Bartaman Patrika
গল্পের পাতা
 

গগনবাবু ও প্যাংলা তাপস
রম্যাণী গোস্বামী

গগনবাবু একটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানির মোটামুটি উপরতলার কর্মী। যাদবপুরে নিজেদের ফ্ল্যাট। মাস গেলে ইএমআই বাদ দিলে মাঝারি ব্যাঙ্ক ব্যালেন্স, কয়েকটা মিউচুয়াল ফান্ড, হৃষ্টপুষ্ট গিন্নি, ফ্যাশানেবল কলেজ পড়ুয়া কন্যা এবং একটি মাহিন্দ্রা কেইউভি— এই হল মোটামুটি তাঁর সম্পত্তির খতিয়ান। নাহ্‌, বান্ধবী গোছের কেউ নেই, যদিও একটি টক, ঝাল, মিষ্টি পরকীয়ার ভারী শখ ছিল। তা এখন তো জীবনতরী কিনারার দিকে বাঁক নিয়েছে। এই বয়সে এসে ওসব কি আর হবে?  
সে যাকগে। বান্ধবী না থাকলেও তাঁর সর্বক্ষণের একজন সঙ্গী আছে। সে হল প্যাংলা তাপস। ছেলেটির নাম তাপস দাস। কিন্তু সে এতটাই রোগা যে তাকে দেখলেই মনে হয় যেন হ্যাঙারের গায়ে শার্ট পরানো হয়েছে। ওদিকে আবার ধেড়ে লম্বা। প্রথমদিন থেকেই গগনবাবু ছেলেটিকে তাই ওই নামেই ডেকে আসছেন। ছোকরা গগনবাবুর গাড়ি চালায়। সকালে সাড়ে নটায় হাজিরা, তারপর সন্ধ্যা অবধি ডিউটি। গগনবাবু অফিস থেকে ফেরার পরেও গিন্নি বা মেয়ের রোজই কোথাও না কোথাও বেরনোর থাকে। শপিং মল, বন্ধুদের বাড়ি, কোচিং সেন্টার, গানের স্কুল, পার্লার, যোগা ক্লাস, আরও কত কীই যে আছে। 
কী একখানা কাকতাড়ুয়ার মতো চেহারা! আহা! গোটা বিশ্বে আর ড্রাইভার খুঁজে পাওনি তুমি! 
প্রথমবার প্যাংলা তাপসকে দেখার পর গিন্নি খাওয়ার টেবিলে বসে মুখ বেঁকিয়েছিলেন। সেই আক্ষেপ শুনে গগনবাবু মেয়ের কান এড়িয়ে ফিসফিস করে বললেন, তোমার মাথা! এই না হলে মেয়েছেলের বুদ্ধি! তোমাদের ওই শাহরুখ, অক্ষয়, আর কী যেন? হ্যাঁ রণবীর– এদের মতো ঝকঝকে ম্যাচো দেখে ড্রাইভার রাখি আর তোমার আহ্লাদী মেয়ে তার সঙ্গে কেটে পড়ুক আর কী! কত সময় তো দুজনে একসঙ্গে যাতায়াত করে। আর এই বয়সটাই তো হল আবেগে ভাসার! 
ঠিক। অকাট্য যুক্তি। গিন্নির এরপর আর কিছু বলার থাকে না। তাছাড়া তাপসের ড্রাইভিংয়ের হাতটিও খারাপ নয়। যদিও গগনবাবুকে সন্তুষ্ট করা মুশকিল। গাড়ি চালানো থেকে শুরু করে গাড়ির কলকব্জা মোটামুটি ভালোই জানা আছে তাঁর। ড্রাইভিংয়ের সময় ছেলেটা সামান্য ভুলভ্রান্তি করলেই গগনবাবুর ভুরু বিরক্তিতে কুঁচকে ওঠে। প্যাংলা তাপসের উদ্দেশে কিছু বাছাই করা গালাগালি আছে তাঁর। সেগুলি হল— ওহে গর্ধবানন্দ, সামনের ওই অটোটাকে ছেড়ে দিলে কেন? এভাবে চললে আমরা যে বেলা তিনটেয় অফিসে পৌঁছব। আবার কোনওদিন— এই যে ইডিয়ট, কটায় মিটিং আছে বলেছিলাম? আর এখন কটা বাজে? দিব্যি ভাত খেয়ে পান চিবোতে চিবোতে এসেছ? 
গগনবাবুর গালাগালির ঠ্যালায় গিন্নি অতিষ্ঠ। মেয়ে তো বাবাকে বলেই দিয়েছে, বাপি, আমি যখন গাড়ি ইউজ করব, তুমি আমার সঙ্গে যাবে না। একদম না। দিস ইজ অ্যাবসোলুটলি ডিসগাস্টিং!  
