একাধিক সূত্রে অর্থপ্রাপ্তি ও ঋণশোধে মানসিক ভাব মুক্তি। নিজ বুদ্ধি ও দক্ষতায় কর্মোন্নতি ও সুনাম। ... বিশদ
কী আছে এই ডিটক্স জলে। আসুন কয়েকটা রেসিপি দেখা যাক। একটা রেসিপি হল জলের মধ্যে লেবু আর পুদিনা পাতা মিশিয়ে ফ্রিজে রেখে দিন। তারপর সকালে খান। দ্বিতীয় রেসিপি হল জলের মধ্যে শশা আর লেবু। তৃতীয় হল জলের মধ্যে তরমুজ আর বেসিল পাতা। আবার বিশেষ বিশেষ নিয়ম আছে। এই তরমুজ ভেজানো জল ফ্রিজে রাখতে হবে। আর সারাদিন একটু একটু করে খেতে হবে। একবারে ঢক করে গিলে নিলে হবে না। এছাড়া আরও উচ্চমার্গের ডিটক্স জল তৈরি করা যায়। জলের মধ্যে দারচিনির গুঁড়ো, ভিনিগার, অ্যাপেল, নুন, আদা ইত্যাদি নানা জিনিস মিশিয়ে নানারকম রঙিন জল বানানো যায়। লবণ আমার এই সাধারণ সাদা লবণ নয়, আপনার জন্য স্বর্গ থেকে আমদানি করা গোলাপি লবণ চাই! আপনি ইন্টারনেটে চারটে সাইটে গেলে কুড়িটা ডিটক্স জলের সন্ধান পাবেন। ইচ্ছে হলে আপনি নিজে পারমুটেশান করে আরও তিরিশটা বানিয়ে নিন। জলের মধ্যে দারচিনি বলেছে? ঠিক আছে। আপনি তার সাথে শশা মিশিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করুন। দেখুন না, কী হয়!! আর যদি পছন্দ হয়ে যায়, তাহলে সেই নিজের তৈরি করা রেসিপি ইন্টারনেটএ ছেড়ে দিন!
বুঝতেই পারছেন যে এই ডিটক্স জলে স্বাস্থ্যের কোনও উপকার হওয়ার প্রশ্নই নেই। প্রথম কথা যে আমাদের শরীরে “টক্সিন” বলে কিচ্ছু নেই। সুতরাং এই গরমের মধ্যে ওই জল খেলে শরীর থেকে টক্সিন বেরোনোর কোনও প্রশ্নই ওঠে না। এইসব উদ্ভট রেসিপি যারা পয়দা করেন, তাদের যুক্তি হল যে শরীর থেকে টক্সিন বেরিয়ে গেলেই শরীর একদম তন্দুরস্ত হয়ে যাবে। রোজ সকালে এরকম এক গ্লাস ডিটক্স জল সাঁটিয়ে ফেলুন। তারপর আপনার ডায়াবেটিস পালাতে পথ পাবে না। আর অলিম্পিকের সোনা? সে তো আপনার বুকপকেটে রাখা থাকবে!
দেখুন, বৈজ্ঞানিক দিক থেকে এরকম ডিটক্স জল হল একদম রাবিশ। যদি শশা আর লেবু খেতে ইচ্ছে হয়, অবশ্যই খান। কিন্তু তার জন্য অত নাটক করে আগের রাতে জলে শশা ভিজিয়ে সেই জল পরের দিন সারাদিন ধরে একটু একটু করে খেতে হবে না। একটা শশা কাটুন আর কচ্ কচ্ করে পাঁচ মিনিটে সাবাড় করে দিন। যা উপকার হওয়ার, সঙ্গে সঙ্গে পাবেন। আরেকটা যুক্তি হল যে এইসব দারচিনি, আদা ইত্যাদি জলে ভিজিয়ে খেলে অনেক ভিটামিন পাওয়া যায়। যদি ভিটামিন পেতেই হয়, একটা ভিটামিন ট্যাবলেট জল দিয়ে গিলে খেয়ে নিন। ভেবে দেখুন, আগের দিন কষ্ট করে শশা, লেবু, ভিনিগার জলে ভেজাতে হবে। সারারাত ফ্রিজে রাখতে হবে। পরের দিন মনে করে সেই বিস্বাদ জল খেতে হবে। এত কষ্ট করে কী হবে? তার থেকে দোকানে গিয়ে এক টাকা দিয়ে একটা ভিটামিন ট্যাবলেট কিনে খেয়ে নিন। ওই শশা পচানো জল কষ্ট করে খেয়ে যা খরচ আর কষ্ট, তার থেকে অনেক কম কষ্টে ডবল ভিটামিন পাবেন। যদি আপনার হাতে অঢেল সময় থাকে, তাহলে অবশ্যই এরকম রঙিন হারবাল জল বানিয়ে পান করতে পারেন। জীবনে বেশ নতুনত্ব আসবে। কিন্তু দয়া করে কোনও সিরিয়াস রোগের ওষুধ হিসাবে বৈজ্ঞানিক ওষুধ বাদ দিয়ে এরকম হাবিজাবি খেয়ে নিজের ক্ষতি করবেন না।