Bartaman Patrika
গল্পের পাতা
 

সমব্যথী
উৎপল মান

লতাকে সাইকেলে চাপিয়ে খগেন যখন শহরের রাস্তাটুকু পেরিয়ে অলিগলি সরু পথ পেল, লতা বলল, ‘একটু হেঁটে গেলে কেমন হয়?’
আসলে লতাই খগেনকে পৌঁছতে যাচ্ছে। খগেন সাইকেল থামাল। দুই হ্যান্ডেল ধরে হাঁটতে লাগল। সবই জানা হয়ে গিয়েছে। তবুও জিজ্ঞেস করল,
‘তোমাকে কত বলেছে?’ 
‘ছয়।’
‘পরে বাড়াবে না?’ 
‘সেটা তুমি নিজেই পরে ঠিক করে নিতে পারবে। আগে কাজ তো কর। দেখ কেমন লাগে।’ 
‘খুব বড় দোকান?’  
‘মফস্‌সলে তো। বিশাল কিছু হবে না। তবে একটাই মুশকিল যে এখন পুজোর সময়। রাত দশটার আগে ছাড়া পাবে না। দুপুরে আজ হোটেলেই খেয়ে নেবে। কাল থেকে ঘরের খাবার নিয়ে যাবে। সকাল-বিকেল টিফিন ওরা দেবে এখন।’
খগেন অনেকদিন ঘরে বসে আছে। আগে রঙের কাজ করত। ছোটখাট কাজের ঠিকাও নিয়েছে। ওর একটা টিম ছিল। বাড়ির রং ও পুট্টির কাজ। বছর চারেক আগে কাজ করতে গিয়ে মাচা থেকে অসাবধানবশত পড়ে গিয়েছিল। জঙ্ঘার হাড় ভেঙেছিল। অপারেশন। এখন যদিও হাঁটতে অসুবিধে হয় না। তবু বসেই ছিল এতদিন। এক হোমিওপ্যাথি ডাক্তারের কাছে রোগীর নাম লেখার কাজ পেয়েছিল। কিন্তু করোনার পর থেকে সেটাও নেই।   
অবসাদে দু’একবার বাইরে চলে গিয়ে ফেরেনি কয়েকদিন। সেটা ছেলের বিয়ের পর। বউমা প্রথম দিকে ঠিকই ছিল। কিন্তু মাস ছয়েক যেতে না যেতেই ওর মনে হতে লাগল যে ছেলের অন্ন ঘরে বসে ধ্বংস করছে বাপ।
লতা আইসিডিএস প্রকল্পের কর্মী। ওর এলাকা শহর থেকে তিন কিমি দূরে একটা বস্তি অঞ্চল। নিজেরাও একসময় বস্তিতে থেকেছে। ছেলে চাকরি পাওয়ার পর এখন ভাড়াবাড়িতে রয়েছে 
ছ-সাত বছর।
‘এবার চাপো’, খগেন বলল, ‘রাস্তা তো অনেকটা।’
লতা চেপে বসল ক্যারিয়ারে। জায়গাটার নাম ধ্রুবডাঙা। সামনে একটা খোলা মাঠ। স্টেজ করে তিনরঙা কাপড় দিয়ে মোড়া। বিশাল ডিজে মিউজিক সিস্টেমে গান বাজছে উচ্চ নিনাদে। আজ স্বাধীনতা দিবস। খগেনের মনে কেমন একটা চিনচিনে ব্যথা জেগে উঠল। খুব বিচ্ছিরি রকম একটা ব্যথা। মনে মনে কারও একটা ছবি খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করল। খুব মহৎ একটা মানুষের। কিন্তু পেল না।
‘আরে কাকা, তুমি এদিকে?’
খগেন দাঁড়িয়ে পড়ল। বাইকে চড়ে গব্বর। ওর কাছে কাজ করত আগে। বলল, ‘এই যাচ্ছি একটু। কাজে।’
‘কোথাও কাজ করছ নাকি?’  
খগেন জানাল, ‘করছি একটা। তুই?’  
আমি এখন কন্ট্রাক্ট নিই গো কাকা। এই তো দু’খানা সরকারি বিল্ডিং করলাম। আরও দুটোর কাজ চলছে। তুমি কাজ করবে কাকা?’  
