বিদ্যায় সাফল্য ও হতাশা দুই-ই বর্তমান। নতুন প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠবে। মামলা-মোকদ্দমার কোনও পরিবেশ তৈরি ... বিশদ
দ্বারকা নদের পাশে তারা মায়ের প্রাচীন মন্দির। মন্দিরের গায়ে নিখুঁত টেরাকোটার কাজ। তবে পরিকাঠামো ঠিকমতো গড়ে না ওঠায় এই এলাকা ঘিঞ্জি হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে তারাপীঠ রামপুরহাট উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ মূল মন্দিরকে অক্ষত রেখে কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে এলাকা সাজিয়ে তোলার কাজ শুরু করেছে। প্রথম পর্যায়ের কাজ প্রায় শেষের দিকে। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে তারাপীঠ মন্দিরে পুজো দিতে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখানকার পরিবেশ ঘুরে দেখেন। তারপরই টিআরডিএ খোলামেলা পরিবেশ তৈরির উদ্যোগ নেয়।
টিআরডিএ অফিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ৩২৬০ বর্গফুট জায়গা নিয়ে তারাপীঠ মন্দির চত্বর। যার মধ্যে ৩৫০ বর্গফুট জায়গার মধ্যে মায়ের গর্ভগৃহ। গর্ভগৃহকে অক্ষত রেখে প্রথম পর্যায়ে খনন কার্য চালিয়ে ৫০ শতাংশ আন্ডারগ্রাউন্ডের কাজ শেষ হয়েছে। পশ্চিমদিকে মাটির তলায় ইতিমধ্যে ৭০ ফুট বাই ২৫ ফুটের একটি ভোগঘর নির্মাণের কাজ সম্পন্ন। ভোগঘরের পাশেই গড়ে উঠেছে ডাইনিং রুম। যেখানে প্রায় এক হাজার ভক্ত একসঙ্গে বসে ভোগ খেতে পারবেন। উপরের অংশটি চাতাল হিসাবে ব্যবহৃত হবে।
এবার দ্বিতীয় পর্যায়ে মন্দির চত্বরে আরও কাজ হবে। পূর্বদিকে ২৫০০ বর্গফুট আন্ডারগ্রাউন্ডের কাজ শীঘ্র শুরু করতে চলেছে টিআরডিএ। অন্যদিকে, মন্দির চত্বর পরিবেশ বান্ধব করে তুলতে ‘সোলার স্টিম কুকিং সিস্টেম’ বসেছে। কিন্তু সেখানে ভাজা জাতীয় রান্নার ব্যবস্থা না থাকায় মন্দিরে সেবাইতদের একাংশ ক্ষোভ প্রকাশ করেন। যদিও দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজে ভোগঘরে ধোঁয়াবিহীন চুল্লি বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যার জন্য সাত লক্ষ টাকা ব্যয় হবে। সেখানে সবকিছু রান্নার ব্যবস্থা থাকবে। এছাড়া, দ্বারকা নদের ধারে পুণ্যার্থীদের মনোরঞ্জনের জন্য ১৭৫ মিটার জায়গা সৌন্দর্যায়ন করা হয়েছে। দ্বারকার পাড়ে গড়ে উঠেছে একাধিক বসার জায়গা। সেখানে টয়লেট ছাড়াও থাকবে রেস্টুরেন্ট। সেখানেও সৌন্দার্যায়ন হবে। এদিকে, শববাহী যাত্রীদের জন্য বামদেব ঘাটের কাছে পৃথক ফুটব্রিজ নির্মাণের কাজও প্রায় শেষের দিকে। যানজট সমস্যা সমাধানে হয়েছে ফোরলেনের রাস্তা। দ্বারকার উপরে দু’টি জায়গায় বিশ্ববাংলা ঘাট ও ঘর নির্মাণ করা হয়েছে।
দ্বিতীয় পর্যায়ে কাজের জন্য দিন কয়েক আগে একটি বৈঠক হয়। বৈঠকে তারাপীঠ সহ টিআরডিএ এলাকা উন্নয়নের জন্য আরও ৪১টি পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। যার জন্য ৩৯ কোটি ৬৭ লক্ষ টাকা বাজেট বরাদ্দ হয়েছে। তাতে রয়েছে আন্ডারগ্রাউন্ডের সৌন্দার্যায়ন। তারাপীঠ থানার সামনে কর্মতীর্থ সম্প্রসারণ। গোটা তারাপীঠজুড়ে সৌন্দর্যায়নের কাজ হবে। পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করা হবে। সাহাপুর ও কুসুম্বা অঞ্চলে ১৪টি সাবমার্সিবল সহ পানীয় জল প্রকল্প হবে। দেখুরিয়া গ্রাম হয়ে মাড়গ্রাম পর্যন্ত পিচের রাস্তা, কাবিলপুর গ্রামে পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পষর্দের টাকায় রাস্তার কাজ হবে। রামপুরহাটের ছফুঁকো হয়ে বাইপাস রাস্তা সহ অন্যান্য একাধিক রাস্তা সংস্কার করা হবে। নিকাশি ও পানীয় জলের সম্প্রসারণ ও সংরক্ষণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এছাড়া, ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে চার্চের সৌন্দর্যায়ন ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডে জানাজার নামাজ পড়ার জন্য শেড তৈরি করা হবে। মন্ত্রী বলেন, টিআরডিএ এলাকার ব্যাপক উন্নয়নের জন্য বেশ কিছু কাজ অনুমোদন পেয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী যেমন কালীঘাট, দক্ষিণেশ্বর, পাথরচাপুড়ি, বক্রেশ্বর সহ একাধিক জায়গায় উন্নয়ন করে চলেছেন। তেমনই তারাপীঠেও উন্নয়ন করছেন। তিনি বলেন, তারাপীঠে পৃথক সাবস্টেশন হবে। এসবিএসটিসির টিকিট কাউন্টারও খোলা হবে। মন্দির কমিটির সভাপতি তারাময় মুখোপাধ্যায় বলেন, তারাপীঠকে আন্তর্জাতিক মানের তীর্থক্ষেত্র হিসেবে গড়ে তুলতে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে টিআরডিএ ধারাবাহিকভাবে উন্নয়নমূলক কাজ করে চলেছে।