মনে মনে ভাবেন গগনবাবু, গাড়িতেও তো সারাক্ষণ কানে হেডফোন, আঙুল টকাটক চলছে মোবাইলের স্ক্রিনে। আমার বচন শোনার সময় কোথায় তোমার মামণি? কিন্তু না। এগুলো মুখে আনা যাবে না একেবারেই। শুনলেই গিন্নি আর মেয়ে দুজনেই খ্যাঁক করে উঠবে। তাছাড়া ওরা তাঁর রাগের কারণ বুঝবেই বা কীভাবে? মাস গেলে তাপসের হাতে পাক্কা পনেরোটি হাজার গুনে দিতে হয় তো গগনবাবুকেই। গাছে ঝোলে টাকাটা? তার উপরে সপ্তাহে একটা দিনের ছুটি বরাদ্দ। এছাড়া স্ট্রাইক, হলিডে ইত্যাদি তো লেগেই আছে। এরপরেও কাজে গাফিলতি হলে তা কারওর সহ্য হয়? নিজের জ্বালা তিনি নিজেই বোঝেন। মেজাজের পারদ তাই চড়তেই থাকে। নামবার নাম করে না।
এরমধ্যেই একদিন মাঝরাস্তায় বারবার গিয়ার বদলানো নিয়ে তাপসের সঙ্গে খিটিমিটি বেঁধে গেল। রাগের চোটে থাকতে না পেরে একখানা প্রচলিত চার অক্ষরের শব্দ অ্যাপ্লাই করে বসলেন গগনবাবু। তাপস সাধারণত মালিকের কথায় একদমই রা কাটে না, কিন্তু সেদিন হয়তো কোনও কারণে তারও মুড অফ ছিল। সেও দুটো কথা শুনিয়ে দিতে ছাড়ল না। বেশ কঠিন স্বরেই বলল তাপস, একদম গালি দেবেন না বলে দিচ্ছি। আর আপনি যখন এতই বোঝেন, তাহলে ড্রাইভারের দরকার কী? নিজেই গাড়ি চালিয়ে অফিসে চলে যান। 
ব্যস, আর যাবে কোথায়। গগন ফাটিয়ে চেঁচিয়ে উঠলেন গগনবাবু, রাস্কেল। গেট আউট। চাবি রেখে এখুনি বেরিয়ে যাও। সামনের মাসে এসে সতেরো দিনের টাকা নিয়ে যাবে। 
তাপসকে বিদায় দিয়ে গগনবাবু বাকি রাস্তাটুকু ফুঁসতে ফুঁসতে গাড়ি চালিয়ে অফিসে গেলেন। অগ্নিশর্মা হয়েই লিফটে উঠলেন। সারাদিন অফিসের কাজে প্রচুর ভুলচুক হল তাঁর।   
সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে সমস্ত ঘটনা খুলে বলতেই অমনি গিন্নি আর মেয়ের মুখ হাঁড়ি। এবার কী হবে? উফ্‌ বাপি, তুমি যে কী কর না! কন্যা ক্যাটক্যাট করে কথা শুনিয়ে দিল। গিন্নিও কিছু বলার জন্য হাঁ করেছিলেন। কিন্তু তাঁকে আর সে সুযোগ দিলেন না গগনবাবু।   
ধুস, থাম তো। যাও, বাসন্তীকে একটু আদা দিয়ে চা করে দিতে বল। আরে ভাত ছড়ালে কি আর কাকতাড়ুয়া... ইয়ে, কাকের অভাব? অফিসে মুখার্জিদাকে বলে রেখেছি। একটা ভালো ড্রাইভারের খোঁজ দেবে সামনের মাসের মধ্যে। ততদিন একটু ওলা বা উবারে ম্যানেজ করে নাও না। 
কিন্তু কথাতেই আছে, ম্যান প্রপোজেজ। গড ডিসপোজেজ। মুখার্জিদার আরেকটি ড্রাইভারের খোঁজ দেওয়ার আগেই ঘটনার ঠিক ছয় মাসের মাথায় বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতো গগনবাবুর চাকরিটি নট হয়ে গেল। না। ওঁর একার নয় অবশ্য। রিশেসনের বাজার। স্বনামধন্য কোম্পানিটি গোটা পৃথিবীতে তাদের কুড়ি শতাংশ কর্মী ছাটাই করেছে। ভারতে ছাঁটাই হয়েছে মাত্র তিনশো তেত্রিশ জন। গগনবাবুও ওই দুর্ভাগাদের মধ্যে একজন। 
সবার প্রথমে যেটা তাঁর মনে এল তা হল, গাড়িটাকে বেচে দিই। একে তেলের দাম। তার উপর মেইনটেন্যান্সের খরচ। খরচা কমানোর চেষ্টা চলছে এখন চারদিক দিয়ে। এমনকী গিন্নি অবধি জিমে যাওয়া ছেড়েছেন। অবশ্য মাস পড়তেই ঠিকা কাজের এবং রান্নার লোককে ছাড়িয়ে দেওয়ার পর গিন্নিকে বাড়িতেই যা পরিশ্রম করতে হচ্ছে তা জিমে কসরতের চাইতে কোনও অংশে কম নয়। মেয়েও ব্যাজার মুখে নিজের ব্রেকফাস্ট, টিফিন ইত্যাদি বানাচ্ছে। তারপর আর পাঁচটা সাধারণ মানুষের মতো অটোর লাইনে দাঁড়িয়ে কলেজে যাচ্ছে। ভাবা যায়!  
