ব্যবসাসূত্রে উপার্জন বৃদ্ধি। বিদ্যায় মানসিক চঞ্চলতা বাধার কারণ হতে পারে। গুরুজনদের শরীর-স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতন থাকা ... বিশদ
উত্তর: ভগবানের স্বরূপকে জানা এবং তাঁর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্বন্ধ অনুভব করা, এবং ধীরে ধীরে তাঁর ভাবেতে রূপান্তরিত হওয়া।
প্রশ্ন: ভগবানকে জানার অর্থ কী?
উত্তর: ‘জানা’ বলতে তাঁর স্বরূপ সম্বন্ধে দৃঢ় ধারণা করা। তাঁকে সর্বদা স্থির চিত্তে চিন্তা করা, আর চেষ্টা করা যাতে তাঁর গুণগুলি ধীরে ধীরে আমাদের মধ্যে প্রতিভাত হয়। তাঁকে জানা মানে, তাঁকে আত্মীয়রূপে জানা। তিনি আমাদের প্রিয় স্নেহময় পিতা স্নেহময়ী মাতা এইভাবে।
প্রশ্ন: ভগবানকে কীভাবে পাওয়া যায়?
উত্তর: তাঁকে পাবার তীব্র আকাঙ্ক্ষা নিয়ে জপধ্যান করলে পাবে। তারপর ঠাকুর বলেছেন কোন একটা বিষয় ভাব আশ্রয় করতে হয়—সাধারণত শান্ত, দাস্য, সখ্য, বাৎসল্য ও মধুর— এই ভাবগুলি আশ্রয় করা হয়।
আধুনিককালে তাঁকে মাতৃভাবেও উপাসনা করা হয়, মাতৃভাবে উপাসনার কথা সর্বত্র বলা নেই, এটি আরও আধুনিক ও পরের ভাবধারা এবং এই মাতৃভাবে উপাসনাও একটি কার্যকর উপায় বলতে পার।
প্রশ্ন: ভগবানকে পেতে হলে কি খুব কষ্ট করতে হয়?
উত্তর: হ্যাঁ, তা হবেই তো। কষ্ট না পেলে তো সবাই তাঁর দেখা পেতো, কষ্ট বলেই তো সবাই পায় না। চাকরি করতে হলে কষ্ট হয় না? সবাই কি চাকরী পায়? প্রথা আছে, কাশীতে বিশ্বনাথের মন্দিরে বিশ্বনাথ দর্শন করে যেখানে হোক বসে একটু জপ করতে হয়। কেউ কেউ কোনমতে একবার জপ করেই উঠে পড়ে। না উঠেই বা করবে কি? বেশিক্ষণ চোখ বন্ধ করে বসে থাকলে গরু গুতিঁয়ে তুলে দেবে, অর্থাৎ সংসারের টানই সেই দিকে ছোটাবে।
প্রশ্ন: সংসারে থেকে ভগবানকে কিভাবে ডাকব?
উত্তর: ‘শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণকথামৃত’ বইটি পড়, তাতে উত্তর পাবে। ভগবানকে এক হাতে ধরে আর এক হাতে সংসার কর।
প্রশ্ন: আমরা তাঁকে ডাকছি, তিনি শুনছেন কি?
উত্তর: নিশ্চয়ই তিনি শুনছেন, এতে কোন সন্দেহ নেই, কিন্তু তিনি উত্তর দিচ্ছেন না। অভাববোধ তো ভালই, কোন অভাববোধ না থাকলে কি তাঁকে মনে করতে? উত্তর দিচ্ছেন না অর্থাৎ তাঁর ভিতরে কি প্রতিক্রিয়া হচ্ছে তা তুমি জানতে পারছ না। আর তুমি যা ভাল মনে কর তাতেই যে প্রকৃতপক্ষে তোমার ভাল হবে—এমন কোন কথা নেই। তিনি তোমার জন্য যা ভাল হয় তাই বিধান করুন—এই ভাব মনে রাখা সবচেয়ে ভাল।
প্রশ্ন: তাঁকে ডাকলে তিনি শোনেন? আমরা বুঝতে পারি না কেন?
উত্তর: তিনি শুনতে পাচ্ছেন কি না বুঝতে পারবে না। তাঁকে ডাকা correct বা incorrect হচ্ছে কিনা—এই নিয়ে ভেবো না। যেভাবেই তাঁকে ডাক না কেন তিনি বুঝতে পারবেন। আমরা যতই ভুল করি না কেন, তিনি ঠিকই বুঝতে পারেন। অনেকে মনে করে মন্ত্র ভুল বলেছি, তাই কাজ হচ্ছে না, তিনি কি ভূত-প্রেত নাকি যে মন্ত্রের বশ হবেন? তিনি কি জানেন না যে আমরা তাঁকেই ডাকছি? ছেলে যখন ‘বাবা’ বলে স্পষ্ট করে উচ্চারণ করতে পারে না, তখন বাবা কি বুঝতে পারেন না যে ছেলে তাঁকেই ডাকছে?
এজন্য সঠিকপথে এগিয়ে যাবার জন্য প্রথম প্রথম ভাবের আরোপ করতে হয়। সাধুদের কথা চিন্তা করতে হয়, তাঁদের পবিত্র জীবনীগ্রন্থ পড়তে হয়—এটি সাধুসঙ্গ, এতে ছোঁওয়া লাগে। সৎসঙ্গে মনটাও সেই ভাবে ভাবিত হয়। ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ যেন জ্বলন্ত আগুন, সেখানে একটা ভিজে কাঠ দিলেও তা জ্বলে উঠবে। সামান্য অধিকারী হলেও সে তাঁর কৃপায় পূর্ণ হয়ে উঠবে।