তাঁহাদের কথা
টলিপাড়া থেকে বিধানসভায় নির্বাচিত হয়েছেন এক ঝাঁক শিল্পী। লাইট-সাউন্ড-ক্যামেরা-অ্যাকশনের ভাষার সঙ্গে পরিষদীয় রাজনীতির ভাষার তফাত অনেকখানি। কী ভাবছেন শিল্পীরা? আবার নিজেদের এলাকার উন্নয়নেই বা তাঁদের পরিকল্পনা কী? তাঁদের কয়েকজনের সামনে প্রায় একইরকম প্রশ্ন রেখেছিলেন আমাদের দুই প্রতিনিধি অভিনন্দন দত্ত ও সোহম কর।
জুন মালিয়া
(কেন্দ্র: মেদিনীপুর)
জেতার পিছনে কী কী ফ্যাক্টর কাজ করল?
ভালোবাসা। আমি তো বড়লোক বা সুপারস্টার তারকা প্রার্থী নই। প্রকৃত ভালোবাসা মানুষ বুঝতে পারে। আর আমার কেন্দ্রে সেটাই হয়েছে। এছাড়া দিদি অবশ্যই এক্স ফ্যাক্টর। তাঁর ভালো কাজের জন্যই মানুষ ভোট দিয়েছেন। দলের ম্যানিফেস্টো দেখেও ভোট এসেছে। কারণ আমাদের দল শুধু মুখে বলে না কাজে করেও দেখায়। এছাড়াও মহিলারা প্রচুর ভোট দিয়েছেন।
জেতার পর দিদি কী বললেন?
মেসেজে কথা হয়েছে। জানতাম উনি ব্যস্ত থাকবেন। এবারে কলকাতায় গিয়ে মুখোমুখি কথা হবে।
এলাকার জন্য কী কী কাজ করবেন?
কুড়ি দিনে পুরো এলাকা চষে ফেলেছিলাম। ওখানে প্রচুর কাজের সুযোগ রয়েছে। প্রচুর যুব প্রতিভা রয়েছে। ওদের খুঁজে বের করতে চাই। এছাড়াও মেদিনীপুরে শিল্প, পর্যটনের খুব ভালো সুযোগ রয়েছে। এখানকার যুবশক্তির মধ্যে খেলাধুলোর প্রতি আকর্ষণ এবং বিশেষ করে শারীরিক গঠন একটা বড় প্লাস পয়েন্ট বলে মনে হয়েছে। তাই ক্রীড়া বিভাগে কাজ করতে চাই। আমার মনে হয়, পাঁচ বছর খুবই কম সময়। তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কাজে নামতে চাই।
অভিনয় না রাজনীতি, এবারে কোনদিকে মনোনিবেশ করবেন?
দুটোই সামলাতে হবে। কারণ ভোটের প্রচারের সময়েও রাস্তার পাশে মানুষ বলে উঠেছেন, ‘দিদি ধারাবাহিকের শ্যুটিং কবে শুরু করবেন?’ আসলে মহিলা ভোটাররা আমাকে এই দুই ভূমিকাতেই দেখতে চান সেটা বুঝতে পেরেছি।
টলিপাড়ার জন্য কোনও পরিকল্পনা?
অবশ্যই। গত এক বছর ধরে বাংলা ইন্ডাস্ট্রি একটা কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে এগচ্ছে। আমি আর্টিস্ট ফোরামের সদস্য। গত বছর মার্চে করোনার জন্য যখন আমরা শ্যুটিং বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, তখন অনেকেই আমার উপরে রাগ করেছিলেন। কিন্তু পরে ঘটনার সিরিয়াসনেস বুঝে আবার প্রশংসাও করেছিলেন। আবার টেকনিশিয়ানদের আর্থিক অবস্থার কথা ভেবেই কিন্তু জুন মাসে ছোট পর্দার শ্যুটিং শুরু হয়েছিল। সরকার এখন কী সিদ্ধান্ত নেয় সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছি। আর্টিস্ট ফোরামের সঙ্গে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মিটিংয়ে বসব।
সোহম চক্রবর্তী
(কেন্দ্র: চণ্ডীপুর)
জেতার পিছনে কী কী ফ্যাক্টর কাজ করল?
