বিতর্ক বিবাদ এড়িয়ে চলা প্রয়োজন। প্রেম পরিণয়ে মানসিক স্থিরতা নষ্ট। নানা উপায়ে অর্থ উপার্জনের সুযোগ। ... বিশদ
নবদ্বীপ-কৃষ্ণনগর রাজ্য সড়কের বেহাল দশা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই ক্ষুব্ধ এলাকার মানুষ। রাস্তার বেশিরভাগ অংশে পিচের আস্তরণ নেই বললেই চলে। নবদ্বীপ ও বর্ধমানের অন্যতম সংযোগকারী রাস্তা এটি। ফলে স্থানীয় এলাকাবাসী ছাড়াও প্রতিদিন দুই জেলার কয়েক হাজার নিত্যযাত্রী এই পথে যাতায়াত করেন। এলাকাবাসী ও নিত্যযাত্রীদের অভিযোগ, রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় গর্ত বোজানোর জন্য প্রশাসন ইট পেতে আংশিক মেরামত করেছে। কিন্তু, সেই ইট সমানভাবে না বসানোয় দুর্ভোগ আরও বেড়েছে। এমনকী এই রাস্তার বেশ কয়েক জায়গায় হাম্প করার ফলে যাতায়াতে ব্যাপক সমস্যা হচ্ছে। এর সঙ্গে গৌরনগর থেকে মুকুন্দপুর পর্যন্ত প্রায় দু’কিলোমিটার এলাকায় রাস্তার দু’ধারে লরি পার্কিংয়ের ফলে যানজটের সমস্যা রয়েছে। এই রাস্তার সংস্কার ও যানজটমুক্ত করার দাবিতে সরব হয়েছেন এলাকার বাসিন্দা ও নিত্যযাত্রীরা।
জেলা শহর কৃষ্ণনগরে জেলাশাসকের অফিস, মহকুমা অফিস, জেলা আদালত, জেলা হাসপাতাল সহ প্রশাসনিক প্রায় সব দপ্তরই অবস্থিত। ফলে প্রশাসনিক সহ বিভিন্ন কাজে প্রতিনিয়ত নবদ্বীপ সহ পার্শ্ববর্তী অঞ্চল ও অন্য জেলার মানুষজনকে কৃষ্ণনগরের সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র ভরসা এই রাস্তা। রাস্তার বেশিরভাগ অংশে পিচ উঠে গিয়েছে। রাস্তার গর্তে অসমানভাবে ইট বসানোয় রাস্তা উঁচুনিচু হয়ে গিয়েছে। ফলে মাঝেমধ্যে দুর্ঘটনা ঘটছে। ইতিমধ্যে বাইক দুর্ঘটনায় বেশ কয়েকটি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া বেহাল রাস্তায় চলাচল করতে গিয়ে যানবাহনও খারাপ হয়ে যাচ্ছে। তবুও এ ব্যাপারে পূর্ত দপ্তরের কোনও নজরদারি নেই বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ। নিত্যযাত্রীরা অভিযোগ করেন, এই গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটি রাজ্য সরকারের পূর্ত দপ্তরের অধীনে। তাদের বেশ কিছু আধিকারিক এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করেন। রাস্তার বেহাল দশা দেখেও তাঁদেরও কোনও হেলদোল নেই। কোনও ব্যবস্থা নেননি। শুধু মাঝেমধ্যে ইট ফেলে মেরামত করে দায় সারা হচ্ছে। অবশেষে বুধবারের ঘোষণায় আশায় বুক বেঁধেছেন নিত্যযাত্রী থেকে স্থানীয় বাসিন্দারা। দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ এবার লাঘব হবে বলে আশা করছেন তাঁরা।
পেশায় বাসচালক সুমন মণ্ডল বলেন, ঝুঁকি নিয়ে এই রাস্তা দিয়ে গাড়ি নিয়ে যেতে হয়। গাড়ির যন্ত্রাংশ খারাপ হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি রাস্তায় একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটে চলেছে। খারাপ রাস্তায় যাতায়াতের ফলে বাসের পিছনে বসা যাত্রীদের কোমরে আঘাত লাগে। এবার হয়তো শান্তিতে বাস চালানো যাবে, যাত্রীরাও স্বস্তি পাবেন।
কৃষ্ণনগর থেকে প্রতিদিন নবদ্বীপের বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতে আসেন গয়ানাথ ঘোষ । তিনি বলেন, কৃষ্ণনগর থেকে বাইকে করে রোজ নবদ্বীপে আসতে হয়। নৃসিংহদেবতলা থেকে নবদ্বীপ ব্রিজ পর্যন্ত প্রায় আট কিলোমিটার রাজ্য সড়কের অবস্থা এতটাই বেহাল যে, ভীষণ অসুবিধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। মাঝেমধ্যেই দুর্ঘটনা ঘটছে। রাস্তার বেশিরভাগ অংশে পিচের প্রলেপ উঠে গিয়েছে। খান-খন্দগুলিতে ইটের টুকরো দেওয়ার ফলে জায়গাগুলো উঁচু নিচু হয়ে যাওয়ায় পথচারী, সাইকেল আরোহী সহ সকলকেই নাকাল হতে হচ্ছে। এর সঙ্গে রয়েছে গৌরনগর থেকে মুকুন্দপুর পর্যন্ত প্রায় দু’কিলোমিটার পর্যন্ত রাস্তার দুই ধারে লরি পার্কিং। এর ফলে তীব্র যানজট হচ্ছে। নিত্যযাত্রীরা বলেন, নবদ্বীপ ধাম রেলগেট থেকে কৃষ্ণনগর পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার রাজ্য সড়ক চওড়া হলে রাস্তায় যানজট ও পার্কিং সমস্যার সমাধান হবে।