খগেন নিরীহ গোবেচারা হাসল। যখন ছোট ছোট কাজের বরাত পেত খগেন, গব্বর কাজ করেছে ওর আন্ডারে। এখন ও নিজেই কন্ট্রাক্টার। বলল, ‘না রে, ঘরে আসিস একদিন। অনেকদিন ভালো করে গল্প হয়নি।’
গব্বর চলে গেলে আবার সাইকেলটা চালাতে শুরু করল খগেন। একটু ফাঁকা মতো জায়গা আসতেই লতা নরম সুরে বলল, ‘তুমিও ওইরকম হতে পারতে, বল? শুরুও করেছিলে। আমাদের কপাল মন্দ গো।’
খগেন আবার ঢুকে পড়ল অন্য একটা কষ্টে। ডিজের জগঝম্প কানে এল না আর। একসময় খুব ক্রিকেট খেলা দেখত টিভিতে। দেশের জন্য গলা ফাটানোকে ভাবত দেশপ্রেম। মহৎ একটা মুখ আবার খুঁজে পেতে চাইল খগেন। পেল না।
‘গব্বরের কী সুন্দর চেহারা হয়েছে দেখলে! হাতে টাকা এলে চেহারা এমনিই খোলে!’ লতা বলল।
খগেন অন্যমনস্ক হয়ে জানতে চাইল, ‘কতজন কাজ করে কিছু জানো?’ 
‘কোথায়?’ 
‘ওই যেখানে যাচ্ছি।’ 
‘জনা দশেক তো বটেই। মালিকের বউ আমাদের এলাকার সুপারভাইজার। ওরা লোক ভালো বলেই মনে হয়। তবে ব্যবসাদার তো। বউ ভালো হলেই যে ওর মালিক...’   
‘ঘরের লোকই ভালো না তো আর বাইরের লোকের কী দোষ! দু’দিন এসেই ভাবল ওরই সব। আমাদের কিছুতে অধিকার নেই। আমাদের ছেলে, অথচ আমাদের জন্যে কিছুই করতে পারবে না!’  
লতা ওসব কথা আর ঘাঁটাতে চায় না। প্রসঙ্গ পাল্টে বলল, ‘ওই গব্বরের মতো ছেলেগুলোই তো তোমার পা ভাঙার সময় ছুটে এসেছিল। ওর ব্যবসা এখন রমরমা। তোমারও হতো। কিন্তু কপালে নেই গো।’       
সকাল-সকাল বেরবে ভেবেও বেরতে পারেনি লতা আর খগেন। যেখানে যোগ দিতে যাচ্ছে কাজে, সেই দোকান খুলবে ন’টায়। ওরা একটু আগেই যাবে ভেবেছিল। মোবাইলে সময় দেখল, ন’টা পাঁচ। দেরি হয়ে গেল। পৌঁছতে এখনও মিনিট কুড়ি লাগবে। 
কিছুটা এসে দেখল দলে দলে লোকেরা রাস্তা পেরচ্ছে। একজনকে জিজ্ঞাসা করতে সে জানাল, সামনেই একটা শপিংমল। আজ পনেরোই আগস্টে নানা পণ্যদ্রব্যে কেনাকাটায় অফার দিচ্ছে। খগেন একবার গিয়েছিল। ঢুকতে তো টিকিট লাগে না। ঠান্ডা ঘর। ভিড় একটু থাকে বটে, কিন্তু বিনে পয়সায় এত বড় জায়গায় আসা তো যায়! ঘুরতে ঘুরতে এক বোতল তরল সাবান কিনে এনেছিল। কারণ ওটার মুদ্রিত মূল্য ছিল একশো ষাট টাকা। আর বিক্রিত মূল্য শুধু ঊনষাট। বাজারে নাকি প্রথম লঞ্চ করেছে। লতা খুশি হয়েছিল খুব। তখন ওরা ছিন্নমস্তা মন্দিরের সামনে ধুলোগড়া বস্তিতে থাকত। সেই সাবান নিজেও মেখেছিল দু-একদিন। কী সফেদ ফেনা আর ফুরফুরে সুবাস! বাইরে বেরিয়েও বুঝেছে ওর সারা শরীরে সুবাতাস বইছে যেন। জীবন সত্যিই খুব মজার। বড় আকাঙ্ক্ষা মনের মধ্যে পুষে রেখেও মানুষ কত অল্পতেই খুশি হতে পারে!    
