Bartaman Patrika
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
 

পাগল হাওয়া
দেবজ্যোতি মিশ্র

কবি, গীতিকার, সুরকার, সঙ্গীতকার... কোনও বিশেষণই তাঁর জন্য যথেষ্ট নয়। তিনি সলিল চৌধুরী। শতাব্দী পেরিয়েও বাঙালি জীবনের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িয়ে তাঁর গান। জন্মশতবর্ষের সূচনায় ‘গুরুবন্দনা’য় কলম ধরলেন দেবজ্যোতি মিশ্র

দেবজ্যোতি মিশ্র
 ভারতবর্ষের সঙ্গীতের মানচিত্রে রবীন্দ্রনাথ, নাকি বলব বাংলা সঙ্গীতের মানচিত্রে রবীন্দ্রনাথ এবং তাঁর ঠিক পরেই একটা ছেদ, একটা ডিপার্চার, একটা ফুল স্টপ। সলিল চৌধুরী। তার মানে এ তো নয় যে সেই  সময় আর কোনও কম্পোজাররা কাজ করেননি, নিশ্চয়ই করেছেন,কিন্তু সলিল চৌধুরী নিয়ে এলেন সঙ্গীতে একদম নতুন একটা দিক, এক অনন্য স্ট্রাকচার,  ফরম্যাট, অর্থাৎ  আঙ্গিক। সেই আঙ্গিকে এল একটা অনবদ্য পরিবর্তন যা আমরা রবীন্দ্রোত্তর যুগের বা তাঁর সমসাময়িক কোন কম্পোজারের মধ্যে পাইনি। কী ছিল তাঁর সঙ্গীতে? ছিল সারা ভারতবর্ষের সমস্ত প্রদেশের গান। পশ্চিমী সঙ্গীত এবং  অবশ্যই তাঁর নিজস্ব বোধ। ছিল তাঁর সময়কাল, যে সময়কালে তিনি দাঁড়িয়ে আছেন, তাঁর ঐতিহ্য এবং সেই ঐতিহ্যকে ভেঙে বেরনো, যে কারণে একটা ছেদ, যে কারণে একটা ফুল স্টপ। রবীন্দ্রনাথের উত্তরসূরী হিসেবে সলিল চৌধুরীর গানের স্ট্রাকচার কেন গণ্য হবে? কেন বলা হবে যে এটা একটা আমূল পরিবর্তন? এটা সেই পরিবর্তন  যা তিনি তাঁর পরবর্তী সময়ে বয়ে নিয়ে যাবেন। গণসঙ্গীতের প্রসঙ্গে সলিল চৌধুরী বার বার একটা কথা বলেছেন যে ‘আমরা কাজীদার ঝাঁকের মাছ’। মানে নিজেকে  ‘আমাদের’ বলেছেন। ‘আমি’ কাজীদার ঝাঁকের মাছ বলছেন না। এইটা খুব জরুরি । কাজীদার ঝাঁকের মাছ হয়েও গণসঙ্গীতের স্ট্রাকচারে সলিল চৌধুরীর মধ্যে  আমরা এমন কতগুলো মিউজিক্যাল প্রোগ্রেশন পেলাম  যা কিন্তু ঠিক তাঁর আগে কখনও ছিল না। অর্থাৎ কাজী নজরুল ইসলামের যা গণসঙ্গীত বা রবীন্দ্রনাথের যা জাগরণের সঙ্গীত , তাতে এই জিনিস পাওয়া যায়নি। এখানে আমরা পেলাম ইউরোপীয়ান রেনেসাঁ , পেলাম বেঠোফেনের ফিফথ সিম্ফনি, যা জারিত করছে সলিল চৌধুরীকে, প্রত্যক্ষভাবে নয়, একটা ইন্সপিরেশন হিসেবে। একটা হারমনিক প্রোগেশন পেলাম যা  সুরের মধ্যেই একটা মেলোডি, অর্থাৎ মোনোলিনিয়র  সুরের মধ্যেই সেই প্রোগ্রেশন থাকছে,  শুধু গাইলে পরেই সেই হারমনিটা তৈরি হয়,বোঝা যায় যে এটি সব রকমের গানের মধ্যে থেকে, সে তাঁর সমকালীন গণসঙ্গীত হোক বা তার আগেও যারা কম্পোজ করেছেন, একেবারে যদি জ্যোতিরিন্দ্র মৈত্র থেকে ধরি, প্রত্যেকের গানের থেকে একেবারে আলাদা। চারের দশকে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শেষ  এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ আসছে সেখানে দাঁড়িয়ে একজন মানুষ শুধু ভাষা নয় তাঁর প্রতিবাদের স্বর, প্রতিবাদের সঙ্গীত কিরকম হয়ে উঠবে, তা তৈরি করলেন। শব্দের বাইরে সঙ্গীতের নিজস্ব যে স্বর তার উচ্চারণ তৈরি হল। যাকে আমরা আবার দেখতে পেলাম আমাদের ঠিক এই সময়ে এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে। এই