সোমবার, 19 মে 2025
Logo
  • সোমবার, ১৯ মে ২০২৫

কাশ্মীর ছাড়ার হিড়িক, বিমান ভাড়া ৮১ হাজার

শ্রীনগর থেকে কলকাতা (ভায়া মুম্বই)- ৮১ হাজার ৪৩৮ টাকা।শ্রীনগর থেকে কলকাতা (টু স্টপ) – ৭৩ হাজার ৫৫৫ টাকা।শ্রীনগর থেকে নয়াদিল্লি (ওয়ান স্টপ) – ৬৫ হাজার ৬৪ টাকা। 

কাশ্মীর ছাড়ার হিড়িক, বিমান ভাড়া ৮১ হাজার

বিশেষ সংবাদদাতা, শ্রীনগর: শ্রীনগর থেকে কলকাতা (ভায়া মুম্বই)- ৮১ হাজার ৪৩৮ টাকা।শ্রীনগর থেকে কলকাতা (টু স্টপ) – ৭৩ হাজার ৫৫৫ টাকা।শ্রীনগর থেকে নয়াদিল্লি (ওয়ান স্টপ) – ৬৫ হাজার ৬৪ টাকা। পহেলগাঁওতে জঙ্গি হামলার পরেই কাশ্মীর ছাড়ার হিড়িক পর্যটকদের মধ্যে। বুধবার সকালে মাত্র ছ’ঘণ্টায় শ্রীনগর থেকে বিমান ধরেছেন তিন হাজারেরও বেশি মানুষ। যেভাবেই হোক বাড়ি ফিরতে চাইছেন সকলে। পর্যটকদের সেই উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা ও আতঙ্কের ‘সুযোগে’ বিমান ভাড়া একধাক্কায় আকাশ ছুঁয়েছে। জঙ্গি হামলার পর বিমানের ‘ভাড়া-সন্ত্রাস’ নিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন বাড়ি ফিরতে উদগ্রীব পর্যটকরা। সোশ্যাল মিডিয়ায় শুরু হয়ে যায় কটাক্ষের ঝড়। তার জেরে শেষপর্যন্ত ড্যামেজ কন্ট্রোলে নামতে বাধ্য হয় অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রক। মন্ত্রী রামমোহন নাইডু স্পষ্ট জানিয়ে দেন, কোনও বাড়তি ভাড়া নেওয়া চলবে না। সরকার পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে। ভাড়া সাধ্যের মধ্যেই রাখতে হবে।
কেন্দ্রের এহেন কড়া অবস্থানের পর টিকিটের দাম অবশ্য কিছুটা কমে। সেটাও অবশ্য আম আদমির ধরাছোঁয়ার বাইরেই। যদিও যাত্রীদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছে এয়ার ইন্ডিয়া, ইন্ডিগো, স্পাইসজেটের মতো একাধিক বিমান পরিবহণকারী সংস্থা। তারা জানিয়েছে, ২২ এপ্রিল বা তার আগে যারা শ্রীনগরের যাওয়া-আসার টিকিট কেটেছেন, তাঁরা ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত টিকিট বাতিল বা রিশিডিউলের ক্ষেত্রে ছাড় পাবেন। এজন্য বাড়তি কোনও টাকা কাটা হবে না। এই ঘোষণার আগে থেকেই যাত্রীদের অনুরোধের পাহাড় জমতে শুরু করে বিমান সংস্থাগুলির দপ্তরে। একাধিক দেশিয় বিমান পরিবহণকারী সংস্থা সূত্রে খবর, এই সময়ে প্রতি সপ্তাহে ৬০-৭০ হাজার যাত্রী শ্রীনগরে আসেন। কিন্তু, পহেলগাঁওতে জঙ্গি হামলার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অন্তত ১৫ হাজার টিকিট বাতিল বা রিশিডিউলের আবেদন জমা পড়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে যাত্রীদের সহযোগিতা করতে বিশেষ হেল্পলাইন নম্বরও চালু করেছে বিমান সংস্থাগুলিকে। 
হোটেল সংগঠনের চেয়ারম্যান মুস্তাক সায়ার দাবি, পহেলগাঁও বাদে বাকি কাশ্মীরে এই মুহূর্তে প্রায় ৬০ হাজারের বেশি পর্যটক রয়েছেন। সকলেই আতঙ্কে রয়েছেন। সরকারি সূত্রে খবর, বুধবার সকাল ৬ টা থেকে বেলা পর্যন্ত ১২ ঘণ্টায় ৩ হাজার ৩৩৭ জন যাত্রী শ্রীনগর থেকে বিমান ধরেছেন। অপেক্ষায় বসে রয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ। টুরিস্ট রিসেপশন সেন্টারেও দীর্ঘলাইন। বিমানবন্দরের বাইরেও সারি সারি গাড়ি। সেখানেই দাঁড়িয়ে ছিলেন গুজরাতের বাসিন্দা সুনীল মেহতা। তিনি বলেন, ‘গত সোমবার শ্রীনগর এসেছিলাম। আরও দিন তিনেক থাকার কথা ছিল। কিন্তু, কালকের ঘটনার পর গোটা পরিবার আতঙ্কে রয়েছে। আমরা আজই বাড়ি ফিরে যাচ্ছি।’ ওয়েবসাইটে আকাশছোঁয়া ভাড়া দেখে অনেকেই আর বিমানবন্দরের দিকে এগননি। বদলে  ব্যাগ-পত্তর গুটিয়ে ট্রেন, বাস, ব্যক্তিগত বা ভাড়ার গাড়িতে বাড়ির পথ ধরেছেন। 
চিন্তায় ঘুম ছুটেছে ট্রাভেল এজেন্টদের। প্রবীণ ট্রাভেল এজেন্ট ফারুক আহমেদ কুট্টু বলেন, ‘প্রচুর পর্যটক ট্যুর কাটছাঁট করে নিজের রাজ্যে ফিরে যাচ্ছেন। বহু মানুষ বুকিং বাতিল করে দিচ্ছেন। জানি না, আগামী দিনে কী হবে!’ তবে দু’জন এমন পর্যটককেও পাওয়া গিয়েছে, যারা এই পরিস্থিতিতেও কাশ্মীর ঘুরতে চান। কাশ্মীরিদের উপর তাঁদের আস্থা অটুট!