দিদির উন্নয়ন। তাই করোনা উমপুনের পর দিদির কাজ দেখে ওঁর উপর মানুষের ভরসা আরও বেড়েছে। তাঁর দলের একজন সৈনিক হিসেবে আমাকে মানুষ ভোট দিয়েছেন। আমার কেন্দ্রে প্রতিটা বুথে মানুষের দরজায় দরজায় পৌঁছে তাঁদের বিশ্বাস অর্জন করতে পেরেছিলাম বলেই হয়তো আজকে আমি জিতেছি। তাছাড়া মানুষ জানেন আমি তো রাজনীতির ময়দানে নতুন নই, তাই সেটাও আমার পক্ষে অ্যাডেড অ্যাডভান্টেজ হয়েছে।
জেতার পর দিদি কী বললেন?
রবিবার তিনি ব্যস্ত ছিলেন বলে আর ফোন করিনি। তবে জেতার পরেই হোয়াটসঅ্যাপে কথা হয়েছে। দিদি আশীর্বাদ করেছেন। আমার কেন্দ্রে প্রায় চোদ্দো হাজার ভোটের ব্যবধানে জিতেছি বলেও দিদি খুব খুশি হয়েছেন।
এলাকার জন্য কী কী কাজ করবেন?
ওখানে গিয়ে দেখেছি জল নিকাশি ব্যবস্থা এবং রাস্তার উন্নতি প্রয়োজন। তার সঙ্গেই ওখানে একটা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল তৈরির ইচ্ছা রয়েছে। তার সঙ্গেই এলাকায় করোনা রুখতেও প্রচুর কাজ করতে হবে। আমাদের সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনা থেকে যেন আমার কেন্দ্র বঞ্চিত না হয় সেটাও আমাকে দেখতে হবে।
অভিনয় না রাজনীতি, এবারে কোনদিকে মনোনিবেশ করবেন?
অভিনয় ছাড়তে পারব না। কারণ অভিনয়ের সঙ্গে এতগুলো বছরের পরিশ্রম, স্ট্রাগল জড়িয়ে রয়েছে। তাছাড়া ফ্যানদের একটা চাহিদা রয়েছে। তাঁদের নিরাশ করাটা ঠিক নয়। তবে ভবিষ্যতে ছবির সংখ্যা হয়তো কমিয়ে দেব।
টলিপাড়ার জন্য কোনও পরিকল্পনা?
এই মুহূর্তে করোনার জন্য ইন্ডাস্ট্রি যদি বন্ধ করতে হয়, তাহলে সবার আগে রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের সঙ্গে কথা বলব। কিন্তু আমাদের টেকনিশিয়ানরা যেন কোনওরকম ক্ষতির সম্মুখীন না হন সেই চেষ্টাই করব। দুঃস্থ শিল্পীদের অসুবিধার বিষয়টা দেখতে হবে। টলিপাড়ার যে কোনও সমস্যায় আমি পাশে থাকব। আমার বিশ্বাস আমাদের সরকার এই সমস্যাগুলো নিয়ে চিন্তাভাবনা করবে। কারণ আজকে টলিপাড়াকে যে সম্মান দেওয়া হয়েছে সেটা কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেসের সরকারই দিয়েছে।
অগ্নিমিত্রা পল
(কেন্দ্র: আসানসোল দক্ষিণ)
জেতার পিছনে কী কী ফ্যাক্টর কাজ করল?