গাড়ি বেচার কথাতে গগনবাবুর সবার প্রথমে মনে পড়ল তাঁর চার বছরের পুরনো এবং বিশ্বস্ত সঙ্গী প্যাংলা তাপসের কথা। গাড়ি সংক্রান্ত ব্যাপারে প্রচুর খোঁজখবর রাখে ছেলেটা। না বেচে যদি ভাড়া খাটানো যায়? তবে কি প্রফিট বেশি হবে? মাস গেলে কিছু থোক টাকার বড় দরকার যে। ব্যাঙ্কের পুঁজি আর কদিন? ও তো আর কুবেরের সম্পত্তি নয়। 
তাপসের বাড়িটা যেন কোথায়? বেহালা ট্রামডিপোর দিকটায় না? পাঁচটা বাজতে না বাজতেই দুবার অটো বদলিয়ে গগনবাবু এসে পৌঁছলেন একটা সরু গলির সামনে। কিছুটা আন্দাজেই একটা বাড়ির সামনে এসে থমকে দাঁড়ালেন। হ্যাঁ। এই ঠিকানা। বেল বাজিয়ে চার মিনিট অপেক্ষা করার পর দরজা খুলে বেরিয়ে এলেন এক গুঁফো ভদ্রলোক। খালি গা। পরনে লুঙ্গি। বোঝাই যাচ্ছে যে সদ্য অফিস সেরে ফিরেছেন, মুখে লেপটে আছে বিজবিজে ঘামের সঙ্গে চরম বিরক্তি।  
কাকে চাই? অবাক হয়ে তিনি জিজ্ঞেস করলেন।  
গলা খাঁকারি দিয়ে বললেন গগনবাবু, নমস্কার। আমি কি একটু প্যাংলা... ইয়ে, তাপসের সঙ্গে কথা বলতে পারি? তাপস দাস। এই বাড়িতেই ভাড়া থাকে না ছেলেটা? 
তাপস দাস? উরেব্বাবা! সে তো এখন লটারি জিতে রাতারাতি কোটিপতি মশাই! এই ভাঙা বাড়িতে সে আর কেন থাকতে যাবে? বাপ-মা নিয়ে মাসখানেক আগেই সল্টলেকের ওদিকটায় উঠে গেছে। 
গগনবাবুর মাথাটা কেমন ঘুরে উঠল। দরজার পাল্লা ধরে কোনওমতে নিজেকে সামলে নিয়ে বললেন, আ-আপনি কোন তাপসের কথা বলছেন? আরে ড্রাইভার তাপস দাস। খুব রোগা। কালো মতো। আমার গাড়ি চালাত।  
জানি রে বাবা। আর কটা তাপস আমার কাছে ভাড়া থাকত শুনি? আপনি তো দেখছি একটা আস্ত গবেট। হ্যাঁ সে-ই। বললুম না? লটারি জিতেছে মাস পাঁচেক আগে। লটারি! পাঁচ কোটি টাকার বাম্পার প্রাইজ! এখন শুনেছি ছেলেটা গাড়ির ব্যবসাই করছে। সল্টলেকে ওর নতুন ফ্ল্যাট আর অফিস। তার আন্ডারেই এখন বলে কি না কত ড্রাইভার! যান মশাই, আর বকাবেন না। একটু শুই গিয়ে। আবার তো কাল অফিসে ছোটা। আমাদের তো আর লটারি জেতার ভাগ্য নেই। ছাপোষা মানুষ হয়ে জন্মেছি, সারাজীবন ওই দশটা পাঁচটা কলমই পিষতে হবে। আসুন এবার। নমস্কার। অ্যাঁ? কী বললেন?
বাড়িওয়ালা ভদ্রলোকের চূড়ান্ত বিরক্তি অগ্রাহ্য করে এক গ্লাস জল চাইলেন গগনবাবু। তাঁর বুকের ভিতরটা সাহারা মরুভূমির মতো খাঁখাঁ করছে। ঢকঢক করে পরপর দুই গ্লাস জল গিলেও সেই তৃষ্ণা মিটল না। তারপর প্যাংলা তাপসের... থুড়ি লটারি জিতে কোটিপতি হয়ে যাওয়া মিস্টার তাপস দাসের অফিসের ঠিকানাটা কাকুতি মিনতি করে জোগাড় করে গগনবাবু জয় মা বলে একটা সল্টলেকগামী চলন্ত বাসের ভরাপেটে নিজেকে কোঁত করে সেঁধিয়ে দিলেন। 
দুই
তাপসের কার রেন্টাল এজেন্সিতে ম্যানেজারের পোস্টে কাজ মিলেছে গগনবাবুর। তাপসের এখন চূড়ান্ত ব্যস্ততা যাকে বলে। ওদিকে গড়িয়াহাটেও একটা অফিস। কোনটা ছেড়ে কোনটা সামলায়! একজন সুদক্ষ কর্মীর বড় প্রয়োজন। গগনবাবুরও চাকরির খুবই দরকার। এই বয়সে কে দেবে তাঁকে জব? সেদিন তাপসের অফিসের দরজা ঠেলে ঢুকে স্যুটেড বুটেড তাপসকে নতুন রঙের গন্ধওয়ালা ফারনিশড এয়ারকন্ডিশন রুমে বসে থাকতে দেখে বিষম খেয়েছিলেন গগনবাবু। দীর্ঘদিন অভ্যেস নেই, বাসের গাদাগাদি ভিড় ঠেলে গলদঘর্ম হয়ে অতটা পথ ছুটে আসার জন্য মাথাটাও কেমন চক্কর দিয়ে উঠেছিল। ছোকরার কি একটু করুণা হয়েছিল সেদিন তাঁকে দেখে? কিন্তু তা বলে হারামজাদা পয়সা তো বেশি দিচ্ছে না। মাত্র পনেরো হাজার পার মান্থ। একদিকে গালভরা নাম। অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার! ফুঃ! অন্যদিকে কতরকমের ম্যানেজমেন্টই যে করতে হচ্ছে। 