মুহূর্তে সারা পৃথিবী জুড়ে যে যুদ্ধ, আমাদের দেশে যে যুদ্ধগুলো চলছে সেই সমস্ত রকম যুদ্ধ। ধর্মের যুদ্ধ, সংস্কৃতির যুদ্ধ। সংস্কৃতির যুদ্ধ কথাটা হয়তো ঠিক হল না, আমি সেই যুদ্ধের কথা বলতে চাইছি যে যুদ্ধ মানুষ কে সংস্কৃতি বিচ্যুত করে। আমাদের চারিদিকে এই যে নীতি বোধের অভাব যা আমাদের ভেঙে দিচ্ছে,আমাদের মধ্যে  বিভেদ তৈরি করছে সেই বিভেদের জায়গায় দাঁড়িয়ে দেখতে পাচ্ছি আবার ‘পথে এবার নামো সাথী’ ‘ঢেউ উঠছে কারা টুটছে’ কিংবা ‘প্রতিবাদের ভাষা’ , বা ‘হেই সামালো ধান হো’ আবার সমস্বরে গাওয়া হচ্ছে। চাষির শস্যের জন্য যে ব্যথা, তার যে স্ট্রাগল এবং প্রতিবাদ সেখানে দাঁড়িয়ে ‘হেই সামালো ধান হো’ সফল একটা গান। সেই ব্যথা, সেই কষ্ট কোথাও মিলে মিশে একাকার হয়ে যাচ্ছে এই ঘটমান মুহূর্তের সঙ্গে। আমাদের আর জি করের ঘটনা নিয়ে সারা পশ্চিমবঙ্গের শহর কলকাতা ছাড়াও গ্রামে মফস্বলে  আধা শহরে , সর্বত্র যা হয়েছে তার নব্বই শতাংশ গান সলিল চৌধুরীর গান । সুতরাং মনে হয় সলিল চৌধুরীর গানের শক্তি অসীম এবং কালোত্তীর্ণ  হয়েছে । চারের  দশকে বা পাঁচের দশকের প্রথম দিকে লেখা  কোনও গান  যখন শতাব্দী পেরিয়ে আজও তরুণ তরুণী গেয়ে ওঠে, প্রতিবাদের মুহূর্তে তাদের কন্ঠ যখন আজ ও  সলিল চৌধুরীর  আলোর পথযাত্রী বা আমার প্রতিবাদের ভাষার শরণ নেয় , আমার মনে হয় এটাই প্রকৃত গণসঙ্গীত। এ গানের কথা তো শুধু লিরিক মাত্র নয় এই কথা শিল্পীর জীবনের সঙ্গে যোগাযোগ। তাই  এটা আমার কাছে ভীষণ বড় একটা ব্যাপার বলেই মনে হয়।
সুরকার ও গীতিকার সলিল চৌধুরী—এ কথা বললেই সঙ্গীতকার সলিল চৌধুরী যেন কোথাও ম্লান হয়ে যান। আসলে সলিল চৌধুরী একজন কবি এবং গীতিকার। সব কবিই গীতি ভাষ্য লিখতে পারেন না অর্থাৎ সঙ্গীতে কিংবা সুরে কথা বসিয়ে তাকে গীতের উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারেন না, তাই একজন কবি ও গীতিকার সলিল চৌধুরী তাঁর প্রতিটি গানে থাকেন। সঙ্গীতকার না হলে এই যে গানের আগে অনবদ্য সব  প্রিলিউড ইন্টারল্যুড, অর্থাৎ গানের আগে যে সুর, যেখানে কথা নেই বা গানের অন্তর্বর্তী অংশে যেখানে কথা নেই, সেখানের গল্পে তো ফাঁক পড়ে যায়, সলিল চৌধুরী গানের সেই অংশটুকুও পরম যত্নে তৈরি করতেন। কি অনবদ্য! কি অনন্ত প্রাণ সেই সব সুরে! তার গানের গা বেয়ে যেসব সুরের নদী বয়ে যায়, যাকে পশ্চিমী সঙ্গীতের ধারণায় বলে অবলিগেটো, হারমনি, কাউন্টার পয়েন্ট সেসব ছাড়া সলিল চৌধুরী হয় নাকি! তাই ভারতবর্ষের সঙ্গীতের ধারায় সলিল চৌধুরী অনেকগুলো নামের পাশে বসে যেতে পারে না । তিনি অনন্য, কারণ তিনি অন্যতম সঙ্গীতকার। তাঁর সহযাত্রী আরও যাঁরা সঙ্গীতকার, তাঁদের থেকে তিনি আলাদা কোথায় সেটা আমাদের বুঝে নিতে হবে। বিস্ময়কর শচীনদেব বর্মণ,  মদনমোহন, হিমাংশু দত্ত বা সুধীন দাশগুপ্ত বা আরও যাঁরা ছিলেন তাঁদের থেকে কোথায় তফাৎ গীতিকার, সুরকার ও কবি সলিল চৌধুরীর।