অনেকদিন পর সেও কাজ পেয়েছে। এই বয়সে ওরকম কাজ ছাড়া আর কীই-বা সে করতে পারবে! ষাট পেরিয়েছে। তবে কাজ করলে মন ভালো থাকবে। ঘরের মধ্যে এতদিন রান্নাও করেছে। ছেলে বেরিয়ে যায় ডিউটিতে সকালবেলায়। লতাও সকাল আটটা নাগাদ বেরয়। সে নিজেও ধুলোগড়া বস্তিতে আড্ডা দিতে চলে যেত প্রায়ই। দুপুরে তাস খেলতে। রক্তদান শিবির হয় এখানে প্রায়ই। না চাইতেই ব্যবস্থাপনার নানা কাজেকম্মে লেগে পড়ত। কিন্তু বউমা রিয়া যেদিন থেকে রান্না করা বন্ধ করে দিল, সেদিন থেকেই ওকে ওসব কাজে লতাকে সাহায্য করতে হয়েছে। আবার এমন একটা সময় এল যখন দিনের বেলা প্রায় সব রান্না নিজেই করেছে। রিয়া ঘরের মধ্যে পর্দা ফেলে দেওয়াল তৈরি করে নিয়েছে। সেই ‘পর্দাপ্রথা’ এখনও চলছে। ছেলে অশান্তির ভয়ে চুপ।
ধ্রুবডাঙা পেরিয়ে একটা পরিত্যক্ত রেললাইন। লতা বলল, ‘এই জায়গাটা দেখলেই গা আমার গুলিয়ে ওঠে।’ লতার মুখে ঘৃণাসূচক অভিব্যক্তি।
বিয়ের পর লতা খগেনের সঙ্গে এই ধ্রুবডাঙায় প্রথম উঠেছিল। একটা পচা নর্দমার পাশে ভাড়াবাড়ি। লতা ভালো ঘরের মেয়ে। পড়াশোনাও করেছে। কিন্তু ওর বাবার অনেকগুলি ছেলেমেয়ে হওয়ার কারণে তড়িঘড়ি প্রথম কন্যার বিয়ে দিতে চেয়েছিল। খগেন তখন একটি কনস্ট্রাকশন কোম্পানিতে ছোটখাট কাজ করে। লতা সব সহ্য করেছে।   
খগেন বলল, ‘জীবন বড় বিচিত্র। ঘুরতে ঘুরতে দেখ ঠিক এই দিকেই এলাম। কতদিন এদিকটায় আসিনি বল!’       
‘সেই ছেলেটা খুন হয়ে যাওয়ার পর তো আমরা বাড়ি ছেড়ে ধুলোগড়া বস্তিতে উঠলাম। এই রেললাইনের ধারেই ওকে কারা মেরে ফেলে রেখে গিয়েছিল।’ 
‘তোমার মনে পড়ে লতা, সেই অচিন্ত্যকে?’  
‘খুব মনে পড়ে। কী যে কাজ করত, আমরা কোনওদিন জানতেই পারিনি। রাতে বেরিয়ে যেত। ফিরত সকালে। সারাটা দিন শুধু ঘুমোত। আমাদের জন্য মাঝে মাঝে নানা খাবার কিনে আনত। গিফ্ট আনত।’
‘হ্যাঁ, তোমাকে খুব ভালোবাসত ছেলেটা। বাপ-মা কেউ তো ছিল না।’         
লতাকে নামতে বলে নিজেও সাইকেল থেকে নেমে পার হল রেললাইনটা। কিছুটা গ্রামের মতো পথ এরপর। খগেনের ভালো লাগে। নিজের গ্রাম সে প্রায় ভুলেই গিয়েছে। বর্ধমান জেলায় অজয়ের তীরবর্তী গৌরবাজার গ্রাম। যাওয়া হয় না। জীবন একদিকে কিছু দেয়, অন্যদিকে আবার কিছু কেড়েও নেয়। তবে এখনও ভিটেমাটিটা আছে গ্রামে। বছরখানেক আগে একটা বিয়েবাড়িতে গিয়েছিল। একজন খেপিবুড়ি থাকে ওখানে। ভিক্ষে করে খায়। মাটির ভাঙা দেওয়াল। টিনের চালের অর্ধেকটা নেই। গ্রামেই একজন সম্পর্কিত ভাই আছে খগেনের। তাই ওটা বেদখল হয়ে যায়নি। উঠোনে আগাছা। সাপের বাস। বুড়ির ওসবে ভয় নাই।    
