অ্যাডিলেড: আড়াই দিনও গড়াল না গোলাপি টেস্ট। তার আগেই রোহিত ব্রিগেডের কান মুলে দশ উইকেটে জয় ছিনিয়ে নিল অস্ট্রেলিয়া। রবিবার হাসতে হাসতে দ্বিতীয় টেস্ট পকেটে পুরল প্যাট কামিন্সের দল। পাঁচ ম্যাচের বর্ডার-গাভাসকর ট্রফি আপাতত ১-১। সিরিজের তৃতীয় টেস্ট ব্রিসবেনে শুরু ১৪ ডিসেম্বর।
এদিন ২৯ রানের ঘাটতি নিয়ে শুরু করেছিলেন ঋষভ পন্থ ও নীতীশ রেড্ডি। দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া অবস্থাতেও তাঁদের কাছে বড় জুটির আশা নিয়ে গ্যালারিতে ভিড় জমিয়েছিলেন সমর্থকরা। লড়াকু পুঁজির জন্য পন্থের ধুমধাড়াক্কার উপর ভরসা রেখেছিল ভারতীয় শিবিরও। কিন্তু দিনের পয়লা ওভারেই মিচেল স্টার্কের বেরিয়ে যাওয়া ডেলিভারিতে খোঁচা দেন পন্থ। ভারতীয় ইনিংসে কোনও রান যোগ হওয়ার আগেই ড্রেসিং-রুমে ফিরতে হয় তাঁকে। তাতেই স্পষ্ট হয়ে যায় যে, দ্রুত যবনিকা পড়তে চলেছে পিঙ্ক বল টেস্টে। ভারত কি অস্ট্রেলিয়াকে ফের ব্যাট করতে নামাতে পারবে, আগ্রহের বিষয়বস্তু হয়ে ওঠে সেটাই।
এরপর শুরু হয় বাউন্সার থিওরি। অজি ক্যাপ্টেন প্যাট কামিন্স একের পর এক বাউন্সারের গোলা ছুড়তে থাকেন। তাতেই বশ মানেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন, হর্ষিত রানা। লজ্জার ইনিংস হারের খাঁড়া তখন মাথার উপর ঝুলছে। নীতীশের ব্যাটে অবশ্য তা এড়াতে সক্ষম হয় ভারত। তবে তিনিও কিছুক্ষণের মধ্যেই কামিন্সের পঞ্চম শিকারে পরিণত হন। এবারও ঘাতক সেই শর্টপিচ ডেলিভারি। এই নিয়ে টেস্টে ১২বার পাঁচ উইকেট নিলেন অজি অধিনায়ক। সিরাজ চালাচ্ছিলেন সব বলেই। আর তাতেই বোল্যান্ডকে উইকেট দেন।
জেতার জন্য মাত্র ১৯ রান দরকার ছিল অস্ট্রেলিয়ার। ম্যাকসুইনি, খাওয়াজা সময় নষ্ট করেননি। চার ওভারের মধ্যেই লক্ষ্যে পৌঁছান তাঁরা। নিছক হার নয়, ভারতের কাছে এই পরাজয় হয়ে উঠছে প্রবল আত্মসমীক্ষার বিষয়। ব্যাটসম্যানরা বারবার প্রথম ইনিংসে মুখ থুবড়ে পড়ছেন। এমনকী, গত চার টেস্টের পয়লা ইনিংসে একবারও দুশো পেরোয়নি টিম ইন্ডিয়া। অধিনায়ক রোহিত থেকে বিরাট কোহলি, প্রতিকূল পরিস্থিতিতে ক্রমাগত ব্যর্থ হচ্ছেন দুই মহাতারকা। পাশাপাশি, অত্যাধিক বুমরাহ নির্ভরতাও ভাইরাসের মতো ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে। বাকি বোলারদেরও তো দায়িত্ব নেওয়া উচিত। ক্যাচ পড়া কিংবা নেতৃত্ব নিয়েও থাকছে প্রশ্ন। যাবতীয় দুর্বলতা মেরামত করে তৃতীয় টেস্টে ঝাঁপানোর জন্য হাতে দিন সাতেকও সময়ও নেই!
স্কোরবোর্ড: ভারত প্রথম ইনিংস ১৮০। অস্ট্রেলিয়া প্রথম ইনিংস ৩৩৭। ভারত দ্বিতীয় ইনিংস (১২৮-৫ এর পর): পন্থ ক স্মিথ বোস্টার্ক ২৮, নীতীশ ক ম্যাকসুইনি বো কামিন্স ৪২, অশ্বিন ক ক্যারি বো কামিন্স ৭, হর্ষিত ক খাওয়াজা বো কামিন্স ০, বুমরাহ অপরাজিত ২, সিরাজ ক হেড বো বোল্যান্ড ৭, অতিরিক্ত ১৩, মোট (৩৬.৫ ওভারে) ১৭৫। উইকেট পতন: ৬-১২৮, ৭-১৪৮, ৮-১৫৩, ৯-১৬৬, ১০-১৭৫। বোলিং: স্টার্ক ১৪-১-৬০-২, কামিন্স ১৪-০-৫৭-৫, বোল্যান্ড ৮.৫-০-৫১-৩। অস্ট্রেলিয়া দ্বিতীয় ইনিংস (টার্গেট ১৯): ম্যাকসুইনি অপরাজিত ১০, খাওয়াজা অপরাজিত ৯, মোট (৩.২ ওভারে) ১৯-০। বোলিং: বুমরাহ ১-০-২-০, সিরাজ ১.২-০-৯-০, নীতীশ ১-০-৮-০।
অস্ট্রেলিয়া ১০ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচের সেরা ট্রাভিস হেড।
সিরিজ ১-১।