কর্মসূত্রে বিদেশ যাত্রার প্রচেষ্টায় সফল হবেন। আয় খারাপ হবে না। বিদ্যা ও দাম্পত্য ক্ষেত্র শুভ। ... বিশদ
বর্ধিত হারে পেনশনের জন্য কেন্দ্রের কাছে ইতিমধ্যেই সাড়ে ১৭ লক্ষ আবেদন জমা পড়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত ১০ হাজার জনকেও ওই পেনশন দিয়ে উঠতে পারেনি করিৎকর্মা জনদরদি সরকার। শীর্ষ আদালতের নির্দেশমতোই, আগ্রহী ব্যক্তিদের তরফে ইপিএফও’তে থোক টাকা জমা করার কথা ছিল। বর্ধিত হারে পেনশন পেতে দেরি হলে ক্ষতিপূরণ হিসেবে সেই টাকার সুদ দিতে হবে সরকারকে। কয়েক লক্ষ আবেদনকারী ওই শর্তেই বিপুল অর্থ জমা করেছেন। আর ঠিক তারপরই মুখে স্পিকটি নট ইপিএফও! এরই মধ্যে আরটিআই করে এই সংক্রান্ত জবাব দাবি করেন হিমাচল প্রদেশের এক ব্যক্তি। অজয় কাপুর নামে ওই নাগরিকের বক্তব্য ছিল, ‘২০১৭ সালের ডিসেম্বর থেকে পেনশন বকেয়া। এদিকে ২০২২ সালের নভেম্বরে সর্বোচ্চ আদালতের রায় অনুযায়ী নির্দিষ্ট অঙ্কের পেনশন পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ইপিএফও তা এখনও দেয়নি।’ তাই আরটিআই মারফত প্রশ্নকর্তার জিজ্ঞাসা ছিল, ‘এক্ষেত্রে ইপিএফও কি বকেয়া সুদ দেবে?’ জবাবে শ্রমমন্ত্রকের অধীন সংস্থাটি স্পষ্ট করেছে, ‘ইপিএস সংশ্লিষ্ট কোনও বকেয়ার উপর ইপিএফওর তরফে সুদ দেওয়ার নিয়ম নেই!’ অজয় কাপুরের আরও প্রশ্ন ছিল, ‘এখন যে পেনশন পাচ্ছি, সেটি আকাঙ্ক্ষিত বর্ধিত হারে রূপান্তরিত হবে কবে?’ জবাবে সংশ্লিষ্ট সকল শ্রমিক-কর্মচারীকে যার পর নাই হতাশই করেছে ইপিএফও। তাদের বক্তব্য, ইপিএফও’র কাছে যে তথ্য রয়েছে, তাতে তাঁকে বর্ধিত হারে পেনশন দেওয়ার পরিস্থিতি নেই। প্রশাসনিক কাজকর্ম যেটুকু এগিয়েছে, তাতে এটুকুই জানানো সম্ভব।
আরটিআইয়ের এই জবাবে স্বভাবতই গোটা প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতাই বড় প্রশ্নচিহ্নের মুখে পড়ল বইকি। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরেও বর্ধিত হারে পেনশন নিয়ে দপ্তরের অন্দরে যে অস্বচ্ছতার পাহাড় জমেছে, সেটাই প্রকারান্তরে সরকারিভাবেই জানানো হল না কি? স্বভাবতই ইপিএস-৯৫-এর আওতাভুক্ত পেনশনভোগীদের সংগঠন ন্যাশনাল অ্যাজিটেশন কমিটি এতে তীব্র ক্ষোভ ব্যক্ত করেছে। সংগঠনের পশ্চিমবঙ্গ শাখার সভাপতি তপন দত্তের বক্তব্য, বর্ধিত পেনশনের ব্যাপারে সরকারের সদিচ্ছা নিয়ে তাঁদের সংশয় গোড়া থেকেই ছিল। এখন সুদ নিয়ে ওঠা প্রাসঙ্গিক প্রশ্নেও তাঁরা সহমত পোষণ করেন। বর্ধিত হারে পেনশনের জন্য কেন্দ্রের দাবিমতোই মোটা টাকা জমা করেছেন আগ্রহী প্রবীণরা। তাহলে যতদিন না সেই পেনশন মেলে ততদিনের জন্য কিংবা যাঁদের আবেদন ফালতু অজুহাতে খারিজ করা হচ্ছে তাঁরা কেন জমা ও আটক টাকার উপর ন্যায্য সুদ পাবেন না? শেষ জীবনের যাবতীয় সঞ্চয়, যা ফিক্সড ডিপোজিট বা অন্য কোনোভাবে সুরক্ষিত ছিল সেসব ভেঙেই তো সরকারের চাহিদা মিটিয়েছেন তাঁরা। দিল্লিতে এক অদ্ভুত সরকার গদিয়ান, তারা সামাজিক সুরক্ষার ধার ধারে না। যুব শ্রেণিকে পাইকারি হারে বেকার রেখেছে। শ্রমিককে এবং কৃষককে বঞ্চিত করেছে যথাক্রমে ন্যূনতম মজুরি এবং এমএসপি থেকে। সরকারি মদতে ধনী-গরিব এবং পুরুষ-নারীর বৈষম্য ক্রমবর্ধমান। প্রবীণ নাগরিকদের শেষদিনগুলি বা মৃত্যুও সুখের হবে না, এবার মিলল তারও ‘মোদি কি গ্যারান্টি’। তারপরেও এই সরকার কোন মুখে ‘আচ্ছে দিন’, ‘অমৃতকাল’ আনার বুলি আওড়ায়!