এই তো সেদিন, একটা পার্টিকে সময় দিয়েও গাড়ি পাঠাতে পারছেন না। কেন? না সাহেবপুত্তুর ড্রাইভার টাইমলি আসেনি। অথচ আগের দিনই ব্যাটাকে পইপই করে বলে দিয়েছিলেন গগনবাবু। এইসব লাটসাহেবগুলোকে তাপস যে কোথা থেকে জুটিয়েছে সেটাও এক বিস্ময়! ওদিকে ফোনে পার্টি গালাগালি করছে, তাদের বন্দেভারত এক্সপ্রেস মিস হয়ে যাবে। শেষমেশ আর কী করবেন, নিজেই গাড়ি চালিয়ে গেলেন। এমনিতে গাড়ি চালাতে তাঁর ভালোই লাগে। কিন্তু সে তো নিজের গাড়ি। এভাবে সামান্য কটা পয়সার বিনিময়ে অন্যের গাড়ি টানা... ভাগ্যিস বাড়িতে ভাঁওতাবাজি মেরে বলেছেন যে একটা ইন্সিওরেন্স অফিসে ম্যানেজারির কাজ পেয়েছেন। ওরা আসল কথাটা জানতে পারলে, কেলেঙ্কারি হয়ে যাবে! উফ্‌! 
আজও আবার সেই একই গণ্ডগোল। কথা দিয়েও সময়মতো আসল না ড্রাইভার ছোঁড়াটা। যতসব ওয়ার্থলেস এখানে এসেই জুটেছে। অগত্যা কী করবেন, সারাদিনের শিডিউলের দিকে একঝলক তাকিয়ে অফিসে তালা মেরে গগনবাবু নিজেই গাড়ি নিয়ে বেরলেন। প্রথমে ধর্মতলা থেকে এক পার্টিকে তুলে নিয়ে এয়ারপোর্টে পৌঁছে দিতে হবে। সেই কথামতো একটা বারো তলা বিল্ডিংয়ের নীচে ফিয়াটটা দাঁড় করাতেই মোবাইল ফোনে কথা বলতে বলতে ভিতর থেকে ব্রিফকেস হাতে একজন রোগা ও লম্বামতো লোক হনহন করে বেরিয়ে এল আর পিছনের সিটে বসে ইশারায় তাঁকে গাড়ি স্টার্ট করার নির্দেশ দিল। 
কিন্তু এ কে? এ যে... এ যে... !
গাড়ি চালাতে গিয়ে এতটা নার্ভাস জীবনেও হননি গগনবাবু। বুকটা ভয়ে ঢিবঢিব করে উঠল তাঁর। হাত দুটো শক্ত হয়ে চেপটে আছে স্টিয়ারিং হুইলের উপর। শ্যেনদৃষ্টি রাস্তায়। সামনে ভয়ানক ট্রাফিক। দুপাশ দিয়ে হুসহাস বেরিয়ে যাচ্ছে বাইক, অটো, প্রাইভেট কার। একটা অটোকে সাইড দেবেন না দেবেন না ভেবেও কীভাবে যেন ব্যাটা পাশ দিয়ে কলা দেখিয়ে চলে গেল। মুখ খারাপ করতে গিয়েও সামলে নিলেন উনি। ফোনে কথা শেষ করে গম্ভীর মুখে লোকটা সামনের দিকে তাকিয়েছে। এবার... এবার... ওহ্‌! আতঙ্কে প্রায় স্তব্ধ হয়ে গেল গগনবাবুর হৃৎপিণ্ড। কপালের রগের পাশ দিয়ে টপটপ করে গড়িয়ে নামছে ঘাম। গাড়ি চালানোয় সামান্য ভুল হলেই রেগেমেগে ছেলেটাকে কী কী যেন বলতেন উনি? বরাহনন্দন? না না। অন্যকিছু। ননসেন্স? নাকি আরও খারাপ গালাগালি? আহ্‌, আজ সব গুলিয়ে যাচ্ছে কেন?
দাঁতে দাঁত চেপে স্টিয়ারিং আঁকড়ে গগনবাবু অপেক্ষা করছেন কখন বোমাটা ফাটবে, সেজন্য। আর পিছনের সিটের গদিতে আয়েশ করে ডুবে থাকা গগনবাবুরই ভূতপূর্ব ড্রাইভার তাপস, থুরি, প্যাংলা তাপস আবার নিজের স্মার্টফোনের স্ক্রিনে মুখখানা গুঁজে দিতে দিতে শুধু একবার মুচকি হাসল। 
01st  September, 2024
মেঘ ও বৃষ্টি
সোমজা দাস