শতবর্ষের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে নানান কথা মাথায় উঁকি দিয়ে যাচ্ছে। অনেক অনেক  ভাবনা আমার। সেই সতেরো বছর বয়স থেকে মুগ্ধ বিস্মিত হয়ে বোঝবার চেষ্টা করেছি সলিল চৌধুরীর গানের মাহাত্ম্য। এই মাহাত্ম্য বুঝতে গেলে যে বিদ্বজন হতে হয়, বিদগ্ধ মানুষ হতে হয়, তা নয়। যে কোনও সাধারণ মানুষের মনেও সলিল চৌধুরীর গান মায়া বুনে দিয়ে যেত। সলিল চৌধুরীর গানের ভেতরে সবচেয়ে লক্ষ্যণীয় হচ্ছে তার আলো। এমনকী যে গানে বিষাদ ধরা দেয়, মেঘ ছায়া ধরা দেয়, তাও আকুল অপেক্ষায় থাকে অন্ধকার টানেলের শেষে অদূরেই আলো দেখবে বলে, তিনি আলোর সহযাত্রী, আলোর পথযাত্রী। রবীন্দ্রনাথ ছিলেন আলোর উপাসক। সলিল চৌধুরী তাঁর সুযোগ্য ভাবশিষ্য। আমরা প্রায়ই শুনে থাকি  রবীন্দ্রনাথ যখন মারা গিয়েছেন, তখন সলিল চৌধুরী অশৌচ পালন করেছিলেন। আমাকে সলিলদা বলতেন ‘জানিস রবীন্দ্রনাথ না থাকলে আমরা কেউই কিছু হতাম না। তিনি না থাকলে বাঙালি জগতের সংস্কৃতি,  যে সংস্কৃতি একটা সময় ভারতবর্ষকে মগ্ন করেছিল চিন্তাশীল ব্যক্তিদের, সঙ্গীতকারদের, অন্তত সেই বাংলা সংস্কৃতি তো হতোই না। সংস্কৃতির জায়গাটাই তৈরি হতো না। এটা সলিলদা বার বার বলতেন। আমাদের ধরে নিতে হবে এই জায়গাটা ঠিক কি। রবীন্দ্রোত্তর যুগের আলোর উপাসক  হয়েও তাঁর আলোর যাত্রাপথটা ছিল ভিন্ন। একটা ছেদ, একটা ডিপার্চার । একটা ফুল স্টপ দিয়ে শুরু হয় এই যাত্রা। পিতার হাত ধরে দাঁড়িয়ে পুত্র বলছেন—আমি তোমার পুত্র। আমি তোমার আশীর্বাদ নিয়ে ভিন্ন পথে যাচ্ছি। কারণ আমার পৃথিবীতে দুর্ভিক্ষ লেগেছে, মড়ক লেগেছে , বিশ্বযুদ্ধে ছারখার হয়ে গেছে আমার এই পৃথিবী। আমার পৃথিবীতে এত আলো নেই এখন। এখানেই উত্তরাধিকার আর এখানেই ছেদ। কিন্তু বার বার করে রবীন্দ্রনাথের কাছে তিনি তাঁর ঋণ স্বীকার করেছেন।
বিষয় আর আঙ্গিক—সলিল চৌধুরীর গানে এই জায়গাটা নিয়ে বলতে গেলে সবচেয়ে বড় যে জায়গাটা আসে সেটা হল গণসঙ্গীতের সুরে এমন কিছু মিউজিয়াল স্ট্রাকচার তৈরি করতে পেরেছিলেন যা চারের দশক থেকে শুরু করে ২০২৪ এ রাস্তায় আমাদের এই সময়ের বিপ্লবেও তাঁর গানগুলো গনগনে আগুনের মতো হয়ে রয়েছে। যা শুনলে মনে হয় এই তো গতকাল সবে আগুনে আঁচ দেওয়া হয়েছে। এর কোনও কোনও গান যে অশীতিপর, কারুর বয়স সত্তর বা তার ওপারে তা মনে হয় না। তার মানে চারের দশকের নৌ বিদ্রোহের পটভূমির গান “ঢেউ উঠছে কারা টুটছে” বা পথে এবার নামো সাথী বা কৃষক আন্দোলনের হেই সামালো ধান হো, আজও একইরকমভাবে প্রাসঙ্গিক। কিন্তু ওই সময়েই আরও যারা সঙ্গীতকার ছিলেন যারা গণনাট্যে এসেছিলেন বিপ্লবে শামিল হবেন বলে, তাদের কাছে বিপ্লবের বিষয়টা মুখ্য ছিল ,কিন্তু গান গুলো রয়ে গেল সলিল চৌধুরীর। এটা এক বিস্ময় আর এই বিস্ময়  আবিষ্কার করা যায়না। এটা সেই শিল্পী , কবি  সেই  সঙ্গীতকারই জানেন যে তাঁর নিজস্ব ফর্মের  মধ্যে  কিরকম ভাবে তিনি অনেক বড়  সময়কে ধরতে পারবেন যা, কালোত্তীর্ণ হবে। আসলে তিনি নিজেও বোধহয় পুরোটা জানেন না। এ সৃষ্টি ‘হয়ে ওঠে’। আর এই হয়ে ওঠার প্রক্রিয়াটা আমরা শুধু দেখতে পারি মাত্র, বিস্মিত হতে পারি । এটা বলা যায়না । এটা সলিল চৌধুরীর গানের বিশেষ করে  তাঁর গণনাট্যের গানের একটা সাংঘাতিক  জায়গা।