গ্রামে ছোটবেলার একটু-আধটু স্মৃতি মনে আছে খগেনের। নদীতে স্নান, লুকোচুরি খেলা, আমবাগানে আম পাড়তে যাওয়া। হাটের পাশে ছোট একটা কাঁচা ঘরে পোস্টঅফিস। পাশেই বোসদের দিঘি। তার পাড়ে সারি সারি তালগাছ। ওই রাস্তা দিয়ে সোজা গেলেই ইশকুল। কোথায় যে সব পড়ে থাকল!   
সাইকেলে আবার চাপল দু’জনে। কিন্তু পুরনো গ্রামের কথা ওর মনে পড়ছে কেন! নাকি অচিন্ত্যর স্মৃতি মন থেকে দূর করার জন্যই ব্যাপারটা ঘটল! এতদিনের বস্তি জীবনেও কিছুটা গ্রাম্যতার ছোঁয়া ছিল। সেই অভ্যাস থেকে সরে আসতে খুব সহজে পারেনি। কিন্তু ওর ছেলে বিকাশ থাকতে চায়নি আর সেখানে। কম টাকায় বাড়িভাড়া পেয়ে গিয়েছিল। এক বৃদ্ধ দম্পতির বাড়ি। নীচের তলাটা ওদের ছেড়ে দিয়ে নিজেরা থাকেন ওপরে। মাঝেমাঝে ছেলে-বউয়ের কাছে যান ব্যাঙ্গালোরে। ওরা আসে না।           
লতা হঠাৎ বলল, ‘মনটা কেমন খচখচ করছে গো।’     
‘কেন বল তো?’  
‘এতদিন ঘরে এসেই তোমাকে দেখতে পেতাম। আর তুমি সকালে বেরিয়ে গিয়ে ফিরবে সেই রাত দশটা-এগারোটায়। তাছাড়া...’  
‘তাছাড়া কী?’ 
‘আমি তো বেলা দুটোয় ফিরে যাই। ফিরে এসে তো সেই একা!’   
খগেন চুপ করে থাকল। বউমা পর্দা ফেলে রাখে নিজের ঘরে। ঝগড়া হয় ঠুনকো কারণে। কথা-কাটাকাটি। ওতেই ওদের দু’জনের সঙ্গেই কথা বন্ধ। রান্নাবান্না করে না। খাওয়ার সময় খায়, নিজের থালাটি তুলে কলঘরে রেখে হাতমুখ ধুয়ে আবার পর্দার আড়ালে চলে যায়। খুব আশ্চর্য লাগে ওদের-  সারাটা দিন ঘরের মধ্যে শুয়ে-বসে কাটিয়ে দেয় মেয়েটা! বিকাশ সন্ধেয় ফিরলে ওর সঙ্গে একটু বেরয়।
খগেন ভাবছিল, একদিন না বলে দেয় ওদের আলাদা থাকতে! বিকাশ কি বলতে পারবে? অনেক কষ্টে ওকে বড় করেছে ওরা। কিন্তু এভাবে কতদিন থাকবে ওরা। তাই একটা কাজের খোঁজ করছিল লতা। খগেন করতে পারবে এমন একটা কাজ।      
বস্তিতে থাকাকালীন মাছ বিক্রিও করেছে খগেন। পাশের ঝুপড়ির নিমাই ওকে এই রাস্তা দেখিয়েছিল। তখন বিকাশ বেশ ছোট। ধ্রুবডাঙা থেকে সবে এসেছে এখানে। যে কনস্ট্রাকশন অফিসে ফাইফরমাশ খাটত খগেন, সেটা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় খুব ফাঁপরে পড়েছিল ছেলে-বউকে নিয়ে। তখন নিমাই ওকে বলেছিল, লেগে পড় মাছ ব্যবসায়।   