সকালে ঘুম ভেঙেই মোবাইল ফোনটা হাতে টেনে নেওয়া অরণ্যর দীর্ঘদিনের অভ্যেস। সেভাবেই বিছানায় বসে থাকে কিছুক্ষণ। সোশ্যাল মিডিয়ার টাইমলাইন ঘাটে। মেসেজবক্স চেক করে। রূপসা রাগ করে। বলে, এটা নাকি একটা মানসিক সমস্যা।      বিশদ

গুপ্ত রাজধানী: কালকা মন্দির
সমৃদ্ধ দত্ত

চারদিকে এত লালের বন্যা কেন? লাল শালু। লাল উড়নি। জরি দেওয়া লাল কাপড়। লাল পাগড়ি। লাল দোপাট্টা। লাল ফুল। লাল সিঁদুর। এই নিরন্তর লাল বন্দনার পিছনে কি তাহলে রক্তের প্রতীকী ভূমিকা আছে? একটি তথ্যসূত্র সেরকমই বলছে। বিশদ

অতীতের আয়না: নতুন পোশাক ও জাদুকর কারিগর
অমিতাভ পুরকায়স্থ 

ঢাকে কাঠি পড়ে গিয়েছে। নতুন জামাকাপড় কেনাও হয়ে গিয়েছে সকলের। কলকাতা গড়ে ওঠার দিনগুলিতে সুতানুটির তালুকদারি পেয়ে মহারাজ নবকৃষ্ণ নানা পেশার মানুষ এনে সেখানে বসালেন। কুমোরদের থাকার এবং কাজ করার আলাদা জায়গা হল। বিশদ