আমি এখানকার ভূমিকন্যা। গত এক বছর ধরে মহিলা মোর্চার হয়ে কাজ করেছি। স্বাভাবিকভাবেই রাজনীতিবিদ হিসেবে আমার একটা বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি হয়েছে। রাজ্যের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত আমার সঙ্গে মহিলা মোর্চার মেয়েরা ছুটে বেড়িয়েছেন। মানুষের কোথাও একটা বিশ্বাস জন্মেছে যে, আমি সৎভাবে কাজ করব। আমার বাবা একজন চিকিৎসক। তাঁরও একটা নিজস্ব পরিচিতি রয়েছে এই অঞ্চলে। এই সবগুলোই একটা ফ্যাক্টর। সেইসঙ্গে আমার মনে হয়, মানুষ আজকাল অরাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের বেশি বিশ্বাস করে। আমি তো রাজনীতিতে এসেছি সবে দু’বছর। মানুষ বিশ্বাস করেছেন যে এ আমাদের পাশে দাঁড়াবে। সেই বিশ্বাস থেকেই সকলে ভোট দিয়েছেন। অভিশাপ যেমন গায়ে লাগে, তেমনই আমি মনে করি আশীর্বাদেরও একটা দাম আছে। মানুষের আশীর্বাদ তো আমার মাথায় ছিল নিশ্চয়ই। না হলে এত কঠিন লড়াই আমি জিততে পারতাম না। যেখানে ধরাশায়ী হয়ে গিয়েছে আমাদের বিজেপির বড় বড় নেতা, সেখানে যে আমি জয় পেয়েছি তার জন্য আসানসোলবাসীর কাছে আমি কৃতজ্ঞ।
জেতার পর শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে কথা হয়েছে?
অনেকেই ফোন করেছিলেন। অমিত শাহজির সঙ্গে হয়নি। তবে কৈলাসজি, দিলীপদার সঙ্গে কথা হয়েছে। সকলেই অভিনন্দন জানিয়েছেন।
এলাকার জন্য কী কী কাজ করবেন বা কোনও পরিকল্পনা তৈরি করেছেন?
পরিকল্পনা এখনও কিছু করিনি। সবে তো জিতলাম। এতদিন জয়টাকেই পাখির চোখ করেছিলাম। প্রথম আমাকে জলের সমস্যার সমাধান করতে হবে। এখানকার মানুষের জলকষ্টের সমস্যাই প্রধান। আমার প্রথম কাজ হবে মানুষের কাছে জল নিয়ে পৌঁছনো।
ফ্যাশন ডিজাইনিং যেটা আপনার পেশা, নাকি রাজনীতি কোনটায় বেশি মনোনিবেশ করবেন?
আমার স্টোর এখনও খোলা রয়েছে। কিন্তু গত দু’বছর ধরেই তো কাজ করতে পারছি না। যেদিন থেকে আমি রাজনীতিতে এসেছি, সেদিন থেকেই আর ফ্যাশন ডিজাইনিংয়ে সময় দিতে পারি না। আমার অন্য লোক আছে স্টোর দেখাশোনা করার। আমার এলাকার মানুষের কষ্ট আগে দূর করতে হবে, তাঁদের সময় দিতে হবে। কোনওসময় যদি আসানসোলের পরিবর্তে কলকাতায় থাকি, তখন ইচ্ছে হলে করব। কিন্তু পুরোপুরি ফ্যাশন ডিজাইনিংয়ে সময় দেওয়া আর সম্ভব নয়।
টলিপাড়ার জন্য কোনও পরিকল্পনা?
ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে তখনই কথা বলতাম, যদি আমার দল সরকার গড়তে পারত। যেখানে আমার দলও যেতেনি, টালিগঞ্জের বিধায়কও আমার দলের কেউ নন, তাহলে আমার কথা কি শোনা হবে? অরূপদা-স্বরূপদার (বিশ্বাস) সঙ্গে দেখা হলে আমার প্ল্যান জানাব। যদি তাঁরা সম্মান দেন তো তখন ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা করা যাবে।
হিরণ
(কেন্দ্র: খড়্গপুর)
জেতার পিছনে কী কী ফ্যাক্টর কাজ করল?
প্রথমেই বলি, এটা আমার জয় নয়। এটা খড়্গপুরের মানুষের জয়। গণতন্ত্রের জয়। মানুষ চেয়েছেন বলেই তো আমি প্রায় আশি হাজার ভোট পেয়েছি।
এলাকার জন্য কী কী কাজ করবেন?
