স থেকে রাজভবন এবং রাজভবন থেকে ওল্ড কারেন্সি বিল্ডিং—প্রধানমন্ত্রীর এই যাত্রাপথের মোড়ে মোড়ে বাঁশের অস্থায়ী ব্যারিকেড করে সাধারণ মানুষের রাস্তা আটকেছে পুলিস। বিক্ষোভকারীদের ঠেকাতে রাজভবনগামী সব রাস্তাতেই এদিন একাধিক ব্যারিকেড ছিল। যেমন, ডোরিনা ক্রসিং থেকে রানি রাসমণি অ্যাভিনিউ হয়ে রাজভবন যেতে হলে পরপর তিনটি ব্যারিকেড টপকাতে হতো বিক্ষোভকারীদের। মেট্রো চ্যানেল, ডোরিনা ক্রসিং, কে সি দাস, লেনিন সরণী ছিল বিক্ষোভকারীদের দখলে। যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয় এসপ্ল্যানেড ইস্ট দিয়েও। ফলে সব মিলিয়ে এদিন কলকাতা শহরে ট্রাফিক বলে কোনও বস্তুর অস্তিত্ব ছিল না।
এদিন ধর্মতলা চত্বরে কান পাতলেই শোনা গিয়েছে, দাদা, মালদহের বাস কোথায় পাব? রাজনৈতিক দাদা-দিদিদের খামখেয়ালিপনায় রাজ্যের প্রত্যন্ত জেলা থেকে আসা সাধারণ মানুষকে নির্ধারিত বাস না পেয়ে পদে পদে নাকাল হতে হয়েছে। বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ শিয়ালদহগামী একটি বাসকে আকাশবাণীর সামনে আটকে দেয় পুলিস। অসহায় বাসযাত্রীরা রাজভবনের ফুটপাত উঠলে পুলিস রে রে করে তেড়ে এসেছে।
সুযোগ বুঝে অ্যাপ ক্যাব থেকে হলুদ ট্যাক্সি সবাই চড়া ভাড়া হেঁকেছে। জওহরলাল নেহরু রোড, এস এন ব্যানার্জি রোড, সেন্ট্রাল অ্যভিনিউ, লেনিন সরণীতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যাত্রী বোঝাই বাস-মিনিবাসকে এদিন থমকে থাকতে দেখা গিয়েছে। ফলে একদিকে শিয়ালদহ থেকে বাবুঘাট, অন্যদিকে এক্সাইড থেকে গিরিশ পার্ক কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে।
‘মিছিল নগরী’ হিসেবে কলকাতার সুখ্যাতি অনেকদিনের। ফি বছর ২১ জুলাইয়ের শহিদ সমাবেশ, আর শাসক বিরোধী দলের পাল্লা দিয়ে চলা ব্রিগেড সমাবেশকে মুখ বুজেই সহ্য করে আসছে কলকাতা। কিন্তু এদিনের যন্ত্রণা যেন সবকিছুকে ছাপিয়ে গেল!