সামাজিক কর্মে সম্মান লাভ। স্ত্রী’র শরীর-স্বাস্থ্য খারাপ হতে পারে। দেরীতে অর্থপ্রাপ্তি। ... বিশদ
গরমে শুধু ঘামের জ্বালা নয়, ঘামের সঙ্গে তেল এবং ময়লা মিশে যে অবস্থা হয়, তা মুখের উপর চেপে বসে। ব্যস ত্রাহিমধুসূদন দশা। ঘাম থেকে ত্বকে নানারকম সমস্যাও দেখা যায়। র্যাশ, ব্রণ, ঘামাচি। আর এখন তো মাস্ক দিনযাপনের অঙ্গ হয়ে যাওয়ায় ঘাম এমনিতেই আরও বেশি করে আটকে থাকছে মুখে। বিশেষত কাপড়ের মাস্ক ব্যবহার করছেন যাঁরা, তাঁদের ক্ষেত্রে চাপ আরও বেশি। ঘাম সহ মুখে লেপ্টে থাকছে কাপড়ের মাস্ক।
ফলে সমস্যা আরও বাড়ছে। যখন ত্বকে ঘাম অনেক বেশি সময়ের জন্য বসে, তাতে ব্যাকটিরিয়া চলে আসতে পারে। স্কিন পোরসও বন্ধ হয়ে যায়। সময়মতো মুখ ভালো করে ধুয়ে ফেলতে না পারলে মুখে ব্রণর মতো সমস্যাও বেড়ে যায়। তাই শুধু মুখ নয়, সার্বিকভাবে গোটা দেহকেই ঘাম থেকে বাঁচাতে যতটা সম্ভব চেষ্টা করতে হবে।
মুখে হোক বা গোটা দেহে, গরমের জন্য সোয়েট গ্ল্যান্ড অনেক বেশি সক্রিয় হয়ে ওঠে। শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করতে হবে আমাদের। সেটা না করতে পারলে ঘাম হবেই। শরীরের তাপ নিয়ন্ত্রণের চেনা উপায়গুলির একটিও বাদ দেওয়া চলবে না। অর্থাৎ ছাতা, রোদচশমা, যতটা সম্ভব ত্বক ঢেকে থাকে এমন পোশাক এবং সানস্ক্রিন লোশন— এগুলোর সব ক’টি যেন গরমে বাইরে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা খেয়াল রাখি। যদি সম্ভব হয় দুপুর একটা থেকে বিকেল চারটে— বাইরে বেরিয়ে কাজ এড়ানোর চেষ্টা করাই ভালো। যাঁদের পক্ষে সেটা সত্যিই সম্ভব নয়, তাঁরা সকাল সকাল বেরিয়ে বাইরের কাজ যতটা পারেন, সেরে ফেলুন। চারটের পর আবার বাইরে বেরবেন।
এসময়ে ত্বকের যত্নের বেশিটাই কিন্তু ভিতর থেকে শরীরের যত্নের উপর নির্ভর করে। ছাতুর জল, ওআরএস বা নুন চিনি জল, ডাবের জল ইত্যাদি খেয়ে বডি হিট সামাল দিতে হবে। যতটা সম্ভব বেশি পরিমাণে তরল শরীরে নেওয়ার কথা মাথায় রাখতে হবে। ডায়েটে রাখতে হবে মরশুমি ফল অর্থাৎ তরমুজ, লেবু, শশা ইত্যাদি। অতিরিক্ত প্রোটিনযুক্ত ফল অর্থাৎ আম বেশি না খাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। কারণ এগুলো বডি হিট নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে না। তাতে ঘাম বেশি হবেই। দুপুরের খাবারে পান্তা ভাত রাখতে পারেন কখনও কখনও। এছাড়া যতটা পারা যায় হালকা খাবার খান এবং মাছ মাংস ডিম কম খান। শাকসবজি এসময় বেশি খাওয়া দরকার। দুপুরের পাতে সঙ্গে রাখুন পেঁয়াজ। কারণ পেঁয়াজ শরীরের তাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
মুখে অ্যান্টিসেপটিক জাতীয় লোশন লাগাতে পারেন যাতে র্যাশ বা ঘামাচি ইত্যাদির প্রকোপ কমানো যায়। সাবানের ক্ষার বা কেমিক্যাল এড়িয়ে হালকা বডি ওয়াশ দিয়ে সারাদিনে অন্তত দু’বার স্নান করা উচিত। স্নানের জলে ফটকিরি ফেলে নিতে পারেন, ঘাম বা দুর্গন্ধ নিয়ন্ত্রণে খুব কাজে দেয়। স্নানের পর খুব হালকা ময়েশ্চারাইজার লাগান। জেল বেসড লোশন যেগুলি আর্দ্রতা রক্ষা করে অথচ ত্বককে ভারী করে না, সেগুলোই গরমে ত্বকের জন্য আদর্শ। উন্নত মানের হার্বাল প্রোডাক্ট বেছে নিতে পারেন। এছাড়া এসময় টোনার বেশি করে লাগানো উপকারী। দরকারে আইস কিউবও ঘষতে পারেন মুখে। এর সঙ্গে সারা দিনে চেষ্টা করুন দু’ঘণ্টা অন্তর সানস্ক্রিন লোশন ব্যবহার করতে। অনেকেরই ধারণা রয়েছে, সকালবেলা মুখে সানস্ক্রিন লোশন মেখে বেরিয়ে গেলাম মানে সারাদিনই তা কাজে দেবে। এটা কিন্তু একেবারে ভুল ধারণা। দু’ঘণ্টা অন্তর না লাগালে সানস্ক্রিনের কার্যকারিতা থাকবে না। কারণ আমরা যতটা ঘামি তার সঙ্গেই ওটা রোমকূপ থেকে বেরিয়ে যায়। যদি খুব বেশি ট্যান হয়ে যায় তারপরেও, তখন পার্লার থেকে ট্যান রিমুভাল প্যাক নেওয়া ছাড়া উপায় নেই। বাড়িতে টক দই ব্যবহার করেন যাঁরা, তাঁরা খাওয়ার পাশাপাশি মুখে ডি-ট্যানের জন্যও তা লাগাতে পারেন।
পোশাকের ক্ষেত্রে খেয়াল রাখবেন টাইট ফিট জামাকাপড়দের সময় নয় এটা। কারণ তাতে ব্লাড সার্কুলেশনে আরও সমস্যা হয়। লুজ ফিট এবং হাওয়া খেলে এমন পোশাক বেছে নিন। সিন্থেটিক ফ্যাব্রিক তো একেবারেই বাদ দিন। এসময় বন্ধুত্ব রাখুন সুতির পোশাকের সঙ্গে। তোয়ালে যেমন শরীর থেকে জল শুষে নেয়, আসল সুতির পোশাকও সেভাবে ঘামের সঙ্গে ব্যাকটিরিয়াও শুষে নেয়। সহজেই আপনি ফুরফুরে থাকতে পারবেন।