বিশেষ কোনও কর্মের আর্থিক সংস্থান নিয়ে মানসিক চিন্তা বৃদ্ধি পাবে। আর্থিক ঝুঁকি নেবার আগে দুবার ... বিশদ
প্রাচীন ফরাসি শব্দ ‘ভিন আইগ্রে’ (টক ওয়াইন) থেকে ভিনিগার শব্দটি এসেছে। শব্দটি ফরাসি হলেও বিশ্বে প্রথম ভিনিগার তৈরি ও ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া যায় প্রাচীন ব্যাবিলনীয়দের মধ্যে। প্রায় ৩০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে ডুমুর, খেজুর ও কুকিং বিয়ার দিয়ে ভিনিগার তৈরি করে তারা। ভিনিগারে থাকে অ্যাসিটিক অ্যাসিড। রান্নার ও ভেষজ উপাদান হিসেবে ভিনিগার গোটা বিশ্বেই বেশ জনপ্রিয়। বাহারি স্ন্যাক্স বা চীনে খাবার বানানোর সময় মাছ-মাংস নরম করার করার কাজ হোক, খাবারের স্বাদ বাড়ানো কিংবা স্যালাড ড্রেসিং— ভিনিগার একাই একশো! তবে শুধুমাত্র রান্নার কাজেই এই ভিনিগার ব্যবহৃত হয় না। বরং হেঁশেলে ভিনিগার থাকলে গেরস্থালির নানা কাজে তাকে সহজেই ব্যবহার করতে পারবেন। কীভাবে ঘরোয়া কাজে ভিনিগার ব্যবহার করবেন, রইল তার হদিশ।
পোকামাকড় শায়েস্তা: হেঁশেল-সহ গোটা বাড়িতেই আরশোলা, পিঁপড়ে, পোকামাকড়ের উপদ্রব হতে পারে। এক্ষেত্রে ভিনিগার হয়ে উঠবে মুশকিল আসান। সমপরিমাণ জল ও সাদা ভিনিগার একত্রে মিশিয়ে নিন। এবার ঘর মোছার আগে এই মিশ্রণ সারা ঘরে ছিটিয়ে নিন। তারপর সাধারণ জল নিয়ে ঘর মুছে নিন। এতে পোকামাকড় ও কীটপতঙ্গের উপদ্রব থেকে নিষ্কৃতি পাওয়া যায়। স্বাস্থ্যের কারণে যে কোনও রাসায়নিক তরল হেঁশেল ও ঘরে বেশি ব্যবহার না করাই ভালো। তার উপর রয়েছে বাড়তি খরচ। সেক্ষেত্রে ভিনিগার ও জলের মিশ্রণ হতেই পারে সহজ সমাধান।
চা-কফির দাগ: চা-কফি খাওয়ার সময় অসাবধানতায় পোশাকে বা বিছানার চাদরে চা-কফি পড়ে যেতে পারে। চা-কফির কড়া দাগ তুলতে যে কোনও রাসায়নিক মেশানো ডিটারজেন্টের মতোই ভিনিগার বিশেষ উপযোগী। এর অ্যাসিটিক উপাদান চা-কফির দাগ তুলতে বেশ দড়। আধ কাপ জলে সিকি কাপ ভিনিগার মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন। চা-কফির দাগ লেগে যাওয়া জায়গাটিতে এই মিশ্রণ ঢেলে ভালো করে ঘষে দিন। কিছুক্ষণ এই অবস্থায় পোশাক বা চাদরটি রেখে তারপর তা ডিটারজেন্ট দিয়ে কেচে নিলেই দাগ উধাও হবে।
ভ্যাপসা গন্ধ দূর: তেল-মশলা, মাছ-মাংস মিলে অনেক সময় রান্নাঘরে ভ্যাপসা আঁশটে গন্ধ হয়। হাতের কাছে রুম ফ্রেশনার না থাকলেও চিন্তা নেই। একটি স্প্রে বোতলে জল ভরে তাতে কিছুটা ভিনিগার ঢেলে দিন। এবার এই মিশ্রণ ঘরে স্প্রে করলে সহজেই দুর্গন্ধ দূর হবে।
ভালো রাখুন স্যস-আচার: ডাইনিং টেবিলে স্যস ও ডিপস-এর নানা সার্ভিং পট থাকে। কিন্তু বারবার ঢাকা খুলে স্যস ও ডিপস নেওয়ার ফলে অল্প দিনে সেই স্যস, ডিপস বা আচার নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এই সমস্যা এড়াতে স্যস, ডিপস বা আচার ঢালার আগে ওই পাত্রে একটু ভিনিগার দিয়ে ঢাকা বন্ধ অবস্থায় ঝাঁকিয়ে নিন। তারপর তাতে স্যস, আচার বা ডিপস রাখলে তা আর সহজে নষ্ট হবে না।
বাসন পরিষ্কার: সিকি কাপ ভিনিগারের সঙ্গে এক চামচ বেকিং সোডা ও অল্প নুন মিশিয়ে একটা মিশ্রণ তৈরি করুন। তা দিয়ে তামা ও স্টিলের বাসন সাফ করলে সহজেই সেই বাসনপত্র পরিষ্কার করা যাবে। পুরনো দাগছোপও দূর হবে।
টাটকা রাখার দাওয়াই: পালং শাক, ধনেপাতা, কাঁচালঙ্কা এগুলো দ্রুত শুকিয়ে যায়। ফ্রিজে কাগজের ঠোঙায় মুড়ে রাখলেও অনেক সময় শুকিয়ে যাওয়া প্রতিরোধ করা যায় না। চিজও ভালো করে না রাখলে তা তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়। এক্ষেত্রে সহায় হতে পারে ভিনিগার। সাদা কাপড় ভিনিগারে ভিজিয়ে নিয়ে চিজ মুড়ে রাখলে তা অনেকদিন টাটকা থাকে। তাছাড়া পালং, ধনেপাতা, লেটুস, কাঁচালঙ্কাও ভিনিগার মেশানো জলে ডুবিয়ে রেখে দিলে বেশিদিন টাটকা থাকে।
ক্ষতিকর রাসায়নিক প্রতিরোধ: বাজার থেকে কেনা ফল-শাকসব্জির মধ্যে নানা ক্ষতিকর রাসায়নিক সার মিশে থাকে। জলের মধ্যে কয়েক ফোঁটা ভিনিগার মিশিয়ে নিন। সেই মিশ্রণে ফল বা সব্জি কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখুন। এতে তার গায়ে থাকা সব রাসায়নিক বেরিয়ে যাবে।