বিদ্যার্থীদের বেশি শ্রম দিয়ে পঠন-পাঠন করা দরকার। কোনও সংস্থায় যুক্ত হলে বিদ্যায় বিস্তৃতি ঘটবে। কর্মপ্রার্থীরা ... বিশদ
স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, সামনেই মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক থেকে শুরু করে জয়েন্ট এন্ট্রান্স, স্নাতকস্তরের নানা পরীক্ষা রয়েছে। বিকেল থেকে মানুষের হইচই আর মাইকের আওয়াজে বাড়িতে টেকাই দায় হবে। তাতে পড়াশোনা আদৌ হবে না। বাসিন্দাদের আরও অভিযোগ, মেলার জন্য কিছু অস্থায়ী শৌচালয় তৈরি করা হয়। কিন্তু সুষ্ঠু পয়ঃপ্রণালীর ব্যবস্থা না থাকায় মলমূত্র রাস্তায় গড়াতে থাকে। মারাত্মক অস্বাস্থ্যকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হন নন্দীপাড়া লেনের প্রায় আড়াই হাজার বাসিন্দা। এছাড়া খাবারের প্যাকেট থেকে শুরু করে নানা বর্জ্য রাস্তার পাশে বা যেখানে সেখানে জড়ো করা হয়।
যে মাঠে মেলা হয়, তার একেবারে সংলগ্ন অংশে প্রচুর ঘরবাড়ি থাকায় টানা আওয়াজে শিশু, বৃদ্ধ এবং অসুস্থ ব্যক্তিদের সীমাহীন দুর্ভোগে পড়তে হয়। নন্দীপাড়া লেনের বাসিন্দারা এসব অভিযোগ নথিভুক্ত করে উৎসব বন্ধ করার দাবি জানিয়েছেন। হাওড়া পুরসভার প্রশাসক তথা কমিশনার থেকে শুরু করে হাওড়ার পুলিস কমিশনার ও জেলাশাসককে পাঠানো হয়েছে অভিযোগপত্র। কিন্তু মেলা যে এবারও হচ্ছেই, তা এই মাঠে গিয়ে আয়োজন দেখেই বোঝা গেল।
শুক্রবার বিকেলে মেলার মাঠে গিয়ে দেখা গেল, প্রস্তুতি তুঙ্গে। বাঁশ বাঁধা চলছে নানা স্টলের জন্য। কোথাও কোথাও টিনের বেড়া দেওয়া চলছে রাস্তার সঙ্গে মেলার মাঠের পার্থক্য বোঝাতে। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার এক গৃহবধূ বলেন, বাড়িতে অসুস্থ বাচ্চা রয়েছে। গত বছর মেলার সময় যে অত্যাচার দেখেছি, তা এবার হলে কীভাবে বাচ্চাকে সামলে রাখব, ভেবে ঘুম উড়ে গিয়েছে। আরেক গৃহবধূ বলেন, এরকম ঘিঞ্জি জায়গায় টানা দেড় মাস হাজার হাজার লোক যাতায়াত করলে কী অবস্থা হতে পারে, একটু ভাবলেই যে কেউ টের পাবেন। পড়াশোনা লাটে উঠবে। আর মেলা শেষের পর মলমূত্রের দুর্গন্ধ থাকবে বহুদিন ধরে। এরকম একটি অবরুদ্ধ জায়গায় প্রশাসন কীভাবে মেলার অনুমোদন দেয়, তা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে উদ্যোক্তাদের অন্যতম কর্তা তথা ‘হাওড়া উৎসব’ কমিটির যুগ্ম সম্পাদক সন্তোষ সরকার বলেন, আমরা পুরসভা, পুলিসের অনুমোদন নিয়েই হাওড়া উৎসব করি। পরীক্ষার আগে মেলা শেষ হয়ে যায়। আর আমাদের মেলায় মাইক-টাইক বাজে না সেভাবে। তাঁর দাবি, ওখানকার ক্লাবের একটি শৌচালয় আমরা ব্যবহার করি। এছাড়া নিজেরা কিছু তৈরি করে নিই। পুরসভার লোক এসে রোজ আবর্জনা, বর্জ্য সাফ করে নিয়ে যায়। সেজন্য পুরসভাকে খরচ মিটিয়ে দিই। তবে মেলা চললে লোক তো একটু বেশি হবেই। কিন্তু যেখানে সেখানে মলমূত্র ত্যাগের অভিযোগ সত্যি নয়। রবিবার সাফাইকর্মীরা আসেন না বলে একটু সমস্যা হয়। সন্তোষবাবুর পাল্টা দাবি, আসলে ওই জায়গাটি সারা বছরই ভীষণ নোংরা থাকে। মেলার জন্য বরং আমরাই এলাকা পরিষ্কার করে দিই। এ বিষয়ে হাওড়া পুরসভার প্রশাসক বিজিন কৃষ্ণা বাসিন্দাদের যাবতীয় অভিযোগের কথা স্বীকার করে নেন। বলেন, আমরা মেলাটির দিকে নজর রাখব। যে যে শর্ত মেনে মেলা করতে বলা হয়েছে, তা মানা হচ্ছে কি না, সেটা যেমন দেখা হবে, তেমনই নতুন কোনও ব্যবস্থা নিয়ে বাসিন্দাদের সমস্যা মেটানো যায় কি না, তাও দেখা হবে। এ ব্যাপারে পুলিসের সঙ্গে তিনি আলোচনা করবেন বলে জানান।