আজ যখন বসে ভাবি, দেখি যে স্মৃতির কত দাগ রয়ে গেছে সমস্ত চেতনা জুড়ে। আটের দশকের সেই সময়টা, যখন সলিলদার ছায়াসঙ্গী হয়ে দিন কেটেছে। সারাদিন,  সকাল থেকে সন্ধে পার করে শুধু গান, শুধু সুর। সলিলদার মুখ থেকে কত গল্প শুনেছি, কত স্মৃতি সঞ্চয় করেছি, সেগুলোই যেন আজ আমার জীবনের মূলধন। সলিল দা বলতেন গরফার সেই বাড়ির কথা ,গীতা মুখার্জি কি অপূর্ব গাইতেন!  সেখানে অভিজিৎদা, প্রবীরদা, অনলদা—সবাই মিলে আড্ডা, গান। সেখানেই তৈরি হয়েছিল “পথে এবার নামো সাথী,” “ধিতাং ধিতাং বোল”-এর মতো গান। এসব গান ছিল যেন আন্দোলনের মশাল। কোরাসের প্রয়োগে, হারমোনির বৈচিত্র্যে সলিলদা এমন কিছু করতেন, যা আগে কেউ কখনও শোনেনি।
শুনতে যেমন লাগে আসলে সবটাশএত সহজ ছিল না অবশ্য। মিটিং-এর জন্য গান, কৃষকদের জন্য গান—সবই সিঙ্গল রিড হারমোনিয়ামে তৈরি হয়েছে। মফস্বলের মাঠে, গ্রাম-গঞ্জের সমাবেশে গান গাইতে গাইতে কখন যেন বোঝার আগে গানই হয়ে উঠল আন্দোলনের ভাষা ।
একবারের কথা মনে পড়ে, সলিলদা বলেছিলেন যাদবপুরে কলেজের এক অনুষ্ঠান হবে, সলিলদার দল গাইবে, তারপরে পঙ্কজ মল্লিকের গান। তিনি সরাসরি বলেছিলেন, “তোমাদের ওই হইচই গানের পরে আমার গান টিঁকবে না। আমি বরং আগে গেয়ে নিই।”  এ কথা শুনলে বোঝা যায়, ওঁদের গানের প্রভাব কতটা গভীর ছিল।
সলিলদার গল্পগুলো আরও গভীর। কোদালিয়ার স্মৃতি। বিদ্যাধরী নদীর নোনাজলে ভেসে যাওয়া জমি। ভূমিহীন কৃষকদের আর্তনাদ। সেখান থেকেই তাঁর গান। “বিচারপতি তোমার বিচার করবে যারা”—এই গান তো সেখানেই জন্ম নিয়েছিল। রংপুর ছাত্র সম্মেলনে দশবার গাইতে হয়েছিল। তিনি বলতেন, এই গান তাঁর জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল।
তবে এসবের মাঝে শহরের এলিটরা সবসময় এই গানকে ছোট করে দেখেছে। তারা সন্দেহ ছিল যে কীর্তন ভেঙে আদৌ বলিষ্ঠ গান করা যায় কি না। কিন্তু কৃষকের, শ্রমিকের কাছে এই গান ক্রমশ তাদের ভাষা হয়ে উঠছিল। তাদের তাগিদ সলিলদাকে দিয়ে আরও গান তৈরি করিয়ে নিত।  
 স্মৃতি ঘুরে ফিরে আসে। সন্দেশখালির কৃষক সম্মেলন।তখনও গান তৈরি হয়নি। ভাটিয়ালি সুরে চারটে লাইন লিখে গাইতে হয়েছিল। তৎক্ষণাৎ লেখা সেই গান থেকে শুরু হয়েছিল যে যাত্রা, তা কখনো থামেনি।
আজ যখন ভাবি, মনে হয়, গান তখন শুধু সুর ছিল না। গান ছিল অস্ত্র, গান ছিল প্রতিবাদের ভাষা। কিন্তু এই পথও সহজ ছিল না। কত গান হারিয়ে গেছে। “জনান্তিক” আর “সংকেত” নাটকের পান্ডুলিপি আজ আর পাওয়া যায় না। এসব ভেবে সলিলদার মুখে এক অদ্ভুত বিষণ্নতা দেখতাম।
তাঁর হারিয়ে যাওয়া গানগুলো যেন তাঁর সন্তানের মতো ছিল। আজ বুঝতে অসুবিধে হয় না,যে কোনো মৌলিক সৃষ্টির সঙ্গে যে আবেগ জড়িয়ে থাকে, সেই সৃষ্টি হারিয়ে গেলে কতখানি যন্ত্রণা হয়।
“প্রান্তরের গান আমার, মেঠো সুরের গান আমার
হারিয়ে গেল কোন বেলায়, আকাশে আগুন জ্বালায়।”
এই গান যেন সলিলদার অন্তরের  আবেগের ভাষা। একটা গোটা সময়, একটা আন্দোলন, একজন মানুষ—সবকিছু মিলেমিশে গড়ে তুলেছিল তাঁর গান। আর সেই গান আজও বয়ে  চলেছি আমাদের স্মৃতির পাতায়।
ছবি সৌজন্যে : সুব্রত ভট্টাচার্য
 
