বিদ্যার্থীদের বেশি শ্রম দিয়ে পঠন-পাঠন করা দরকার। কোনও সংস্থায় যুক্ত হলে বিদ্যায় বিস্তৃতি ঘটবে। কর্মপ্রার্থীরা ... বিশদ
সিএএ-এনআরসি নিয়ে ক্ষোভ আগে থেকেই ছিল। সম্প্রতি সেই ক্ষোভের আগুনে ঘি ঢালে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় কাণ্ড। তাই প্রধানমন্ত্রী শহরে এলে তাঁকে কালো পতাকা দেখিয়ে গো ব্যাক স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ দেখানোর পরিকল্পনা করে বামপন্থীরা। তামিলনাড়ু ও কর্নাটকে মোদিকে এই ধরনের বিক্ষোভ দেখানোর ঘটনায় তারা আরও উৎসাহিত হয়। সবশেষে বিজেপি শাসিত অসমে মোদি নিজের সফর বাতিল করায় উদ্যোক্তাদের উৎসাহ ও সাহস দ্বিগুণ হয়। বামেদের ডাকে সাড়া দেয় রাজ্যের অপর বিরোধী দল কংগ্রেসও। সিপিএম নেতৃত্বাধীন বামফ্রন্ট ও তাদের সহযোগী দলগুলির ছাড়াও এসইউসি এবং অন্যান্য বেশ কিছু ছোটখাট বাম দল ও সংগঠনও একই কর্মসূচি গ্রহণ করে। পরে ঘোষণা করলেও শাসকদল তৃণমূল তাদের ছাত্র সংগঠনকেও আসরে নামায়। কোথাও মিছিল, কোথাও মানববন্ধন করে তারা এদিন ময়দানে থাকে। ধর্মতলায় বৃহস্পতিবার থেকেই শুরু করে ধর্না। সব সংগঠনের লক্ষ্য ছিল এক—এনআরসি বা নয়া নাগরিকত্ব আইন বাতিল করতে হবে। দেশকে সাম্প্রদায়িক বিভাজনের হাত থেকে রক্ষা করতে কেন্দ্রকে এই নয়া আইন ফিরিয়ে নিতেই হবে। আর এই দাবিতে বিক্ষোভ দেখাতে গিয়ে এদিন কলকাতা সহ গোটা রাজ্যে প্রধানমন্ত্রীর কয়েকশো কুশপুতুল পুড়িয়েছে বিভিন্ন দল ও সংগঠন।
এদিন দুপুর গড়াতেই হাতিবাগান, কলেজ স্ট্রিট, যাদবপুর, গোলপার্ক, নন্দন চত্বর, বড়বাজার প্রভৃতি জায়গায় ছাত্র-যুবরা জড়ো হতে থাকেন। দমদম বিমানবন্দর, কৈখালি, রাজারহাট, চিনার পার্কের মতো জায়গাগুলিতেও একই ছবি ধরা পড়ে। মূলত এসএফআই, আইসার মতো বাম ছাত্র সংগঠন এর উদ্যোগ নেয়। তবে দল হিসেবে সিপিএম তাদের সাংগঠনিক শক্তিকেও কাজে লাগায় জমায়েতে ভিড় বাড়ানোর জন্য। বিমানবন্দরের এক ও আড়াই নম্বর গেটের কাছে বিক্ষোভ দেখানোকে কেন্দ্র করে পুলিসের সঙ্গে ধস্তাধস্তির ঘটনাও ঘটে। কৈখালিতে প্রসেনজিৎ বসুদের নাগরিক সমাজের সমর্থকরা জড়ো হয় ভিআইপি রোডের ধারে। একই ছবি দেখা যায় ভাঙড় থেকে আসা বাম সমর্থকদের নিয়ে চিনার পার্কের জমায়েতেও। এসএফআই, ছাত্র পরিষদের সমর্থকরা হাতিবাগান ও কলেজ স্ট্রিট চত্বরে রাস্তা অবরোধ করে দীর্ঘক্ষণ বিক্ষোভ দেখান। দাহ করে মোদির কুশপুতুল। রাস্তায় আল্পনা এঁকে ‘গো ব্যাক মোদি’ স্লোগানও লেখেন।
তবে মোদি বিমানবন্দরে পা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জমায়েত জমে ওঠে ধর্মতলায়। একের পর দল ও সংগঠনের মিছিল এসে লেনিন মূর্তির সামনে জড়ো হয়ে তুমুল বিক্ষোভ শুরু করে। গোটা চৌরঙ্গি রোড তখন বিক্ষোভকারীদের দখলে। যানবাহন চলাচল আশপাশের রাস্তাতেও প্রায় বন্ধ। গো ব্যাক এবং আজাদি’র স্লোগানে গোটা এলাকা মুখরিত। বহু পথচলতি মানুষও তাতে যোগ দেয় ইস্যুর প্রতি সমর্থন জানিয়ে। তবে এরই মধ্যে রাজভবনে মোদি-মমতার একান্ত সাক্ষাৎকারের খবর আসতেই বিক্ষোভকারীদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধেও ক্ষোভ তৈরি হয়। মহম্মদ সেলিমের মতো সিপিএম নেতা এই ধরনের বৈঠকের উদ্দেশ্য নিয়ে ঘোরতর সন্দেহ ব্যক্ত করেন।