আমাদের এই কাশ্মীরে গুলি-বোমার লড়াই লেগেই থাকে। বোমার আওয়াজই আমাদের সঙ্গী। কিন্তু বৃহস্পতিবার দুপুরে যে বিস্ফোরণের আওয়াজ ছিল, তা গত সাড়ে তিন দশকে অন্তত আমার কানে আসেনি। পুলওয়ামায় জম্মু-শ্রীনগর জাতীয় সড়কের উপরে যে ইম্প্রোভাইসড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) বিস্ফোরণ হয়, তার আওয়াজ ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে আমার শ্রীনগরের বদগাঁও জেলার বাড়িতেও এসে পৌঁছেছে সেই আওয়াজে ছিল, মারাত্মক তীব্রতা। যেন নড়েচড়ে উঠেছিল গোটা এলাকা। আবারও যে জঙ্গি হামলা হয়েছে, তা বুঝতে আমার অসুবিধা হয়নি। কিন্তু এত বড় যে হবে তা আঁচ করতে পারিনি। পেশা সাংবাদিকতা হওয়ায় ঘটনার খবর আসতে পাঁচ মিনিটও দেরি করেনি। ভয়ঙ্কর আওয়াজের জেরে গোটা এলাকার বাসিন্দারা রাস্তায় বেরিয়ে আসেন। প্রথমে কেউই বিস্ফোরণের আওয়াজ বুঝতে পারেননি। অনেকেই মনে করেছিলেন, ভূমিকম্পের মতো কিছু হয়েছে। কিন্তু পরে আমার মাধ্যমেই জঙ্গি হামলার খবর প্রত্যেকের কাছে পৌঁছয়।
ঘটনাস্থল থেকে শুধু আমার বাড়িতেই নয়, ৪০ কিলোমিটার পর্যন্ত এই আওয়াজের বিস্তৃতি ছিল। কারণ, আমার বাড়ি থেকে ১০-১৫ কিলোমিটার দূরে যে গ্রামগুলি রয়েছে, সেখান থেকেও আমাকে ফোন করে জানানো হয়, ওই এলাকাগুলিও কেঁপেছে। ইতিমধ্যেই পুরো পুলওয়ামা এবং শ্রীনগরে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়। সেনাবাহিনী এবং আধা সামরিক বাহিনীর দখলে গোটা এলাকা চলে যায়। এদিন বিস্ফোরণের আওয়াজের তীব্রতা শুনেই বোঝা গিয়েছিল, কয়েক’শো কেজির আইইডি ব্যবহৃত হয়েছে। তবে এত আধা সামরিক বাহিনীর মৃত্যু হবে তা দুঃস্বপ্নেও কেউ ভাবিনি। মেনে নিতে পারছি না। ভূস্বর্গের ইতিহাসেও আমার যতদূর মনে হয়, এত বড় বিস্ফোরণ আগে হয়নি।