24th  November, 2024
অজানা আতঙ্ক ডিজিটাল অ্যারেস্ট
সৌম্য নিয়োগী

পুলিস নেই, হাতকড়া নেই, গারদ নেই... স্রেফ ইন্টারনেট যুক্ত কম্পিউটার বা ট্যাবলেট নিদেনপক্ষে একটা স্মার্টফোন থাকলেই ব্যস— ইউ আর আন্ডার অ্যারেস্ট থুড়ি ডিজিটাল বিশদ

15th  December, 2024
আজমিরের দরবারে
সমৃদ্ধ দত্ত

 

আজমির দরগায় কি মহাদেবের মন্দির ছিল? আচমকা এমন এক প্রশ্ন ঘিরে তোলপাড় দেশ। যুক্তি, পাল্টা যুক্তির মধ্যেই ইতিহাসের পাতায় চোখ বোলাল ‘বর্তমান’ বিশদ

08th  December, 2024
উমা থেকে দুর্গা

বিভূতিভূষণের সেই দুর্গা বইয়ের পাতা থেকে উঠে এল সত্যজিতের ছবিতে। সারা জীবনে একটি ছবিতে অভিনয় করে ইতিহাস হয়ে আছেন। কিন্তু নতুন প্রজন্ম মনে রাখেনি তাঁকে। ১৮ নভেম্বর নিঃশব্দে চলে গেলেন তিনি। ‘পথের পাঁচালী’-র দুর্গা, উমা দাশগুপ্তকে নিয়ে লিখেছেন সুখেন বিশ্বাস।
বিশদ

