সোমবার, 28 এপ্রিল 2025
Logo
  • সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫

পিএনবি দুর্নীতি: বেলজিয়ামে গ্রেপ্তার মেহুল চোকসি, প্রত্যর্পণের চেষ্টা শুরু

 ধরা পড়লেন পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের (পিএনবি) আর্থিক তছরুপ মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত মেহুল চোকসি। গীতাঞ্জলি গোষ্ঠীর কর্ণধারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বেলজিয়ামে। 

পিএনবি দুর্নীতি: বেলজিয়ামে গ্রেপ্তার মেহুল চোকসি, প্রত্যর্পণের চেষ্টা শুরু

নয়াদিল্লি: ধরা পড়লেন পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের (পিএনবি) আর্থিক তছরুপ মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত মেহুল চোকসি। গীতাঞ্জলি গোষ্ঠীর কর্ণধারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বেলজিয়ামে। সূত্রের খবর, ভারত সরকারের অনুরোধেই সেদেশের পুলিস এই পদক্ষেপ নিয়েছে। ৬৫ বছর বয়সি এই পলাতক হীরে ব্যবসায়ী সাত বছরেরও বেশি সময় ধরে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। পিএনবির ১৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা তছরুপের অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। তাঁকে গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনতে কম চেষ্টা করেনি সিবিআই-ইডি। তিন-তিনটি দেশে একাধিক ব্যর্থতার পর অবশেষে মিলল সাফল্য। চিকিৎসার জন্য সুইজারল্যান্ডে যাওয়ার আগেই চোকসিকে গ্রেপ্তার করে বেলজিয়াম পুলিস। আপাতত বেলজিয়ামের জেলে রয়েছেন তিনি।
সূত্রের খবর, কিছুদিন আগেই এই পলাতক হীরে ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের জারি করা রেড কর্নার নোটিস সরিয়ে নেওয়া হয়। তার পরেই মেহুলের প্রত্যর্পণে তৎপর হন কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা। মুম্বইয়ের আদালত তাঁর বিরুদ্ধে ২০১৮ ও ২০২১ সালে দু’টি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিল। চোকসিকে প্রত্যর্পণের জন্য সেই পরোয়ানার নোটিস বেলজিয়াম পুলিসকে পাঠায় ভারত। তার ভিত্তিতেই এই গ্রেপ্তারি। যদিও শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে চোকসির জামিনের আবেদন করার কথা জানিয়েছেন তাঁর আইনজীবী বিজয় আগরওয়াল। ভারতে প্রত্যর্পণের বিরোধিতায় বেলজিয়ামের আদালতে সওয়ালও করবেন তিনি। বিজয় বলেন, ‘আমার মক্কেল কোথাও পালিয়ে যাবেন, এমন সম্ভাবনা নেই। তিনি অত্যন্ত অসুস্থ। তাঁর ক্যান্সারের চিকিৎসা চলছে।’ গোটা বিষয়টির নেপথ্যে ‘রাজনীতি’ রয়েছে বলেও এদিন দিল্লিতে দাবি করেন তিনি।
২০১৮ সালে ভাইপো নীরব মোদি, তাঁর স্ত্রী অ্যামি মোদি ও নীরবের ভাই নিশাল মোদিকে নিয়ে দেশ ছাড়েন চোকসি। তার কয়েক দিন পরেই পিএনবির বিপুল অর্থ তছরুপের বিষয়টি সামনে আসে। ততক্ষণে অবশ্য বিনিয়োগের মাধ্যমে অ্যান্টিগায় নাগরিকত্ব নিয়ে ফেলেছেন গীতাঞ্জলি গোষ্ঠীর কর্ণধার। ২০২১ সালে ডমিনিক রিপাবলিকে অনুপ্রবেশের অভিযোগে গ্রেপ্তার হন তিনি। ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের ওই রাষ্ট্রে ছুটে যায় সিবিআইয়ের একটি দল। যদিও দেশে ফেরানো যায়নি পলাতক এই হীরে ব্যবসায়ীকে। ডমিনিকের আদালতে তাঁর আইনজীবী জানান, চিকিৎসার কারণে অ্যান্টিগায় যেতে হবে চোকসিকে। ফিরে এসে আবার শুনানিতে হাজির হবেন তাঁর মক্কেল। ৫১ দিন কারাবাসের পর তিনি মুক্তি পেলেও প্রত্যর্পণ করা যায়নি। অনুপ্রবেশের মামলা থেকেও তিনি রেহাই পান। এরপর বেলজিয়ান স্ত্রী প্রীতি চোকসির সুবাদে ২০২৩ সালের নভেম্বর মাস থেকে ‘এফ রেসিডেন্সি কার্ড’ জোগাড় করে বেলজিয়ামে থাকতে শুরু করেন। সেই খবর সামনে আসতেই ফের তৎপর হয় ইডি-সিবিআই। এর মধ্যেই দ্বৈত নাগরিকত্ব সহ সমস্ত পরিচয় গোপন করে ‘এফ প্লাস’ কার্ডের জন্য আবেদন জানান চোকসি। একবার এই কার্ড মিললে তাঁকে দেশে ফেরানো আরও কঠিন হবে বুঝতে পেরে আর দেরি করেননি তদন্তকারীরা। বেলজিয়াম সরকারকে পাঠানো হয় গোটা মামলার সমস্ত নথি। তারপরেই টনক নড়ে সেদেশের প্রশাসনেক। আটকে যায় গোটা প্রক্রিয়া।
সূত্রের খবর, বেলজিয়াম নিরাপদ ঠাঁই নয় আন্দাজ করেই নতুন ফন্দি আঁটেন ধুরন্ধর এই ব্যবসায়ী। ক্যান্সার চিকিৎসার কারণে সুইজারল্যান্ডে যাওয়ার প্রস্তুতি শুরু করেন। পরিকল্পনা ছিল, সেদেশের হিরসল্যান্ডেন ক্লিনিক আরাওতে চিকিৎসা করানোর। সব প্রস্তুতি প্রায় সারা। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। তার আগেই আন্টওয়ার্প শহরে তাঁকে গ্রেপ্তার করে বেলজিয়াম পুলিস।