আমার কেন্দ্রে এতদিন এতটুকু উন্নয়ন হয়নি। মানুষকে শোষণ করা হয়েছে। হাসপাতালের অবস্থা শোচনীয়। সবার আগে এখানে চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নতি করতে চাই। তার সঙ্গেই রয়েছে কোভিডের সঙ্গে মোকাবিলা। তৃণমূল সরকারের কাছে আমার আবেদন, তাদের তরফে যেন আমাদের সর্বতোভাবে সাহায্য করা হয়। কারণ, রবিবার সারা রাত ঘুমোতে পারিনি। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পরপর ফোন আসছে। আমার দলের কর্মীদের উপর আক্রমণ হচ্ছে। তাঁরা হিংসার শিকার হচ্ছেন। এটাই কি গণতন্ত্র? আমি জানি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হিংসা চান না। দিদিকে আমি দীর্ঘদিন চিনি। তাঁকে শ্রদ্ধা করি। তাই তাঁর প্রশাসনের কাছে আমার অনুরোধ, সবার আগে রাজ্যে হিংসা বন্ধ করতে তাঁরা যেন এগিয়ে আসেন। রাজ্যে শান্তি ফিরে আসুক এটাই কাম্য।
অভিনয় না রাজনীতি, এবারে কোনদিকে মনোনিবেশ করবেন?
সত্যি বলছি এই মুহূর্তে আমার একটাই লক্ষ্য—করোনার সঙ্গে লড়াই।
টলিপাড়ার জন্য কোনও পরিকল্পনা?
এই মুহূর্তে আমার সামনে দুটো লক্ষ্য—যাঁরা হিংসার শিকার হচ্ছেন তাঁদের বাঁচানো এবং করোনার সঙ্গে লড়াই।
অদিতি মুন্সী
(কেন্দ্র: রাজারহাট-গোপালপুর)
জেতার পিছনে কী কী ফ্যাক্টর কাজ করল?
তৃণমূল কংগ্রেস দলটাই প্রধান ফ্যাক্টর। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সকল রাজ্যবাসীর জন্য যা যা করেছেন, সত্যিই তার বিকল্প হয় না। তিনি বলেই তা পেরেছেন। সর্বস্তরের মানুষের জন্য ভেবে সবাই কাজ করতে পারেন না। কিন্তু দিদি পারেন। মানুষ সেটা বুঝেছেন, উপলব্ধি করেছেন, উপকৃত হয়েছেন। সেই প্রতিফলনই ভোটে পড়েছে।
এলাকার জন্য প্রথম কী কাজ করবেন?
ভোট ঘোষণার পর থেকেই নানা পরিকল্পনার কথা মাথায় থাকলেও এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে আমাদের প্রথম কাজ হবে মানুষকে এই মহামারী পরিস্থিতি থেকে বের করে নিয়ে আসা। আমার অঞ্চলের মানুষ যেন সঠিক পরিষেবা পান, আমি যেন ঠিকঠাক তাঁদের পাশে দাঁড়াতে পারি, সেই চেষ্টাই করব।
জেতার পর দিদির সঙ্গে কোনও কথা হয়েছে?
এখনও পর্যন্ত হয়নি। সামনাসামনি দেখা হলে তাঁর আশীর্বাদ চাইব।
গান না রাজনীতি ভবিষ্যতে কোনটা আপনার ফার্স্ট প্রায়োরিটি হবে?
দুটোই আমার কাছে সমান গুরুত্বপূর্ণ। দায়িত্ব যখন এসেছে তখন দায়িত্ব আমাকে পালন করতেই হবে। দায়িত্ব নিতে কখনওই পিছপা হইনি। আমার পারিবারিক শিক্ষা তাই বলে। তবে শুধু যে এটাই আমার দায়িত্ব তা নয়। ভগবানের অশেষ কৃপায় আমার গলায় সুর রয়েছে। তাই গান গাওয়াটাও আমার একটা দায়িত্ব। সেটাকেও আমি অসম্মান করতে চাই না। তাই দুটো কাজই আমি করতে চাই।
আপনারা যাঁরা স্টেজ শো করেন, এই মহামারীর কারণে সেই স্টেজ শো একটা বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। টলিউডের কাজকর্মও ব্যাহত হচ্ছে। এটাকে সামলানোর কোনও পরিকল্পনা করেছেন?