01st  December, 2024
হারানো বইয়ের খোঁজে

সন্দীপদা, মানে ‘কলকাতা লিটল ম্যাগাজিন লাইব্রেরি ও গবেষণা কেন্দ্রের’ স্থাপক এবং লিটল ম্যাগাজিন সংগ্রাহক সন্দীপ দত্ত চলে গেছেন প্রায় দেড় বছর হল। বছর চারেক আগে খোলামেলা এক আড্ডায় সন্দীপদা বলেছিলেন, “৭২এ স্কটিশে বাংলা অনার্স পড়ার সময় আমি মাঝেমাঝেই ন্যাশনাল লাইব্রেরিতে যেতাম। মে মাসের একটা ঘটনা। … দেখলাম বহু পত্রিকা একজায়গায় জড়ো করা আছে।
বিশদ

17th  November, 2024
ট্রাম্পের আমেরিকা
মৃণালকান্তি দাস

‘ইফ হি উইনস’, এই শিরোনামেই টাইম ম্যাগাজিন গত মে মাসে সংখ্যা প্রকাশ করেছিল। সেই সংখ্যায় সাংবাদিক এরিক কোর্টেলেসা জানিয়ে দিয়েছিলেন, প্রেসিডেন্ট হওয়ার পথে বহুযোজন এগিয়ে গিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিশদ

10th  November, 2024
ভাইজানের বিপদ
সমৃদ্ধ দত্ত

এই গ্রুপটাকে সবাই একটু ভয় পায়। কলেজের মধ্যে এই চারজন সর্বদাই একসঙ্গে থাকে। পাঞ্জাব ইউনিভার্সিটির ক্যান্টিনে চলে আসে দুপুর গড়াতেই। আর সেখানেই তাদের ঘোরাফেরা সবথেকে বেশি। হুড খোলা একটা মাহিন্দ্রা জিপ চালায় যে, তার আসল নাম বলকারান ব্রার। বিশদ

03rd  November, 2024
কাজীর কালীবন্দনা
সায়ন্তন মজুমদার

ভয়ে হোক বা ভক্তিতে, মা কালীর মধ্যে কিন্তু একটা ব্যাপার আছে। যে কারণে কেরেস্তানি কবিয়াল অ্যান্টনি ফিরিঙ্গি সাহেবের লেখা পদেও ‘শ্যামা সর্বনাশী’কে পাওয়া যায়, শোনা যায় ‘জয় কালীর ডঙ্কা’। আবার ত্রিপুরার নারায়ণপুরের মৃজা হুসেন আলিকে জয় কালীর নামে যমকেও তাচ্ছিল্য করতে দেখি। বিশদ

27th  October, 2024
শুভ বিজয়া
কৌশিক মজুমদার 

বিজয়ার থেকেই ধীরে ধীরে দিনগুলো, রাতগুলো কেমন অদ্ভুত ঝিমধরা ক্লান্ত লাগে। প্রতি মুহূর্তে মনে হয় যেন এবার আরও অনেক কিছু করার ছিল, জীবনপাত্র উছলিয়া ভরার ছিল। ভরা হল না।  বিশদ

20th  October, 2024
শ্রী শ্রী দুর্গা সহায়
সোমা চক্রবর্তী

১৯৮৬। তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। ছুটিতে দু’বেলা আর অন্যান্য দিন সন্ধ্যায় পড়তে বসা— এই ছিল রোজের রুটিন। পুজোর অপেক্ষায় থাকতাম সারা বছর। কারণ, আমাদের বাড়িতে নিয়ম ষষ্ঠী থেকে নবমী বই ছোঁয়া যাবে না। দশমীর দিন যাত্রা করে আবার পড়া শুরু। বিশদ

20th  October, 2024
নানা রঙের দশভুজা
দেবযানী বসু 

মহিষাসুরমর্দিনী দেবী দুর্গা! বেদ, পুরাণ, তন্ত্র, মহাকাব্য—সর্বত্র তাঁর মহিমার জয়গান। মতভেদও কম নেই। আর তা শুধু আবির্ভাব নয়, গাত্রবর্ণ নিয়েও। বেদ-পুরাণের বর্ণনায় দেবী গৌরবর্ণা, স্বর্ণবর্ণা, পীতবর্ণা, অতসীবর্ণা। বিশদ

