উচ্চশিক্ষা ও বৃত্তিমূলক শিক্ষায় দিনটি শুভ। কর্মস্থলে বড় কোনও পরিবর্তন নেই। আর্থিক দিক অপেক্ষাকৃত শুভ। ... বিশদ
বাংলায় প্রবাদ আছে, যে যায় লঙ্কায় সেই হয় রাবণ। ঘটনাও তাই। কেন্দ্রে যে যখন ক্ষমতায়, সিবিআই যেন তার খাস পেয়াদায় অবতীর্ণ। গুজরাতে মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন দেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি একবার কেন্দ্রের কংগ্রেস সরকারকে কটাক্ষ করে বলেছিলেন, সিবিআই হল ‘কংগ্রেস ব্যুরো অব ইন্ডিয়া’। ভাগ্যের পরিহাস, সেই মোদি সরকারের বিরুদ্ধেই বেছে বেছে বিরোধীদের হেনস্তা করতে দুই কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে নির্লজ্জভাবে ব্যবহার করার অভিযোগ উঠেছে। এবং এসব এখন এতটাই নির্লজ্জভাবে হচ্ছে যে সিবিআইকে ‘খাঁচাবন্দি তোতা’ বলে কটাক্ষ শুনতে হয়েছে বিচারপতিদের থেকে। বিরোধীদের অভিযোগ ও আদালতের কটাক্ষ যে একেবারেই অমূলক নয় তার অজস্র উদাহরণ ছড়িয়ে রয়েছে গোটা দেশজুড়ে। গত বছরের মার্চ মাসে সুপ্রিম কোর্টে পিটিশন দিয়ে দেশের ১৪টি বিরোধী রাজনৈতিক দল জানায়, ২০০৪-১৪ সালের দশ বছরে মনমোহন সিংয়ের জমানায় ৭২ জন রাজনীতিকের বিরুদ্ধে তদন্ত করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলি। এর মধ্যে বিরোধীদলের ছিলেন ৪৩ জন। অথচ ২০১৪ থেকে ২৩-এ মোদি জমানার দশ বছরে তদন্তের আওতায় আসা ১২৪ জনের মধ্যে ১১৮ জনই বিরোধী পক্ষের। শতকরা হিসাবে ৯৫ শতাংশ। ওই পিটিশনে সঙ্গতভাবে প্রশ্ন তোলা হয়, পি চিদম্বরম, মণীশ সিসোদিয়া, সঞ্জয় রাউত, সত্যেন্দ্র জৈনদের মতো বিরোধী নেতাদের গ্রেপ্তার করা হলে কেন হিমন্ত বিশ্বশর্মা, নারায়ণ রানের মতো শাসক নেতারা ছাড় পেয়ে যাচ্ছেন? উল্টে দেখা গিয়েছে, আর্থিক কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত হিমন্ত হয়েছেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী, সারদা চিটফান্ড কাণ্ডে অভিযুক্ত মুকুল রায় হয়েছিলেন বিজেপির সহ সভাপতি, নারদ কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত একজন হয়েছেন বিজেপি নেতা। এই কারণেই বিরোধীরা ঠাট্টা করে বলে, ‘ওয়াশিং পাউডার ভাজপা।’
তবে কি সিবিআই-ইডি কেন্দ্রীয় সরকারের হাতের পুতুল হয়ে গিয়েছে? এই প্রশ্নের উত্তর আরও গভীরে। ঘটনা হল, গোটা দেশে এই দুই তদন্তকারী সংস্থার উপর যে মামলার পাহাড় জমেছে তা সামলানোর মতো পরিকাঠামো এদের নেই। যেমন রাজ্যের এক মামলায় ইডির এক অফিসারকে আদালতে দাঁড়িয়ে হতাশ গলায় বলতে শোনা গিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গে তাদের ১৩১টি মামলা চলছে, একজন অফিসার ২২টি করে মামলা দেখছেন। তদন্তে গাফিলতির অভিযোগের জবাবে একথা জানিয়েছিলেন ওই ইডি অফিসার। এই ছবিটা শুধু বাংলায় নয়, গোটা দেশে সর্বত্র। কিন্তু মূল প্রশ্ন হল, সিবিআই-ইডি কি কেন্দ্রের হাতের পুতুল? নাকি তাদের পুতুল বানিয়ে রাখা হয়েছে? উত্তরটা অনেকেরই জানা। তাই একথা নির্দ্বিধায় বলা যায়, যতদিন এই তদন্তকারী সংস্থাগুলি সম্পূর্ণ রাজনীতি মুক্ত হয়ে কাজ করতে না পারবে ততদিন শুধু মামলার পর মামলা জমতেই থাকবে। অধরা থেকে যাবে সাফল্য।