এক আকাশ
দীপারুণ ভট্টাচার্য

আকাশ আজ আত্মহত্যা করবে। কাজটা সে গতকালই করতে পারত। করেনি কারণ ঘটনাটা কলকাতায় ঘটলে বাবা-মা সহ্য করতে পারতেন না। একদিকে পুত্রশোক অন্যদিকে টিভি চ্যানেলের নির্লজ্জ প্রশ্নবাণ! আকাশের তো কারও উপর অভিযোগ নেই। বিশদ

29th  September, 2024
গুপ্ত রাজধানী: দাদি-পোতি মকবরা
সমৃদ্ধ দত্ত

এটা বেশ মজার তাই না দাদি? আমাদের কেউ চিনবে না! বিশদ

29th  September, 2024
সিমলার ভৌতিক টানেল
সমুদ্র বসু

অন্ধকার একটা টানেল। স্যাঁতস্যাঁতে শ্যাওলা ধরা দেওয়াল। টানেলের ভেতরে ঢোকার কিছুক্ষণ পরেই শুরু হয় জল পড়ার আওয়াজ। সঙ্গে কিছু ‘অন্য’ আওয়াজও কানে আসে। না, এটা কোনও ভৌতিক সিনেমার প্লট নয়। খোদ ভারতের বুকেই রয়েছে এমন একটি ‘ভূতুড়ে’ টানেল। বিশদ

29th  September, 2024
নিভাননী দেবী
ঝিমলি নন্দী

হারাধন দাসের বাড়িটা পিছাবনি গ্রামের দক্ষিণদিকের শেষ প্রান্তে জোড়া পুকুরের ধারে। বাড়িটা পাকা বটে তবে না ছিরি না ছাঁদ। যখন যেমন ঘর দরকার হয়েছে,  তেমন করেই বাড়ানো। ভেতর দিকের উঠোনে একটা ঘরে আবার সিমেন্টের খুঁটির ওপর টালির চাল। বিশদ

22nd  September, 2024
গুপ্ত রাজধানী: দিওয়ান-ই-খাস
সমৃদ্ধ দত্ত

নভরোজ এগিয়ে আসছে। দিওয়ান-ই-আম, দিওয়ান-ই-খাস, রংমহল, খাস মহল, মোতি মহল জেগে উঠছে ক্রমেই। রং করা হচ্ছে দেওয়াল। পাঁচিল।  সামনেই বয়ে যাওয়া যমুনার প্রতিটি নৌকাকেও রং করেছে তাদের মালিকরা। বিশদ

22nd  September, 2024
অতীতের আয়না: সামাজিকতায় ভিজিটিং কার্ড
অমিতাভ পুরকায়স্থ 

কার্ডটা কীরকম হয়েছে দেখ তো।’ ফেলুদা ওর মানিব্যাগের ভিতর থেকে সড়াৎ করে একটা ভিজিটিং কার্ড বের করে আমাকে দেখতে দিল। দেখি তাতে ছাপার অক্ষরে লেখা রয়েছে Prodosh C. Mitter, Private Investigator। বিশদ

22nd  September, 2024
রাত্রিটা ভালো নয়

এটাই শেষ ট্রেন ছিল। স্টেশন থেকে বাইরে বেরিয়ে পথিক দেখল, চারদিকটা খুব ফাঁকা লাগছে। শীতকাল বলেই কী? নইলে এত তাড়াতাড়ি তো রাস্তাঘাট এমন শুনশান হয় না। তার পক্ষে অবশ্য এটা ভালোই। ভিড় থাকলে রিকশ পাওয়া দুষ্কর। আবার বেশি ফাঁকা হলেও রিকশওয়ালাগুলো সব পিটটান দেয়।
বিশদ

15th  September, 2024
ফেরা
ছন্দা বিশ্বাস 

সোপান সিগারেটে লম্বা টান দিয়ে বলল, ‘তাহলে কী ঠিক করলি?’ পরমের হাতে সিগারেটটা অসহায়ভাবে পুড়ছিল। ওরা ফ্রাঙ্কফুর্ট স্টেশনে ঢোকার মুখে বাঁ-পাশে একটা স্মোকিং জোনে দাঁড়িয়ে কথা বলছিল। কয়েকজন জার্মান যুবতী দ্রুত সিগারেট নিঃশেষ করে ভিতরে ঢুকে গেল।  বিশদ