লতা বলল, ‘আমার চিন্তা হচ্ছে গো। এতদূর ভাঙা পা নিয়ে সাইকেল চালাবে রোজ! জায়গাটা একটু দূরই হল, বুঝলে?’  
‘পা এখন ঠিক আছে। আর পুরুষ মানুষ ঘরে বসে থাকলে তার মান থাকে না গো।’   
লতার ব্যাগে একটি প্লাস্টিকের প্যাকেট। ওর মধ্যে সুতোর কাজ করা একটি ব্লাউজ আছে। ওর সুপারভাইজার-দিদিকে দেবে। একদিন ওর জামায় এমব্রয়ডারির কাজ দেখে জানতে চেয়েছিল কোথায় করিয়েছে। লতার বাড়ির কাছে এক মহিলা কাপড়ের ওপর সুতোর নকশা তোলে। লতা সেখানেই করিয়েছে। লতা পরে দিদির জামার মাপ জেনে নিয়ে বানাতে দিয়েছিল। কৃতজ্ঞতাস্বরূপ তো এটুকু করাই যায়। খগেন কম্পিউটারে বিল কাটতে পারলে সেই কাজও পেত। তখন বেতনও হতো দশ হাজারের মতো। দুর্ভাগ্য যে ওর বর কম্পিউটার চালাতে পারে না। ছেলের ল্যাপটপ আছে। কিন্তু এই মানুষটা কোনও দিন কী-প্যাড ছোঁয়নি।     
ওরা যখন পৌঁছল, দেখল দোকানে বেশ ভিড়। অপেক্ষা করতে লাগল। কার সঙ্গে কথা বলবে? দিদিকে ফোন করল। একটু পরে এসে সুপারভাইজার-দিদি হাজির। মহিলাটি লিফ্টে ওদেরকে নিয়ে গেল দোকানের দোতলায়। এখানে তেমন ভিড় নেই।   
কিন্তু লতা এবং খগেন অবাক হয়ে গেল যখন ওদের সামনে এসে হাজির হল একটি বিবাহিতা যুবতী। মহিলাটি চুপিচুপি বলল, ‘আমার বউমা। ছেলে ব্যবসার কাজে বাইরে। ওর সঙ্গেই কথা বল তোমরা।’ খগেন সেদিন থেকেই কাজে লেগে পড়ল। লতাও নেমে এল নীচে। দেখল, সাইকেল নিয়ে দিদি অপেক্ষা করছে। এই বিশাল যাদের কাপড়ের দোকান, বাহন হিসেবে একখানা সাইকেল তাদের মানাবে কেন! লতা ওর দিকে তাকিয়ে বলল, ‘আপনি এখনও যাননি দিদি?’  
‘চল, আমার সাইকেলে চেপে পড়। তোমার ওদিকেই তো যাব আজ।’  
লতা বলেই ফেলল, ‘আপনি দিদি এবার স্কুটি ব্যবহার করুন। এটা আপনাকে মানায় না।’
মহিলাটি উত্তর না দিয়ে বলল, ‘চল, দেরি হয়ে যাবে। আজ সেন্টারে বাচ্চাদের ডিম দেওয়া আছে না!’ রাতে খাওয়ার সময় লতা খগেনকে জিজ্ঞেস করল, ‘মালিকটি কেমন গো?’ 
খগেন চুপচাপ খাচ্ছিল। মুচকি হেসে বলল, ‘ভালোই তো। সুন্দরী। আকর্ষণীয়া।’ 
লতা ড্যাবড্যাব করে ওর দিকে তাকাল।   
কাছেই কোনও একটি ক্লাবে গান বাজছে। দেশাত্মবোধক। খগেন মনে করতে পারল— দোকান থেকে বেরনোর পর কেমন একটা ফুরফুরে মেজাজ ছিল ওর। তাতে যেন স্বাধীনতা-স্বাধীনতা গন্ধ। কিন্তু পরক্ষণেই তা কেমন এক বিষাদে পরিণত হয়েছিল। লতার সুপারভাইজার-দিদির স্বামীর কথা ভেবে। ছেলে-বউমার দোকানে বাবা বেতনভুক কর্মচারী! 
27th  October, 2024
কলকাতা এক পরীর দেশ

