আয় বৃদ্ধি ও গৃহসুখ বৃদ্ধি। কর্মস্থলে সাফল্য ও প্রশংসা লাভের সম্ভাবনা। শরীর-স্বাস্থ্য বুঝে চলুন। ... বিশদ
অথচ নির্ভয়া থেকে আর জি করের মতো বর্বরোচিত ঘটনা, তা নিয়ে দেশ উত্তাল হয়ে উঠলেও ধর্ষণের রেখচিত্র ঊর্ধ্বগামী। রীতিমতো হাড়হিম করা। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর রিপোর্ট বলছে, মোদি জমানায় শুধু ২০২২ সালে দেশে ৩৫ হাজার ৮০টি ধর্ষণের মামলা রুজু হয়েছে। প্রতিদিন গড়ে যা ৯৬টি। হিসাবটা ২০১৭ থেকে ’২২ সালের মধ্যে ধরলে দেখা যাবে, ওই পাঁচ বছর গড়ে প্রতিদিন ৮৬টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। ৮২টি ক্ষেত্রে ধর্ষক পূর্ব পরিচিত। পাঁচ বছরে ধর্ষণের মামলা রুজু হয়েছে প্রায় ১ লক্ষ ৯০ হাজার। আবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তথ্য দিয়ে দাবি করেছেন, আর জি কর কাণ্ডের পর মাত্র দশ দিনে দেশে ৯০০টি ধর্ষণের মামলা হয়েছে। মানে, ২৪ ঘণ্টায় ৯০টি, প্রতি ঘণ্টায় ৪টি। তবু ধর্ষণের বিরাম নেই! গত কয়েক দিনে ডাবল ইঞ্জিন সরকারের দুই রাজ্য অসম ও মহারাষ্ট্রে একাধিক ধর্ষণের ঘটনা সামনে এসেছে। অসমের নগাঁও, লখিমপুর ও তেজপুর জেলায় পরপর ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। ওই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নিজেই জানিয়েছেন, গত দু’মাসে অসমে ২২টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। অন্যদিকে, মহারাষ্ট্রের পুনেতে তেরো বছরের এক নাবালিকাকে মদ্যপান করিয়ে জোর করে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। ওই রাজ্যের থানে জেলার বদলাপুরে স্কুলের মধ্যে দুই শিশুর উপর যৌন নির্যাতন চালানোর অভিযোগ উঠেছে। প্রতিবাদে সরব হয়েছে গোটা দেশ। প্রশ্ন উঠেছে, এই ব্যাধি কি রাজনৈতিক আকচা-আকচিতে থামবে?
ধর্ষণের বিচার আর শাস্তি এক বিষয় নয়। ২০১২-তে নির্ভয়া কাণ্ডের পর ২০১৩ সালে ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের বিচারক অপরাধীদের ফাঁসির সাজা শুনিয়েছিলেন। কিন্তু তারপর বিচার ব্যবস্থার ফাঁকফোকর গলে অপরাধীরা সাত বছর কাটিয়ে দিয়েছিল। ইতিহাস বলছে কোনও ধর্ষণের ঘটনার পর সংশ্লিষ্ট পুলিস কর্তৃপক্ষ কতটা নিশ্চিত প্রমাণ জোগাড় করতে পারছে, কোন ধারায় মামলা দিচ্ছে তার উপর শাস্তির চরিত্র অনেকটাই নির্ভর করে। এক্ষেত্রে অনেক সময় পুলিসের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। আবার নিম্ন আদালত মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবনের মতো সাজা দিলেও তার বিরুদ্ধে ধাপে ধাপে সর্বোচ্চ আদালত, এমনকী রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা করার অধিকার রয়েছে অভিযুক্তের। এর পাশাপাশি রয়েছে পুলিসি তৎপরতা ও বিচার ব্যবস্থার গড়িমসির অভিযোগ। তাই ধর্ষণের বিচার ও শাস্তির ক্ষেত্রে রাতারাতি সব বদলে যাবে—বিষয়টা অনেকটা বেদনার বালুচরে খেলাঘর তৈরির স্বপ্নের মতো শোনায়।