08th  September, 2024
গুপ্ত রাজধানী: হনুমান মহারাজজি
সমৃদ্ধ দত্ত

 

সেই গল্পটা তো আমাদের সকলেরই জানা। মহাশক্তিশালী ভীম হস্তিনাপুর যাওয়ার পথে একটি জঙ্গল পেরচ্ছিলেন। তাঁর শরীরে তো একশো হাতির শক্তি। সেকথা সর্বজনবিদিত। দ্বিতীয় পাণ্ডব নিজেও সেকথা জানেন। সোজা কথায় তাঁর নিজের বাহুবল নিয়ে যে গর্ব ছিল একথাও অবগত আমরা।  বিশদ

01st  September, 2024
ছেলের সঙ্গে দেখা
সন্দীপন বিশ্বাস

বুকটা ছ্যাঁৎ করে উঠল সুভদ্রার। ঝাপানডাঙা স্টেশনে সে বসে আছে। এখানে এসেছিল এক গুরুবোনের বাড়ি। ফিরে যাচ্ছে উত্তরপাড়ায়, নিজের ঘরে। সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসছে। এখনও কয়েকটা কাক ডাকছে। কেমন ক্লান্ত স্বর ওদের। স্টেশনের শেডের ওপর বসে কাকগুলো। বিশদ

25th  August, 2024
ঘাটশিলার বীরেশ
রাজেশ কুমার

ব্যাগ বোঁচকা আর এক কিলো পুঁটিমাছ নিয়ে সকাল সকাল পড়লাম এক অশান্তিতে। হয়েছেটা কী, দু’দিনের জন্য ঘুরতে এসেছিলাম ঘাটশিলা। ঠিক ঘুরতে না বলে শনির দশা কাটাতেই বলা ভালো। অনেক দিন বেড়াতে যাব, বেড়াতে যাব ভাবলেও যাওয়া হচ্ছিল না কোথাও। কিছু না কিছু বিপত্তি এসে হাজির হচ্ছিল ঠিক। বিশদ

18th  August, 2024
একনজরে
শুক্রবার রাত থেকে ব্যাপক গঙ্গা ভাঙন গোপালপুরের কামালতিপুরে। শনিবার সকাল পর্যন্ত প্রায় আড়াইশো মিটার জমি তলিয়ে গিয়েছে গঙ্গাগর্ভে। মাসখানেকের বেশি সময় পর সবেমাত্র বন্যার জল ...

কুড়ি ওভারের ফরম্যাটে ভারতের নেতৃত্বের ব্যাটন রোহিত শর্মার থেকে এসেছে সূর্যকুমার যাদবের হাতে। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে তিন ম্যাচের টি-২০ সিরিজেও তিনিই অধিনায়ক। আত্মবিশ্বাসী সূর্য বলেছেন, ‘নতুন ...

হাওড়ার আমতা ও উদয়নারায়ণপুরে ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দাদের সাহায্যের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে এক হাজার টাকা করে দিয়েছে উত্তর হাওড়ার ১০৭টি পুজো কমিটি। ...

দুর্গাপুজোর আয়োজনের পাশাপাশি সরকারি উদ্যোগে বিসর্জনের কার্নিভাল নিয়ে প্রস্তুতিও শুরু হয়ে গেল। কার্নিভালের জন্য এবার শ্রীরামপুর শহরকে নির্বাচন করা হয়েছে। গতবছর জেলা সদর চুঁচুড়ায় কার্নিভালের ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

ব্যবসায় বেচাকেনা বেশ ভালো হবে। কাজকর্মে কোনও প্রভাবশালী ব্যক্তির আনুকূল্য লাভ ও ভাগ্যোন্নতি। ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