আসলে আমরা খেয়াল না করলেও আমাদের চারপাশের হাওয়ায় এখনও দিব্যি নিঃশ্বাস নেয় আঠেরো-উনিশ শতকের কলকাতা। আর সেই পুরনো কলকাতার স্মৃতিকে ধরে রাখার অন্যতম প্রতীক হল— পরী।
  বিশদ

15th  December, 2024
লাল মন্দির

সমৃদ্ধ দত্ত
মুখোমুখি দাঁড়িয়ে লালকেল্লা ও লাল মন্দির। একটি জগৎ বিখ্যাত। অন্যটি স্বল্প খ্যাত। লাল মন্দিরের উচ্চতা তো কম নয়। লালকেল্লার সামনের রাস্তায় দাঁড়িয়ে চাঁদনি চকের দিকে তাকালেই চোখে পড়ার কথা। অথবা সেভাবে পর্যটকদের দৃষ্টিগোচরই হয় না।
বিশদ

15th  December, 2024
ডাক দিয়েছে কোন সকালে
বিজলি চক্রবর্তী

হরি হে তুমি আমার সকল হবে কবে...।’ গলা ছেড়ে গানটা গাইতে গাইতে বিশ্বরূপ রান্নাঘরের দরজায় এসে দাঁড়াল। হাতের কাজ বন্ধ করে নবনীতা বিশ্বরূপের মুখোমুখি হল। বিশ্বরূপ গান বন্ধ করল না। নবনীতার চোখের মুগ্ধতা তাকে উৎসাহিত করে। বিশ্বরূপের গানের ভক্ত নেহাত কম নয়। বিশদ

15th  December, 2024
আদরের পিউ
কৌশানী মিত্র

অনির্বাণের কাল নাইট ছিল। সারারাত দুর্দান্ত পরিশ্রম গিয়েছে। জুনিয়র রেসিডেন্ট হিসেবে এই অদ্ভুত একটা আধা গ্রাম-আধা শহর মতো জায়গাটায় এসে থাকতে শুরু করেছে ও। এখানে আসার পর থেকেই সকাল-দুপুর-রাত কেমন গুলিয়ে যায় অনির্বাণের। বিশদ

08th  December, 2024
প্রতিশোধ
সাবিনা ইয়াসমিন রিঙ্কু

মাত্র ছ’মাসেই যে ফল পেয়ে যাবে ভাবতে পারেনি জয়তী! প্রদীপ্ত কি নিজেও ভাবতে পেরেছিল বাষট্টি থেকে চুরানব্বই হবে! বেশ লম্বা বলে বাইরের লোকরা পার্থক্যটা অতটা ধরতে না পারলেও জয়তী জানে পুরনো প্যান্টগুলো আর কোমর পর্যন্ত উঠতে চাইছে না। বিশদ

01st  December, 2024
বনের মানুষ

—মাস্টার, আজ ডিম বাদ দে, হামাদিগের ছেলে-মেয়েগুলান কেউ খাবেকনি রে!
—কেন?
—হামার সঙতে আসে ওই শর্বরী টুডুটা আছে না? উয়ার ছেলেটোর গায়ে ‘মায়ের দয়া’ বের হইচে। উয়ার লিগে হামাদের পাড়ার সবার মাছ-মাংস-ডিম খাওয়াটো বারণ আছে।
বিশদ

17th  November, 2024
কিছু কিছু সত্য
অংশুমান কর

বড়মা যখন খবরটা দিল তখন সুকমল শেভ করছিল। সকালটা তার খুবই তাড়াহুড়োয় কাটে। তখন এক মিনিটও মহার্ঘ। এক মিনিটের জন্যও এক-দু’দিন ও ট্রেন মিস করেছে। বাসে করে স্কুলে পৌঁছে দেখেছে প্রেয়ার শুরু হয়ে গিয়েছে। প্রার্থনা শুরু হওয়ার পরে স্কুলে পৌঁছতে ওর খুব লজ্জা লাগে।
বিশদ

10th  November, 2024
দোলনা
সুমন মহান্তি

সরকারি হাসপাতালের এমারজেন্সি ওয়ার্ডের সামনে অ্যাম্বুলেন্স দাঁড়াতেই মহীন ক্ষীণগলায় বললেন, ‘অপারেশনটা যেন তাড়াতাড়ি করে। ডাক্তারকে তাড়া দিবি।’ বিশদ

03rd  November, 2024
গুপ্ত রাজধানী: সেন্ট জেমস চার্চ
সমৃদ্ধ দত্ত

 

এই সময়টা খুব গরম পড়ে। আকাশে একফোঁটা মেঘ নেই। প্রিন্টার্সের এই ঘরটা সারাক্ষণ উত্তপ্ত থাকে। এই কাজটাও করতে ভালো লাগে না জেমসের।  দরদর করে সে ঘামছে। কলকাতা নামক শহরটায় এত গরম কেন? এখান থেকে পালাতে পারলে ভালো হতো।  বিশদ

03rd  November, 2024
আজও রহস্য: বাজিরাওয়ের কেল্লা
সমুদ্র বসু

 

পুনের একটি অন্যতম উল্লেখযোগ্য স্থান হল শনিওয়ার ওয়াড়া দুর্গ। যার সঙ্গে জড়িয়ে ইতিহাস, ঐতিহ্য আর মারাঠাদের নাম। সর্বোপরি এই কেল্লার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছেন বাজিরাও পেশোয়া। একসময় মারাঠাদের ঐতিহ্য ও অহংকার এখন একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র। বিশদ

