আয় বৃদ্ধি ও গৃহসুখ বৃদ্ধি। কর্মস্থলে সাফল্য ও প্রশংসা লাভের সম্ভাবনা। শরীর-স্বাস্থ্য বুঝে চলুন। ... বিশদ
নির্ভয়ার ঘটনা ভুলে যায়নি দেশ। ২০১২ সালে রাজধানীর বুকে গণধর্ষণ করে খুনের ঘটনার প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছিল নাগরিক সমাজ। তখন অবশ্য মোদির দল ক্ষমতায় ছিল না। কিন্তু তারপর হাতরাস, উন্নাও, কাঠুয়া, মণিপুর সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ধর্ষণের মিছিল দেখেছে দেশবাসী। এর অনেক ঘটনার সঙ্গেই শাসকদলের কর্মীদের একাংশের যোগাযোগ স্পষ্ট হয়েছে। কাশ্মীরের কাঠুয়ায় আট বছরের শিশুকে ধর্ষণ করে খুনের পর ধর্ষকদের মুক্তির দাবিতে মিছিল করতে দেখা গিয়েছে বিজেপি ঘনিষ্ঠ আইনজীবীদের একাংশকে। যোগীরাজ্য উত্তরপ্রদেশের উন্নাও-এ এক তরুণীর উপর পাশবিক অত্যাচারে যুক্ত অভিযুক্তের নাম কুলদীপ সেঙ্গার। তিনি ছিলেন তৎকালীন বিজেপি বিধায়ক। হাতরাসে দলিত কন্যাকে গণধর্ষণের পর দোষীদের মুক্তির দাবিতে গ্রামসভা বসিয়েছিল শাসকদলেরই লোকজন। এই ঘটনায় যোগীর পুলিসের ভূমিকা নিয়েও বড়সড় প্রশ্ন ওঠে। মণিপুরে বিজেপি’র রাজত্বে মহিলাকে ধর্ষণ এবং প্রকাশ্য রাস্তায় নগ্ন করে ঘোরানোর ঘটনায় গোটা বিশ্বের কাছে মাথা হেঁট হয়েছে ভারতের। অথবা ব্রিজভূষণ সিংয়ের কথাও ভুলে যায়নি দেশ। বিজেপি’র প্রাক্তন সাংসদ ও ভারতীয় কুস্তি ফেডারেশনের প্রাক্তন এই কর্তার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক পদকপ্রাপ্ত ছয় কুস্তিগীর যৌন হেনস্তার অভিযোগ আনেন। দিল্লির রাজপথে এই সোনার মেয়েদের উপর পুলিসের নির্মম অত্যাচার এবং ব্রিজভূষণকে রক্ষা করতে মোদি সরকারের ভূমিকায় কোনও আব্রু ছিল না সেদিন। এই বাহুবলী নেতার ছেলেকে লোকসভায় প্রার্থীও করেছে বিজেপি। গেরুয়াবাহিনীর কুকীর্তির আরও এক অকুস্থল প্রধানমন্ত্রীর নিজের রাজ্য গুজরাত। সেই রাজ্যের বিলকিস বানোর ধর্ষকদের যাবজ্জীবনের সাজা কমিয়ে মুক্তি দিয়েছিল গুজরাতের বিজেপি সরকার। ‘অপরাধীদের’ মুক্তির দিন ঢালাও সংবর্ধনার আয়োজন করেছিল ‘উগ্রহিন্দুত্ববাদীরা’। এসবই নরেন্দ্র মোদির ঘোষিত ‘অমৃতকালে’র ফসল। কিন্তু এর কোনও ঘটনাতেই প্রধানমন্ত্রীকে সেভাবে উদ্বেগ প্রকাশ করতে দেখেনি দেশের মানুষ (পরে মণিপুর নিয়ে তিনি মৌনতা ভাঙেন)। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কোনও কথা বলতে শোনা যায়নি তাঁকে। দেশের মানুষ এর উত্তর চায় আজকের উদ্বিগ্ন প্রধানমন্ত্রীর কাছে।
১ জুলাই থেকে ভারতীয় দণ্ডবিধির পরিবর্তে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা চালু করেছে মোদি সরকার। নতুন আইনে মহিলা ও শিশুদের উপর নির্যাতনে একাধিক শাস্তির কথা বলা হয়েছে। কিন্তু ডাক্তার-স্বাস্থ্যকর্মীদের উপর হামলা রুখতে আইনে আলাদা করে কঠোর ধারার কথা বলা নেই। অথচ এসব ধারা থাকা উচিত বলে মনে করে স্বাস্থ্যের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন সংগঠন। খবরে প্রকাশ, এই সংক্রান্ত আইনের প্রস্তাব করেছিল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক। সরকার অবশ্য সেসব খারিজ করে দিয়েছে। বর্তমান আইন অনুযায়ী, নাবালিকা ধর্ষণে সর্বোচ্চ মৃত্যুদণ্ডের কথা বলা হলেও অন্যক্ষেত্রে সর্বোচ্চ শাস্তি হিসাবে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের কথা বলা হয়েছে। এখন দেখার, সমাজের দাবি এবং প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের জেরে আইনে নতুন কোনও কঠোর ধারা যুক্তি হয় কি না।