বিতর্ক বিবাদ এড়িয়ে চলা প্রয়োজন। প্রেম পরিণয়ে মানসিক স্থিরতা নষ্ট। নানা উপায়ে অর্থ উপার্জনের সুযোগ। ... বিশদ
স্থানীয় ও বনদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে মেদিনীপুরের কনকাবতী, মণিদহ হয়ে কংসাবতী নদী পেরিয়ে হাতির দলটি চুবকা গ্রাম পঞ্চায়েতের পাকুড়িয়াপাল গ্রামে ঢুকে পড়ে। পাকুড়িয়াপাল গ্রামের বাসিন্দারা হাতিদের তাড়া করায় দলটি ছোট ছোট ভাগে ভাগ হয়ে আমদই, রাঙড়াকোলা, ভিড়িংপুর, এই তিনটি গ্রামে ঢুকে পড়ে। আমদই গ্রামের মধু দোলই, অক্ষয় দোলই, জিতেন দোলাই, বাচ্চু দোলই সহ ছ’জনের মাটির বাড়ি ভেঙে দেয়। আবার রাঙড়াকোলা, ভিড়িংপুর গ্রামের আলুচাষের জমি তছনছ করে দেয়। আলুচাষি হরিপদ গোড়াই, প্রদীপ মাইতি, রতন সামন্ত বলেন, এবছর আলুর ফলন ভালো হয়েছে। আলু বাড়তে শুরু করেছে। আর কিছুদিন পরই তা তোলা হতো। কিন্তু, হাতির দলটি সব নষ্ট করে দিয়েছে। প্রায় ২০ বিঘা আলুর জমি তছনছ করে দিয়েছে।
ভিড়িংপুর গ্রামের জন্মেজয় নায়েক, অজিত সামন্ত, মঙ্গল সিংয়ের বাড়ির ভিতরে রাখা সমস্ত ধান হাতি খেয়ে নিয়েছে। তবে বাড়ির কোনও ক্ষতি করেনি। হতির উৎপাতে গত কয়েকদিন ধরে ঘুম ছুটে গিয়েছে বাসিন্দাদের। রাতের পর রাত বাসিন্দারা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। স্থানীয় বাসিন্দা জয়ন্ত ঘোড়াই, অরুণ সিং, প্রবীর সিং বলেন, সারারাত ধরে হাতি গ্রামে তাণ্ডব চালাচ্ছে। হাতির হুঙ্কার ও গর্জনে মানুষজন ভয়ে ঘুমোতে পারছে না। প্রতিদিনই রাত জেগে বসে থাকতে হচ্ছে। আমরা একশোজন মিলে হাতিগুলি প্রতিরোধের ব্যবস্থা করেছিলাম। কিন্তু, হাতি পালকে প্রতিরোধ করা যাচ্ছে না। অবিলম্বে দলটিকে অন্যত্র সরাতে হবে।
বনদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত কয়েকদিনে হাতির দলটি মানিকপাড়া রেঞ্জের আমদই গ্রামে ১২টি, বেধাকলায় ১৬টি, চিতলবনীতে ৭টি, সাতবল্লায় ৯টি, দণ্ডেশ্বরপুর গ্রামে ৩টি বাড়ি ভেঙেছে। পাঁচ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট করেছে হাতি। গত সপ্তাহে চুবকা গ্রাম পঞ্চায়েতের চিতলবনী, গুড়েডাঙা, প্রহরাজপুর, দেওয়ানচক, ঘোড়াজাগির, ভাউদি, দণ্ডেশ্বরপুর, শ্যামকিশোরপুর, এই আটটি গ্রামে ব্যাপক ক্ষতি করে হাতির দল। হাতি তাড়াতে রাতপাহারা দেওয়া শুরু করেছেন গ্রমাবাসীরা।
বনদপ্তরের এক আধিকারিকের বক্তব্য, নদীর এপারে চুবকা গ্রাম পঞ্চায়েতের বিভিন্ন গ্রামজুড়ে বিস্তীর্ণ চাষজমি রয়েছে। জমিতে এখন ফসল রয়েছে। এছাড়াও গ্রামের বাড়িগুলির মধ্যে ধান মজুত রয়েছে। জলাশয়ে জলও রয়েছে। মূলত খাবার ও জলের টানেই নদী পেরিয়ে হাতি এপাশে চলে আসছে। আবার খাবার খেয়ে সকালে ফের নদীর ওপারে চলে যাচ্ছে।
এদিন বিট অফিসার বিদ্যুৎ গোস্বামী ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িগুলি পরিদর্শনে যান। গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথাও বলেন। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষজন ও চাষিদের ফর্মফিলাপ করে জমা দিতে বলেন বনদপ্তরের আধিকারিকরা। ঝাড়গ্রামের ডিএফও বাসবরাজ হেলোইচ্চি বলেন, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ খতিয়ে দেখে ক্ষতিগ্রস্তদের শীঘ্রই ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। নদীর ওপার থেকে হাতি ঢুকে এপারে ক্ষতি করে চলে যাচ্ছে। ওই গ্রামগুলিকে রক্ষা করার জন্য বনদপ্তরের টিম পাঠানো হচ্ছে।