03rd  November, 2024
গুপ্ত রাজধানী: ইয়াদগার এ জওক
সমৃদ্ধ দত্ত

একজন লিখলেন, ‘আপ তো ঘাবড়াকে ইয়ে ক্যাহেতে হ্যায় কে মর যায়েঙ্গে/মরকে ভি চ্যায়েন না পায়া তো কিধর যায়েঙ্গে?’ অর্থাৎ আপনি তো ভয় পেয়ে ভাবলেন এর থেকে মৃত্যুই ভালো। কিন্তু মৃত্যুর পরও যদি শান্তি না আসে, তখন কোথায় যাবেন?  বিশদ

27th  October, 2024
অতীতের আয়না: কলকাতার ফানুস উৎসব
অমিতাভ পুরকায়স্থ

দূরে আকাশ শামিয়ানা। তবে তারাদের প্রদীপ জ্বালার বদলে উড়ে যায় ঘড়ি, পুতুল, হাতি কিংবা উড়োজাহাজের আদলে গড়া ফানুস। খুব স্যুরিয়াল লাগছে? আজ এই ২০২৪ সালে দাঁড়িয়ে লাগতেই পারে। কিন্তু একটা সময় ছিল, যখন কালীপুজোর বিকেলে কলকাতার আকাশের সিগনেচার ছিল এমন দৃশ্য। বিশদ

27th  October, 2024
দুই প্রজাপতি
সর্বাণী বন্দ্যোপাধ্যায়

ছাদের আলসের ধারে দাঁড়িয়েছিল মেয়েটি। আমি সিঁড়িতে উঠতে উঠতেই মনে হল দেখলাম। তারপরে আর দেখতে পেলাম না। আসলে আমার হাতে মোবাইল ছিল। মোবাইলে আসা পাক খাওয়া ছোট খরগোশের মতো ইমোজিটার নাম দিয়েছি বিচ্চু। বিশদ

20th  October, 2024
গুপ্ত রাজধানী: পাহাড়গঞ্জ
সমৃদ্ধ দত্ত

হরিদ্বার ভ্রমণ? তাহলে দিল্লি হয়ে যাওয়াই ভালো। সরাসরি তো যাওয়াই যায়। কিন্তু দিল্লি হয়ে গেলে একটা দিন দিল্লিও দেখা হয়ে যাবে আর তারপর ভোরের শতাব্দী অথবা বাস কিংবা গাড়িতে হরিদ্বার-হৃষীকেশ গেলেই হল! আগ্রা, বৃন্দাবন, মথুরা, ভরতপুর যাব ভাবছি। বিশদ

20th  October, 2024
একনজরে
শুক্রবার সকালে স্কুটারের সঙ্গে ট্রাকের সংঘর্ষে মৃত্যু হল এক যুবকের। মৃতের নাম মুজাফফর বিশ্বাস (৪২)। ঘটনাটি ঘটে দেগঙ্গার কামদেবকাটিতে। পুলিস রক্তাক্ত অবস্থায় স্কুটার চালককে উদ্ধার করে হাবড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে এলেও শেষরক্ষা হয়নি। ...

শুক্রবার ভোরে কালীগঞ্জের বড়চাঁদঘর পঞ্চায়েতের তেজনগর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় একটি মোবাইল দোকানে দুঃসাহসিক চুরির ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। দোকানের শাটার ভেঙে দুষ্কৃতীরা লক্ষাধিক টাকার মোবাইল চুরি করে ...

সম্প্রতি শহরে তথ্য-প্রযুক্তি সংস্থা ইনফোসিসের নতুন ক্যাম্পাসের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের এই সাফল্যকে সামনে এনে প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র দাবি করলেন, বাংলায় পড়াশোনোর বহর বাড়ছে। সেই কারণেই মেধার বিস্তৃতি সম্ভব হচ্ছে। ...

শনিবার তেলেঙ্গানায় সন্তোষ ট্রফির মূল পর্বের গ্রুপ লিগে বাংলার প্রতিপক্ষ মণিপুর। সম্প্রতি ভারতীয় ফুটবলের সাপ্লাই লাইন এই রাজ্য। একাধিক ফুটবলার আইএসএলে বিভিন্ন দলের হয়ে মাঠ কাঁপাচ্ছেন। ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

কাজকর্মের ক্ষেত্রে দিনটি বিশেষ শুভ। নতুন যোগাযোগ ও উপার্জন বৃদ্ধির ক্ষেত্র প্রস্তুত হতে পারে। বিদ্যায় ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

