বিদ্যার্থীদের ক্ষেত্রে ভাবনা-চিন্তা করে বিষয় নির্বাচন করলে ভালো হবে। প্রেম-প্রণয়ে বাধাবিঘ্ন থাকবে। কারও সঙ্গে মতবিরোধ ... বিশদ
এখানে বিজেপি কতটা শক্তিশালী, তা একটা পরিসংখ্যানেই স্পষ্ট। পাটনা সাহিবে বিধানসভা কেন্দ্র মোট ছ’টি। এই ছ’টির মধ্যে একমাত্র ফাতুহা কেন্দ্রটি ছাড়া প্রতিটিতেই ফুটে রয়েছে পদ্মফুল। ফাতুয়ার বিধায়ক লালুপ্রসাদের আরজেডির। যারা এনডিএ বিরোধী মহাজোটের অন্যতম শরিকও বটে। শত্রুঘ্ন নিজে কিন্তু এখানকার বিদায়ী সাংসদ। গত ২০১৪ সালে বিজেপির টিকিটে তিনি ২ লক্ষ ৬৫ হাজার ৮০৫ ভোটে হারিয়েছিলেন নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী তথা আরজেডি সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী কুনাল সিংকে। সেবার নীতীশ কুমারের জেডিইউ আলাদা প্রার্থী দিয়েছিল। এবারে তারা এনডিএর শরিক। সোজা সাপটা হিসেবে গত লোকসভা ভোটে জেডিইউয়ের প্রার্থী যে ৯১ হাজার ভোট পেয়েছিলেন, তা এবার পুরোটাই গেরুয়া শিবিরে যাওয়া উচিত।
যদিও অঙ্কটা এত সহজ না। কেন? সংগঠন শক্তিশালী হতে পারে, কিন্তু সমস্যার কথা শোনা যাচ্ছে এলাকায় কান পাতলেই। প্রথমত, এবারই প্রথম নির্বাচনে লড়ছেন রাজ্যসভার এমপি রবিশঙ্কর প্রসাদ। আর তারপর থেকেই অন্দরের গোষ্ঠীকোন্দল নেমে এসেছে রাস্তায়। নাম ঘোষণার পর রবিশঙ্কর পাটনায় আসতেই বিমানবন্দরে তাঁর সমর্থকদের সঙ্গে বিজেপির রাজ্যসভার এমপি আর কে সিনহার সমর্থকদের মধ্যে গণ্ডগোল বেধে যায়। যার খবর চাপা থাকেনি। প্রার্থী তালিকা ঘোষণার আগে এই কেন্দ্র থেকে বিজেপির প্রার্থী হিসেবে আর কে সিনহার নামও উঠে এসেছিল। আশায় ছিলেন তাঁর সমর্থকরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে ড্যামেজ কন্ট্রোল করতে আসরে নামতে হয়েছে আরএসএসকে। ক্ষয়ক্ষতি অনেকটাই মেরামত করা গিয়েছে বলে দাবি করছেন দলের কর্তারা।
তবে বিহারী বাবুর ব্যক্তিগত ক্যারিশমার মোকাবিলায় এই কেন্দ্রে সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ইমেজকেই ব্যবহার করছে পদ্মফুল শিবির। প্রচারে বলা হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দুর্বল কাউকে চান? নাকি নরেন্দ্র মোদিকে? বিজেপির প্রচার গাড়িতে শোভা পাচ্ছে প্রার্থীর থেকেও বেশি বড় সাইজের নরেন্দ্র মোদির মুখ। এই কৌশল যে ফল দিচ্ছে, তাও টের পাওয়া যাচ্ছে পাটনার পথঘাটে। পাটনা জংশন স্টেশনের বাইরে যাত্রীর আশায় অপেক্ষা করছিলেন বেশ কিছু অটোচালক। এবারের ভোটে জিতবে কে? রবিশঙ্কর না শত্রুঘ্ন সিনহা? প্রশ্ন করতেই কয়েকজন বলে দিলেন, ‘এঁরা কেউ নন। জিতবেন মোদি!’ কয়েকজন আবার বিহারীবাবুর কথাও বললেন। সদাকত আশ্রমে প্রদেশ কংগ্রেসের দলীয় কার্যালয়ে কথা হচ্ছিল প্রদেশ কমিটির মিডিয়া বিভাগের চেয়ারম্যান এইচ কে ভার্মার সঙ্গে। শত্রুঘ্ন সিনহা প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, শত্রুঘ্ন সিনহা একজন জাতীয় চরিত্র। বড় মাপের অভিনেতা। এই কেন্দ্রের দু’বারের এমপি। তাঁর রাজনৈতিক কেরিয়ারে কোনও দাগ নেই। কাজেই তাঁর নিজস্ব একটা বড় প্রভাব রয়েছে এলাকায়। তবে এখানে কংগ্রেসের সংগঠনও মজবুত।
আর বিজেপির সংগঠন? রবিবার সকাল থেকে বিজেপি’র রাজ্য দপ্তরে ‘ইলেকশন সেল’-এ বসে অন্যদের সঙ্গে ষষ্ঠ দফার ভোটের উপরে নজর রাখছিলেন ইলেকশন সেলের কো-কনভেনর রাধিকা রমন। পাটনা সহিবের ভোটের কথা পাড়তেই তিনি বলেন, ‘নিজের ক্ষমতায় নয়, শত্রুঘ্ন সিনহা দু’বার এমপি হয়েছেন এখানে বিজেপির সংগঠনের উপরে ভর করে। এবারও বিজেপি প্রার্থীই জিতবেন সংগঠনের জোরে। শুধু ভোটের সময় নয়, এখানে গোটা বছরই সক্রিয় থাকে সংগঠন।’ আর গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব? তাঁর বক্তব্য, কোনও ‘এমপি ভোটে কাজ করল কি না, সেটা ফ্যাক্টর নয়। কর্মীরা ভোটে নেমেছেন। কাজ করছেন। ভোটে তার ফল মিলবে।’ এবার দেখার শেষ বাজি কার হয়। সংগঠন? নাকি বিহারী বাবুর ব্যক্তিগত ক্যারিশমা। দেশের নজর কিন্তু এই হাইপ্রোফাইল কেন্দ্রেই।