আপনি যে প্রশ্নটা করেছেন, সেটা মাস লেভেলের প্রশ্ন। এটা সমাধান করার জায়গায় আমি এখনও পৌঁছয়নি। আমাদের মুখ্যমন্ত্রী নিশ্চয়ই কিছু সমাধানসূত্র ভেবেছেন। আপনারা দেখেছেন কত অল্প সময়ের মধ্যে উনি কোভিড ইউনিট খুলে দিয়েছেন, হাসপাতালে বেড না পাওয়ার সমস্যা, অক্সিজেন না পাওয়ার সমস্যা মেটানোর জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করছেন। আমি নিশ্চিত উনি কিছু ভেবে রেখেছেন। সকলে মিলে আমরা ঠিক এই অবস্থা কাটিয়ে উঠব।
কাঞ্চন মল্লিক
(কেন্দ্র: উত্তরপাড়া)
জেতার পিছনে কী কী ফ্যাক্টর কাজ করল?
আমার কেন্দ্রে গতবারের বিধায়কের থেকে পরিষেবা না পেয়ে মানুষ আগেই ক্ষুব্ধ ছিলেন। তার উপর তিনি ভোটের আগে দলও বদলালেন। মানুষের সমর্থন পেয়েছি বলেই হয়তো সেই প্রভাব ভোটের উপর পড়েছে। তার উপরে মাথার উপর দিদি ছিলেন। আসলে দিদির মতো মানুষের ছত্রছায়ায় থেকে যাঁরা দল বদলায়, তাঁরা যে ‘গদ্দার’ সেটাই মানুষ আমাকে ভোট দিয়ে প্রমাণ করলেন।
জেতার পর দিদি কী বললেন?
ওঁকে প্রণাম জানিয়েছি। আশীর্বাদ পেয়েছি। ব্যস এইটুকুই। বাকিটা সামনাসামনি দেখা হলে কথা হবে।
এলাকার জন্য কী কী কাজ করবেন?
প্রথম কাজ, আমার এলাকায় করোনা মোকাবিলার জন্য আমাকে এখন সর্বাগ্রে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। আগে সংক্রমণ আটকাই, তারপর বাকি কাজগুলোয় হাত দেব।
অভিনয় না রাজনীতি, এবারে কোনদিকে মনোনিবেশ করবেন?
যে রাঁধে, সে চুলও বাঁধে। দুটোই তো মানুষের জন্য কাজ। তাই আমাকে দুটোই সমানভাবে চালিয়ে যেতে হবে।
টলিপাড়ার জন্য কোনও পরিকল্পনা?
এখনও ভাবিনি। ইন্ডাস্ট্রিতে করোনা নিয়ন্ত্রণ করতে অনেকগুলো কাজ করতে হবে। সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। আমার প্রথম পরিচয় তো অভিনেতা হিসেবে। তাই টালিগঞ্জ ‘পরিবার’-এর যে কোনও সমস্যায় আমি পাশে থাকব।
লাভলি মৈত্র
(কেন্দ্র: সোনারপুর দক্ষিণ)
জেতার পিছনে কী কী ফ্যাক্টর কাজ করল?
ফ্যাক্টর তো মানুষের সমর্থন। আর অবশ্যই দিদি। ভোটটা তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখে হয়। আর উন্নয়ন দেখে হয়। বোঝাই যাচ্ছে, মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই চাইছেন। সেই কারণেই সকলে আমাকে ভোট দিয়েছেন। আর এখানকার মানুষ আমাকেও ভালোবেসেছেন। কোথাও হয়তো তাঁদের মনে হয়েছে এই মেয়েটাকে বিপদে-আপদে পাশে পাওয়া যাবে।
এলাকার মানুষের জন্য প্রথম কী করতে চান?
প্রথম কাজ বলতে এই মুহূর্তে যা অবস্থা, কোভিড পরিস্থিতি সামাল দেওয়টাই প্রধান চ্যালেঞ্জ। আর কিছু নিয়ে আপাতত ভাবছি না। মহামারী পরিস্থিতিতে মানুষ নানা সমস্যায় রয়েছেন- অক্সিজেনের সমস্যা হচ্ছে, হাসপাতালে ভর্তির ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি হচ্ছে, সময় মতো অনেকেই হাসপাতালে পৌঁছতে পারছেন না। এগুলোর সুরাহা করাই এখন আমার প্রাথমিক লক্ষ্য।