06th  October, 2024
পুজোর টানে ফেরা
সুকান্ত ঘোষ

মহালয়ার ভোর। ঘুম থেকে উঠেই ঘরে চালিয়ে দিয়েছি ‘বীরেনবাবু স্পেশাল’। বেশ জোরে। খানিক পরেই দরজায় টোকা। খুলতেই দেখি, আমার ডানপাশের ঘরের জোসেফ ও বাঁ পাশের ঘর থেকে ফাউস্টো ঘুম ঘুম চোখে দাঁড়িয়ে। ঘরে ঢুকল দু’জনে। বিশদ

29th  September, 2024
কল্যাণীর বিভূতিভূষণ

মুরাতিপুর গ্রাম। তাঁর মামার বাড়ি। জন্মস্থানও। গ্রামটি আর নেই। সেখানেই গড়ে উঠেছে কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ১৩০ তম জন্মবার্ষিকীতে এমন অনেক অজানা কাহিনি লিখলেন সুখেন বিশ্বাস।
বিশদ

22nd  September, 2024
স্বপ্ন হলেও সত্যি
কলহার মুখোপাধ্যায়

মামা বলল, ‘আগে ভালো করে লাটাই ধরতে শেখ, তারপর ঘুড়ি ওড়াবি।’ বাবা বলল, ‘আগে ভালো করে সিট বেল্ট বাঁধতে শেখ, তারপর গাড়ির স্টিয়ারিং ধরবি।’   পাড়ার ন্যাপাদা বলল, ‘মাঠে ঠিকমতো দৌড়তে শেখ আগে, তারপর বলে পা দিবি
বিশদ

15th  September, 2024
ঘুড়ির পিছে ঘোরাঘুরি
রজত চক্রবর্তী

আরও আরও উপরে। আরও উপরে। ওই আমাদের বাড়ি ছোট হয়ে যাচ্ছে ক্রমশ। বুল্টিদের বাড়ির ছাদ ছোট্ট হয়ে গিয়েছে। দড়িতে টাঙানো বুল্টির লাল জংলা ফ্রক আর দেখা যাচ্ছে না। করদের মাঠ, পুকুর, আম-জাম-পাকুড়-লিচুগাছেদের ভিড়, বাড়িগুলো সব ছোট ছোট, শুধু ছাদের পর ছাদ।
বিশদ

15th  September, 2024
একনজরে
শুক্রবার সকালে স্কুটারের সঙ্গে ট্রাকের সংঘর্ষে মৃত্যু হল এক যুবকের। মৃতের নাম মুজাফফর বিশ্বাস (৪২)। ঘটনাটি ঘটে দেগঙ্গার কামদেবকাটিতে। পুলিস রক্তাক্ত অবস্থায় স্কুটার চালককে উদ্ধার করে হাবড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে এলেও শেষরক্ষা হয়নি। ...

মাদক কারবার থেকে চোরাচালান। মানব পাচার থেকে জঙ্গি কার্যকলাপ। সবমিলিয়ে ক্রমশ স্পর্শকাতর নেপাল ও ভুটান সীমান্ত। এজন্যই ড্রোন উড়িয়ে নজরদারি চলছে সংশ্লিষ্ট দুই সীমান্তে। একইসঙ্গে ...

সম্প্রতি শহরে তথ্য-প্রযুক্তি সংস্থা ইনফোসিসের নতুন ক্যাম্পাসের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের এই সাফল্যকে সামনে এনে প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র দাবি করলেন, বাংলায় পড়াশোনোর বহর বাড়ছে। সেই কারণেই মেধার বিস্তৃতি সম্ভব হচ্ছে। ...

শনিবার তেলেঙ্গানায় সন্তোষ ট্রফির মূল পর্বের গ্রুপ লিগে বাংলার প্রতিপক্ষ মণিপুর। সম্প্রতি ভারতীয় ফুটবলের সাপ্লাই লাইন এই রাজ্য। একাধিক ফুটবলার আইএসএলে বিভিন্ন দলের হয়ে মাঠ কাঁপাচ্ছেন। ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

কাজকর্মের ক্ষেত্রে দিনটি বিশেষ শুভ। নতুন যোগাযোগ ও উপার্জন বৃদ্ধির ক্ষেত্র প্রস্তুত হতে পারে। বিদ্যায় ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

