বিশেষ কোনও পারিবারিক কারণে মানসিক দুশ্চিন্তা বাড়তে পারে। কাজকর্মের ক্ষেত্রে বিশেষ সুখবর পেতে পারেন। ... বিশদ
প্রতিদিনের ব্যস্ততায় আমাদের কর্মক্ষেত্রের পরিবেশ-পরিস্থিতির ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। উৎসব, অনুষ্ঠান এইসব কিছুকে পিছনে ফেলে ওয়ার্কপ্লেসের যে চিরপরিচিত জায়গাটিতে আমাদের প্রতিদিনের রোজনামচা, সেইখানটিতেই জীবন-দৌড়ে ক্ষণিক প্রশান্তির সন্ধানে সাজসজ্জার আবশ্যিকতা রয়েছে। কারণ শেষ পর্যন্ত ডেডলাইন এবং ‘মনডে-ব্লুজ’-এর প্রকোপ কাটিয়ে উঠে কর্মস্থলে সেরার সেরাটা দেওয়াই একধরনের অলিখিত প্রতিশ্রুতি। কোভিড পরবর্তী সময়ে আমাদের চিরচেনা ওয়ার্কপ্লেসের ধরনের যথেষ্ট রদবদল ঘটেছে। ওয়ার্ক ফ্রম অফিসের পাশাপাশি এখন সংযোজন হয়েছে ওয়ার্ক ফ্রম হোম কালচারেরও। ঘরে কিংবা ঘরের বাইরে আপনার প্রতিদিনের কাজের জায়গাটা কেমন করে নিপুণভাবে সাজিয়ে তুলতে পারেন, তার জন্য রইল টিপস।
ওয়ার্কপ্লেসের টেবিল-চেয়ারের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখাটা ভীষণভাবে প্রয়োজন। অবাঞ্ছিত ধুলোবালি এবং জীবাণু থেকে নিজেকে রক্ষা করতে ডিসইনফেক্ট্যান্ট স্যানিটাইজারের পাশাপাশি ওয়েট ওয়াইপস বা টিস্যু পেপার ব্যবহার করতে পারেন। এরই সঙ্গে আপনার ডেস্কটপ এবং ল্যাপটপের উপযুক্ত যত্ন নেওয়ারও প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। নিয়মিত আপনার ডেস্কটপ কিংবা ল্যাপটপের স্ক্রিন পরিচ্ছন্ন রাখার চেষ্টা করুন। আপনি এক্ষেত্রে স্ক্রিন-গার্ড ব্যবহার করতে পারেন এবং সপ্তাহে অন্তত একবার ওয়েট ওয়াইপস ব্যবহার করে অবাঞ্ছিত ধুলো-ময়লা মুছে ফেলতে ভুলবেন না যেন!
ল্যাপটপ কিংবা ডেস্কটপের স্ক্রিনসেভার হিসেবে ভালো কোনও ছবি নির্বাচন করুন। হতে পারে সেটা কোনও মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশের ছবি কিংবা কোনও সুন্দর বাক্যবন্ধনী। এই ধরনের ইতিবাচক চিন্তাভাবনা আপনার কাজেও উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলবে এবং কর্মক্ষেত্রে অবসাদ ও ক্লান্তি নিরসনে সাহায্য করবে।
যদি ওয়ার্ক ফ্রম অফিস করেন, সেক্ষেত্রে কিউবিকল সংলগ্ন সবুজ বা সাদা রঙা বোর্ডটিকে আপনার মনের মতো করে সাজিয়ে নিন। সুন্দর সুন্দর পোস্টার, কোটেশন কিংবা পরিবার-বন্ধুদের সঙ্গে ছবিও সেখানে রাখতে পারেন। সারাদিনের একঘেয়েমি থেকে আপনি ক্ষণিকের তৃপ্তির আস্বাদ পেয়ে যাবেন! এই একই পদ্ধতি ওয়ার্ক ফ্রম হোম যারা করছেন তাদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। বন্ধুবান্ধব, প্রিয়জনের ছবি ছাড়াও আপনার কর্মজীবনে চলার পথে উল্লেখযোগ্য কোনও প্রাপ্তির ছবিও আপনার চোখের সামনে রাখতে পারেন। এগুলো আপনাকে উৎসাহ দেবে এবং নতুন কাজে অনুপ্রেরণা দেবে।
ওয়ার্কপ্লেসে কোনও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মনে রাখার ক্ষেত্রে হাতের কাছে অবশ্যই রাখুন স্টিকি নোটস। স্টিকি নোটসে প্রয়োজনীয় তথ্য বেশ সংক্ষেপে এবং সহজে নথিভুক্ত করতে পারবেন এবং আপনার চোখের সামনেই গুরুত্বপূর্ণ তথ্য থাকায় আপনার কাজ করতেও সুবিধা হবে।
একটানা কাজের ক্লান্তি ভুলতে অযথা মুঠোফোনে সোশ্যাল মিডিয়াতে উঁকিঝুঁকি না মারাটাই কাম্য! কিঞ্চিৎ বিরতির সুযোগ থাকলে সেই সময়টা অন্যভাবেও উপভোগ করতে পারেন। কাজের টেবিলের পাশে, দু’-চারটে পছন্দের গল্পের বই রাখুন। নির্দিষ্ট সময় অন্তর বিরতিকালে অনায়াসে কয়েকটি নতুন গল্পের বই পড়ে শেষ করে ফেলতে পারবেন। এর ফলে একদিকে যেমন আপনার কর্মদক্ষতা বাড়বে, তেমনই অন্যদিকে বই পড়ার প্রতি নতুন করে শখ বা আগ্রহ তৈরি হবে।
ওয়ার্কপ্লেসের টেবিলের একপাশে ক্যালেন্ডার কিংবা ছুটির তালিকা রাখারও একটি বিশেষ কার্যকরী ভূমিকা রয়েছে। ছুটির তালিকা বা ক্যালেন্ডার থাকলে একদিকে যেমন ডেডলাইন মনে রেখে কাজের প্রতি মনোযোগী হবেন, তেমনই অন্যদিকে কাজের ফাঁকে দূরে কোথাও বেড়াতে যাওয়ার ট্রিপ প্ল্যান করার এবং সেই অনুযায়ী অতিরিক্ত মনোযোগ সহকারে কাজ শেষ করার উদ্দীপনাও পেয়ে যেতে পারেন।
কাজের টেবিলে আপনি ছোট-ছোট ইন্ডোর প্ল্যান্টও রাখতে পারেন, যেমন ব্যাম্বু ট্রি, স্নেক প্ল্যান্ট, স্পাইডার প্ল্যান্ট ইত্যাদি। কাজের পরিবেশে সবুজের উপস্থিতি আপনাকে মানসিক প্রশান্তি দিতে বাধ্য। তবে সময় সময়ে পরিমিত জল দিয়ে গাছের পরিচর্যা করতে ভুলবেন না। এছাড়াও ওয়ার্কপ্লেসে ছোট ফ্লাওয়ার ভাস রাখতে পারেন। অনায়াসেই মরশুমি ফুলের সাজে সেজে উঠবে আপনার কাজের পরিবেশ। কিছু সময়ের জন্য হলেও আপনার চিরপরিচিত একঘেয়ে পরিবেশের খানিক ছন্দবদল হবে।
পরিশেষে, যে কোনও সাজসজ্জাই আপনার রুচির পরিচায়ক। কাজেই আপনার কাজের জায়গাতেও যাতে সেই রুচি এবং পরিমিতিবোধের মাধুর্যই প্রাধান্য পায়, সেইদিকে অবশ্যই নজর দিন।