কর্মক্ষেত্রে অশান্তির সম্ভাবনা। মাতৃস্থানীয় কার শরীর-স্বাস্থ্যের অবনতি। প্রেমে সফলতা। বাহন ক্রয়-বিক্রয়ের যোগ। সন্তানের বিদ্যাশিক্ষায় উন্নতি।প্রতিকার: ... বিশদ
শিয়ালদহে সব থেকে বেশি সমস্যায় পড়েন দূরপাল্লার ট্রেনের যাত্রীরা। লাগেজ নিয়ে প্রি-পেড ট্যাক্সি বুথের সামনে তাঁদের দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে দেখা গিয়েছে। কথা হচ্ছিল ৭৩ বছর বয়সি মদনমোহন বৈদ্যের সঙ্গে। তিনি বলেন, হাওড়ায় ছেলের কাছে যাব। কিন্তু ট্যাক্সি কোথায়? দেড় ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে ট্যাক্সির অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে রয়েছি। শিয়ালদহ স্টেশনে প্রি-পেড বুথে দুপুর সাড়ে ১২টার মধ্যেই সাধারণত ৩০০ থেকে ৩৫০ বুকিং হয়ে যায়। এদিন ওই সময়ে বুকিংয়ের সংখ্যা ২০০-ও ছুঁতে পারেনি। রাস্তায় ট্যাক্সির সংখ্যা কতটা কম ছিল, তা এই প্রি-পেড বুথের বুকিংয়ের হার থেকেই স্পষ্ট।
তবে, প্রি-পেড বুথে ট্যাক্সির সংখ্যা কম থাকলেও, স্টেশন চত্বরে বিভিন্ন জায়গায় বেশ কিছু ট্যাক্সিকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গিয়েছে। বেশি দরে যাত্রী তুলেছে ছুটেছে তারা। শিয়ালদহ থেকে হাওড়া স্টেশন পর্যন্ত প্রি-পেড ট্যাক্সিতে যেখানে ভাড়া ১১৭ টাকা, সেখানে বুথের বাইরে দাঁড়ানো ট্যাক্সিচালকরা যাত্রীদের থেকে ৩০০ টাকা ভাড়া চেয়েছেন অনায়াসে। শিয়ালদহ স্টেশন চত্বরে অ্যাপ নির্ভর লাক্সারি ট্যাক্সি সংস্থার একটি বুথ রয়েছে। সেই বুথও বেলার দিকে আর বুকিং নিতে চায়নি। বেলা ১টা নাগাদ বুথের এক কর্মী বলেন, রাস্তায় যানজটের জেরে গাড়ি স্টেশনে ঢুকতে অনেক দেরি হচ্ছে। তাই বুকিং নেওয়া আপাতত বন্ধ। বুথ ছেড়ে মোবাইলের অ্যাপ থেকে লাক্সারি ট্যাক্সি বুক করতে গিয়েও ভাড়ার বহর দেখে ভিমরি খাওয়ার অবস্থা হয়েছে বহু যাত্রীর। একই চিত্র দেখা গিয়েছে অটো স্ট্যান্ডেও। বেশ কিছু অটো আবার স্ট্যান্ডে না ঢুকে বেশি ভাড়ায় ‘রিজার্ভ’ গাড়ির মতো ছুটেছে রুটের তোয়াক্কা না করেই।
সন্ধ্যার দিকে রাস্তায় যানবাহনের সংখ্যা কমে যায় আরও। প্রায় একই দৃশ্য দেখা গিয়েছিল শুক্রবার রাতেও। সেদিন অবশ্য বাস মালিকদের একাংশ আশ্বাস দিয়েছিল, শহর-শহরতলির রুট থেকে সমাবেশের জন্য তুলনামূলকভাবে কম বাস উঠবে। কিন্তু যাত্রীদের এদিনের অভিজ্ঞতা অন্য কথা বলছে। এবারের সমাবেশে লোক আনার জন্য শ’দেড়েক সরকারি বাসও দেওয়া হয়েছিল। সরকারি নিগমগুলির কর্তাদের বক্তব্য, শনিবার যে সংখ্যক বাস চলে, তা সবই চালানো হয়েছে। যে বাসগুলি এইদিনে চালানো হয় না, তারই একাংশ ভাড়া দেওয়া হয়েছে। যানজটের কারণে সব সময় সূচি মেনে বাস চালানো হয়তো সম্ভব হয়নি। আবার ভিড় এড়াতে কিছু সরকারি বাসের রুটও ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
কিন্তু বেসরকারি বাসের সংখ্যা এতটা কম হল কেন? বাস মালিক সংগঠনগুলির নেতাদের বক্তব্য, বাসের সংখ্যা কমার পিছনে একাধিক কারণ রয়েছে। প্রথমত, সমাবেশের জন্য বহু বাস তোলা হয়েছিল। দ্বিতীয়ত, শ্রমিকদের একটা বড় অংশই সমাবেশে যাওয়ার জন্য অনেক বাস রুটে নামেনি। তৃতীয়ত, যেসব বাস সকালের দিকে বেরিয়েছিল, তার একাংশ যানজটের জেরে পরে রুট থেকে উঠে যায়। এসবের সার্বিক প্রভাবে বাসের সংখ্যা কমেছে শহর-শহরতলিতে।