১৮০১: শিক্ষাবিদ ও সমাজসংস্কারক প্রসন্নকুমার ঠাকুরের জন্ম
১৯১১: প্রতিষ্ঠিত হল সেন্ট্রাল ব্যাংক অব ইন্ডিয়া
১৯৫৯: ক্রিকেটার কৃষ্ণমাচারী শ্রীকান্তের জন্ম
১৯৬৩: অভিনেতা গোবিন্দার জন্ম
১৯৯৮: নোবেলজয়ী অমর্ত্য সেনকে ‘দেশিকোত্তম’ দিল বিশ্বভারতী
২০১২: পরিচালক যীশু দাশগুপ্তের মৃত্যু



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৮৪.১৩ টাকা ৮৫.৮৭ টাকা
পাউন্ড ১০৪.২৭ টাকা ১০৭.৯৮ টাকা
ইউরো ৮৬.৪২ টাকা ৮৯.৭৮ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৭৬,০০০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৭৬,৪০০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৭২,৬০০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৮৭,৪০০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৮৭,৫০০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]

দিন পঞ্জিকা

৬ পৌষ, ১৪৩১, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪। ষষ্ঠী ১৫/১৫, দিবা ১২/২২। পূর্বফাল্গুনী নক্ষত্র ৫৯/৫৫ শেষ রাত্রি ৬/১৪। সূর্যোদয় ৬/১৬/১৭, সূর্যাস্ত ৪/৫৩/১১। অমৃতযোগ প্রাতঃ ৬/৫৯ মধ্যে পুনঃ ৭/৪২ গতে ৯/৪৯ মধ্যে পুনঃ ১১/৫৭ গতে ২/৪৭ মধ্যে পুনঃ ৩/২৯ গতে অস্তাবধি। রাত্রি ১২/৫৬ গতে ২/৪৩ মধ্যে। বারবেলা ৭/৩৫ মধ্যে পুনঃ ১২/৫৩ গতে ২/১৩ মধ্যে পুনঃ ৩/৩ গতে অস্তাবধি। কালরাত্রি ৬/৩৩ মধ্যে পুনঃ ৪/৩৬ গতে উদয়াবধি। 
৫ পৌষ, ১৪৩১, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪। ষষ্ঠী দিবা ১/৫৮। পূর্বফাল্গুনী নক্ষত্র অহোরাত্র। সূর্যোদয় ৬/১৯, সূর্যাস্ত ৪/৫২। অমৃতযোগ দিবা ৭/৬ মধ্যে ও ৭/৪৯ গতে ৯/৫৭ মধ্যে ও ১২/৫ গতে ২/৫৬ মধ্যে ও ৩/৮ গতে ৪/৫২ মধ্যে এবং রাত্রি ১/৪ গতে ২/৫০ মধ্যে। কালবেলা ৭/৩৮ মধ্যে ও ১২/৫৫ গতে ২/১৪ মধ্যে ও ৩/৩৩ গতে ৪/৫২ মধ্যে। কালরাত্রি ৬/৩৩ মধ্যে ও ৪/৩৮ গতে ৬/২০ মধ্যে।
১৮ জমাদিয়স সানি।

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
জার্মানিতে বড়দিনের বাজারে গাড়ি চালিয়ে তাণ্ডব: জখমদের মধ্যে রয়েছেন সাতজন ভারতীয়

11:29:00 PM

সন্ধ্যা থিয়েটারে পদপিষ্টের ঘটনা: আমার চরিত্রহনন করা হয়েছে, বললেন অল্লু অর্জুন
হায়দরাবাদের সন্ধ্যা থিয়েটারে ‘পুষ্পা ২: দ্য রুল’ সিনেমার প্রিমিয়ারে পদপিষ্টের ...বিশদ

11:10:07 PM

ব্রাজিলে ট্রাক ও যাত্রীবাহী বাসের মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষ, হত ৩০

10:41:00 PM

রাজাহুলিতে বৃদ্ধ খুনের অভিযোগে আরও দু’জনকে মালদহের কালিয়াচক থেকে গ্রেপ্তার করল এনজেপি থানার পুলিস

10:20:00 PM

ঝাড়গ্রাম শহরে অজানা জন্তুর আক্রমণে গোরুর মৃত্যু, মিলেছে পায়ের ছাপ

10:03:00 PM

মোহালিতে নির্মীয়মান বিল্ডিং বিপর্যয়: উদ্ধারকাজে যোগ দিল ভারতীয় সেনা

09:50:00 PM