উচ্চশিক্ষা ও বৃত্তিমূলক শিক্ষায় দিনটি শুভ। কর্মস্থলে বড় কোনও পরিবর্তন নেই। আর্থিক দিক অপেক্ষাকৃত শুভ। ... বিশদ
রবিবার দুপুরে এলাকারই খালপাড়ে একটি জায়গা খুঁড়ে ওই ছাত্রীর দেহ উদ্ধার করে পুলিস। প্রাথমিক তদন্তে উঠে আসছে, ওই ছাত্রীর সঙ্গে ফারুকের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সেই সম্পর্কের টানাপোড়েন থেকেই প্রেমিকাকে খুন করে ফারুক। প্রমাণ লোপাটের উদ্দেশ্যে দেহ খালপাড়ে পুঁতে দেয় সে। ছাত্রীর পরিবারের অভিযোগ, ফারুক ও তার বন্ধুরা অপহরণ করার পর তাদের মেয়েকে খুন করেছে। পুলিস সূত্রের খবর, ওই ছাত্রীর দেহের নিম্নাঙ্গে কোনও বস্ত্র ছিল না। ফলে, খুন করার আগে তাকে যৌন নির্যাতন করা হয়েছিল কি না, সেই সম্ভাবনাও খতিয়ে দেখছে পুলিস। এদিন বিকেলে দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি প্রেমিক ফারুককে গ্রেপ্তার কৃষ্ণনগর আদালতে তোলা হয়। বিচারক তাকে পাঁচ দিনের পুলিসি হেফাজতের নির্দেশ দেন।
কৃষ্ণনগর পুলিস জেলার ডিএসপি শিল্পী পাল বলেন, ‘অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা তদন্ত শুরু করেছি। সেই মতো মূল অভিযুক্ত গ্রেপ্তার হয়েছে। নাবালিকার দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পরিবারের তরফ থেকে প্রথমে একটি নিখোঁজের অভিযোগ করা হয়েছিল। ময়নাতদন্তে রিপোর্ট আসার পর পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে। নাবালিকার সঙ্গে একটা ব্যাগ ছিল বলে পরিবারের লোকেরা জানিয়েছেন। সেই ব্যাগটি খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা চলছে।’
ছাত্রীর পরিবার সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার রাত থেকে তাঁদের বাড়ির মেয়ে নিখোঁজ ছিল। অভিযোগ, তাকে ফারুক ও তার সঙ্গীরা জোর করে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। শনিবার সকালে তাঁরা ভীমপুর থানার মিসিং ডায়েরি করেন। সেইসঙ্গে ঘটনার সঙ্গে ফারুক যুক্ত থাকতে পারে সন্দেহ প্রকাশ করেন। ফারুককে থানায় তুলে আনে পুলিস। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদেই সে জানায়, ওই নাবালিকাকে শ্বাসরোধ করে খুন করেছে। দেহটি নারায়ণপুর এলাকায় একটি খালের ধারে পোঁতা রয়েছে। তার কথার সূত্র ধরেই মাটি খুঁড়ে ছাত্রীর দেহ উদ্ধার করে পুলিস।
ভীমপুর থানার আদিপোতা এলাকায় বাড়ি ওই ছাত্রীর। পড়শি গ্রামে বাড়ি বছর আঠারোর যুবক ফারুকের। সে পরিযায়ী শ্রমিক। পুনেতে থাকে। মাস ছয় আগে সে গ্রামে আসে। আদিপোতা গ্রামে তার মামাবাড়ি। সেই সূত্রেই মাঝেমধ্যেই আদিপোতাতে যেত। সেই সূত্রে ছাত্রীর সঙ্গে ফারুকের পরিচয়। কিছুদিন পরেই তাঁদের মধ্যে সম্পর্ক তৈরি হয়। যদিও ওই ছাত্রীর পরিবারের দাবি, ফারুক তাঁদের মেয়েকে উত্যক্ত করত। আগামী সপ্তাহে ওই ছাত্রীর বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। ফারুক সেটা মেনে নিতে পারেনি। পরিবারের দাবি, বৃহস্পতিবার রাতে ঘর থেকে বাইরে বেরোতেই ফারুক ও তার বন্ধুরা তাকে তুলে নিয়ে যায়।
কাঁদতে কাঁদতে নাবালিকার মা এদিন বলেন, ‘আমার মেয়ে ফারুককে পছন্দ করত না। কিন্তু ফারুক ওকে প্রতিনিয়ত উত্ত্যক্ত করত। আর্থিক অবস্থা খারাপ হওয়ার কারণে মেয়ের বিয়ে দেওয়ার কথা ভাবছিলাম। সেইমতো সম্বন্ধ চূড়ান্ত হয়েছিল। যেটা ফারুক মেনে নিতে পারেনি। তাই আমার মেয়েকে বাড়ি থেকে তুলে এনে খুন করে মাটিতে পুঁতে দিয়েছে। আমি ওর কঠিন শাস্তি চাই।’ অন্যদিকে, পুলিসের কাছে ফারুক নাকি দাবি করেছে, বিয়ে করার জন্য ওই নাবালিকা তাকে জোর করছিল। সেই কারণেই তাকে খুন করে সে।