১৮০১: শিক্ষাবিদ ও সমাজসংস্কারক প্রসন্নকুমার ঠাকুরের জন্ম
১৯১১: প্রতিষ্ঠিত হল সেন্ট্রাল ব্যাংক অব ইন্ডিয়া
১৯৫৯: ক্রিকেটার কৃষ্ণমাচারী শ্রীকান্তের জন্ম
১৯৬৩: অভিনেতা গোবিন্দার জন্ম
১৯৯৮: নোবেলজয়ী অমর্ত্য সেনকে ‘দেশিকোত্তম’ দিল বিশ্বভারতী
২০১২: পরিচালক যীশু দাশগুপ্তের মৃত্যু



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৮৪.১৩ টাকা ৮৫.৮৭ টাকা
পাউন্ড ১০৪.২৭ টাকা ১০৭.৯৮ টাকা
ইউরো ৮৬.৪২ টাকা ৮৯.৭৮ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৭৬,০০০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৭৬,৪০০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৭২,৬০০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৮৭,৪০০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৮৭,৫০০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]

দিন পঞ্জিকা

৬ পৌষ, ১৪৩১, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪। ষষ্ঠী ১৫/১৫, দিবা ১২/২২। পূর্বফাল্গুনী নক্ষত্র ৫৯/৫৫ শেষ রাত্রি ৬/১৪। সূর্যোদয় ৬/১৬/১৭, সূর্যাস্ত ৪/৫৩/১১। অমৃতযোগ প্রাতঃ ৬/৫৯ মধ্যে পুনঃ ৭/৪২ গতে ৯/৪৯ মধ্যে পুনঃ ১১/৫৭ গতে ২/৪৭ মধ্যে পুনঃ ৩/২৯ গতে অস্তাবধি। রাত্রি ১২/৫৬ গতে ২/৪৩ মধ্যে। বারবেলা ৭/৩৫ মধ্যে পুনঃ ১২/৫৩ গতে ২/১৩ মধ্যে পুনঃ ৩/৩ গতে অস্তাবধি। কালরাত্রি ৬/৩৩ মধ্যে পুনঃ ৪/৩৬ গতে উদয়াবধি। 
৫ পৌষ, ১৪৩১, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪। ষষ্ঠী দিবা ১/৫৮। পূর্বফাল্গুনী নক্ষত্র অহোরাত্র। সূর্যোদয় ৬/১৯, সূর্যাস্ত ৪/৫২। অমৃতযোগ দিবা ৭/৬ মধ্যে ও ৭/৪৯ গতে ৯/৫৭ মধ্যে ও ১২/৫ গতে ২/৫৬ মধ্যে ও ৩/৮ গতে ৪/৫২ মধ্যে এবং রাত্রি ১/৪ গতে ২/৫০ মধ্যে। কালবেলা ৭/৩৮ মধ্যে ও ১২/৫৫ গতে ২/১৪ মধ্যে ও ৩/৩৩ গতে ৪/৫২ মধ্যে। কালরাত্রি ৬/৩৩ মধ্যে ও ৪/৩৮ গতে ৬/২০ মধ্যে।
১৮ জমাদিয়স সানি।

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
জার্মানিতে বড়দিনের বাজারে গাড়ি চালিয়ে তাণ্ডব: জখমদের মধ্যে রয়েছেন সাতজন ভারতীয়

11:29:00 PM

সন্ধ্যা থিয়েটারে পদপিষ্টের ঘটনা: আমার চরিত্রহনন করা হয়েছে, বললেন অল্লু অর্জুন
হায়দরাবাদের সন্ধ্যা থিয়েটারে ‘পুষ্পা ২: দ্য রুল’ সিনেমার প্রিমিয়ারে পদপিষ্টের ...বিশদ

11:10:07 PM

ব্রাজিলে ট্রাক ও যাত্রীবাহী বাসের মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষ, হত ৩০

10:41:00 PM

রাজাহুলিতে বৃদ্ধ খুনের অভিযোগে আরও দু’জনকে মালদহের কালিয়াচক থেকে গ্রেপ্তার করল এনজেপি থানার পুলিস

10:20:00 PM

ঝাড়গ্রাম শহরে অজানা জন্তুর আক্রমণে গোরুর মৃত্যু, মিলেছে পায়ের ছাপ

10:03:00 PM

মোহালিতে নির্মীয়মান বিল্ডিং বিপর্যয়: উদ্ধারকাজে যোগ দিল ভারতীয় সেনা

09:50:00 PM