১৭০২ - ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গে প্রথম ব্রিটিশ পতাকা উত্তোলন হয়
১৭৬৯ - ক্যাপটেন কুক নিউজিল্যান্ডে পদার্পণ করেন
১৮৬০ - ভারতীয় দণ্ডবিধি আইনে পরিণত হয়। তবে এর কার্যকারিতা শুরু হয় ১ জানুয়ারি ১৮৬২ সালে
১৮৮৯- মার্কিন আবিষ্কারক টমাস আলভা এডিসন প্রথম মোশন পিকচার প্রদর্শন করেন
১৮৯৩-জ্যোতির্পদার্থবিজ্ঞানী মেঘনাদ সাহার জন্ম
১৯৩০ - অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার তথা ধারাভাষ্যকার রিচি বেনোর জন্ম
১৯৩৩ - কবি অলোকরঞ্জন দাশগুপ্তর জন্ম
১৮৪৪- বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর জিতান রাম মাঝির জন্মদিন
১৯৪৬- অধুনা পাকিস্তানের পেশোয়ারে জন্মগ্রহণ করেন অভিনেতা, প্রযোজক ও রাজনীতিক বিনোদ খান্না
১৯৪৬ -ইংরেজ ক্রিকেটার ও ক্রিকেট ধারাভাষ্যকার টনি গ্রেগের জন্ম
১৯৫৬- প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী তথা রাজনীতিবিদ পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জন্মদিন
১৯৬৩- অভিনেতা সঞ্জয় মিশ্রের জন্মদিন
১৯৭৬-পরপর দু’টি বিস্ফোরণে আটলান্টিক মহাসাগরে ভেঙে পড়ে কিউবার বিমান। মারা যান ৭৩ জন।



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৮৩.১৩ টাকা ৮৪.৮৭ টাকা
পাউন্ড ১০৮.৫০ টাকা ১১২.০৬ টাকা
ইউরো ৯১.০৪ টাকা ৯৪.২২ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
05th  October, 2024
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৭৬,২০০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৭৬,৬০০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৭২,৮০০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৯২,৪০০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৯২,৫০০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]
05th  October, 2024

দিন পঞ্জিকা

২০ আশ্বিন, ১৪৩১, রবিবার, ৬ অক্টোবর ২০২৪। তৃতীয়া ৫/৪৩, দিবা ৭/৫০। বিশাখা নক্ষত্র ৪৬/৩৫, রাত্রি ১২/১১। সূর্যোদয় ৫/৩৩/২২, সূর্যাস্ত ৫/১৬/১৪। অমৃতযোগ প্রাতঃ ৬/২০ গতে ৮/৪০ মধ্যে পুনঃ ১১/৪৯ গতে ২/৫৭ মধ্যে। রাত্রি ৭/৪৫ গতে ৯/২৩ মধ্যে পুনঃ ১১/৪৯ গতে ১/২৭ মধ্যে পুনঃ ২/১৭ গতে উদয়াবধি। মাহেন্দ্রযোগ দিবা ৩/৪৪ গতে ৪/৩১ মধ্যে। বারবেলা ৯/৫৭ গতে ১২/৫৩ মধ্যে। কালরাত্রি ১২/৫৭ গতে ২/২৯ মধ্যে।  
১৯ আশ্বিন, ১৪৩১, রবিবার, ৬ অক্টোবর ২০২৪। চতুর্থী অহোরাত্র। বিশাখা নক্ষত্র রাত্রি ১০/১৮। সূর্যোদয় ৫/৩৩, সূর্যাস্ত ৫/১৮। অমৃতযোগ দিবা ৬/২৯ গতে ৮/৪৮ মধ্যে ও ১১/৪৬ গতে ২/৪২ মধ্যে এবং রাত্রি ৭/৩০ গতে ৯/১৩ মধ্যে ও ১১/৪৩ গতে ১/২৮ মধ্যে  ২/১৯ গতে ৫/৩৪ মধ্যে। মাহেন্দ্রযোগ দিবা ৩/২৭ গতে ৪/১২ মধ্যে। বারবেলা ৯/৫৮ গতে ১২/৫৪ মধ্যে। কালরাত্রি ১২/৫৮ গতে ২/৩০ মধ্যে। 
২ রবিয়স সানি।

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
ধর্মতলায় আমরণ অনশনে যোগ দিলেন ডাক্তার অনিকেত মাহাতো

11:48:00 PM

পথ দুর্ঘটনায় আহত ৫ জন
পথ দুর্ঘটনায় আহত হল এক বাইক আরোহী সহ ৫ জন। ...বিশদ

11:02:00 PM

দুর্গাপুরে মার্কনী পুজো মণ্ডপে মানুষের ঢল

10:56:00 PM

প্রথম টি-২০: ৭ উইকেটে বাংলাদেশকে হারাল ভারত

10:44:30 PM

মেঘালয়ের গারো পাহাড়ে ধস, বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৫

10:41:00 PM

লখনউতে নয়া অবতারে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ, খেললেন ক্রিকেট

10:18:00 PM