উচ্চশিক্ষা ও বৃত্তিমূলক শিক্ষায় দিনটি শুভ। কর্মস্থলে বড় কোনও পরিবর্তন নেই। আর্থিক দিক অপেক্ষাকৃত শুভ। ... বিশদ
এই উপ নির্বাচন ফের বুঝিয়ে দিল রাজ্যের সংখ্যালঘুরা এখনও তাদের ত্রাতা ও রক্ষাকর্তা হিসেবে নির্ভরযোগ্য বিকল্প হিসেবে মনে করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। পাশাপাশি ৮ থেকে ৮০, জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত যে ৭২টি প্রকল্পের আর্থিক সুবিধা সরকারের হাত ধরে ঘরে ঘরে পৌঁছে যাচ্ছে, মমতার বিরুদ্ধে কাদা ছিটিয়ে তার মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। এখানেই মার খেয়েছে বিজেপির হিন্দুত্ববাদী বিভাজনের রাজনীতি। মানুষ বিভাজনের রাজনীতি প্রত্যাখ্যান করায় তাদের হাতছাড়া হয়েছে মাদারিহাট আসনটি। আর বামেরা, বিশেষত সিপিএম বুঝেই উঠতে পারছে না বিরোধী হিসেবে তাদের কী করা উচিত। একথা ঠিক, মিটিং-মিছিলে বা সোশ্যাল মিডিয়ায় সিপিএমের উপস্থিতি যথেষ্ট সাড়া জাগানো। কিন্তু মুখে দু’পক্ষকেই সমান অপরাধী বললেও এই দল এখনও বিজেপির চেয়ে তৃণমূলকে বড় শত্রু বলে মনে করে। এমনকী মানুষের স্বার্থবাহী সরকারের সামাজিক প্রকল্পগুলি নিয়েও তারা ঘৃণ্য প্রচার চালাতে দ্বিধা করে না। এই দ্বিচারিতা, মূল শত্রু চিনতে ও ঠিক করতে ব্যর্থতার খেসারত দিতে হচ্ছে সিপিএমকে। ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য বাস্তবের জমিতে তাদের অস্তিত্ব টের পাওয়া যাচ্ছে না। এর ষোলো আনা ফায়দা তুলছে বিজেপি। বামের ভোটে পুষ্ট হচ্ছে ‘রাম’। প্রতিটি ভোটের ফলাফলের পর দেখা যাচ্ছে, সিপিএম এক পা এগনোর কথা বলে দু’ পা পিছিয়ে গিয়েছে।
খবরে প্রকাশ, এবার নাকি ’২৬-এর বিধানসভা ভোটে ‘দাগ’ কাটতে ঝাঁপাতে চলেছে সিপিএম। এ জন্য ‘রাজনৈতিক বিশ্লেষক’ চেয়ে বিজ্ঞাপন দিয়েছে তারা। তার মানে দাঁড়ায়, সেলিম-সুজন-সূর্য মিশ্রদের পরামর্শ আর কাজে আসছে না। তাই পেশাদার পরামর্শদাতা ‘হায়ার’ করার সিদ্ধান্ত। প্রায় ষাট বছরের পুরনো দলে মতাদর্শগত আনুগত্য, পেশাদার বিপ্লবী তৈরি, জনগণতান্ত্রিক বিপ্লবের ভাবনা কালাধারে চলে গিয়েছে। হোলটাইমারদের দল এখন কর্মখালির বিজ্ঞাপন দিয়ে বেতনভুক্ত কর্মী নিয়োগ করে ভোটে ‘দাগ’ কাটার স্লোগান ও প্রচারের রণকৌশল ঠিক করতে চাইছে। নজিরবিহীন পরিবর্তন সন্দেহ নেই। ইতিহাস বলছে, একসময়ে জ্যোতি বসুকে প্রধানমন্ত্রী হতে না দেওয়া, ইউপিএ সরকারের উপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে নেওয়া, ‘শ্রেণিশত্রু’ কংগ্রেসের সঙ্গে সখ্যতা তৈরি করা, বিজেপির চেয়ে তৃণমূলকে বড় শত্রু ভাবার মতো একের পর এক ভুল করে সিপিএম আজ গোটা দেশে কার্যত ক্ষয়িষ্ণু শক্তিতে পরিণত হয়েছে। এখন বঙ্গ সিপিএমের পেশাদার নিয়োগ করে পরিস্থিতি মোকাবিলার নীতি এ রাজ্যে তাদের পায়ের তলায় জমি পেতে সাহায্য করবে কি না, তা ভবিষ্যতে বোঝা যাবে। তবে দলের বঙ্গ বিগ্রেডের এই পদক্ষেপকে প্রকাশ কারাত লবি কী চোখে দেখে, এখন সেটাই দেখার।