সন্তানের দাম্পত্য অশান্তিতে মানসিক চিন্তা। প্রেম-প্রণয়ে বিশ্বাস ভঙ্গ ও মনঃকষ্ট। ব্যবসার অগ্রগতি। ... বিশদ
বিজেপি শাসনে কেমন আছে মোদির বৃহত্তম পরিবার? ধরা যাক বেকারত্বের কথা। আইএলও এবং আইএইচডি-র যৌথ সমীক্ষা বলছে, দেশে বেকারদের মধ্যে যুব সম্প্রদায়ের অনুপাত বেড়ে হয়েছে ৮৩ শতাংশ। এই বেকারদের ১০০ জনের মধ্যে ৭৬.৭ জন শিক্ষিত যুবক, ৬২.২ জন শিক্ষিত যুবতী। ধরা যাক, মূল্যবৃদ্ধির কথা। গত এপ্রিলে পাইকারি বাজারে মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে ১.২৬ শতাংশ, যা তেরো মাসে সর্বোচ্চ। খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ৭ শতাংশে। খাবারের দাম এক বছর আগের তুলনায় বেড়েছে ৮.৭ শতাংশ। ভোটের মুখে গ্যাসের দামে সামান্য ছাড় দিলেও তার দাম ২০১৪ সালের তুলনায় দ্বিগুণ। জ্বালানি তেলের দাম লিটার প্রতি ১০০ টাকার আশপাশে ঘোরাফেরা করছে। পরিবারের জন্য ‘প্রাণপাত’ করা মোদি জমানায় আয় ও সম্পদের নিরিখে ধনী দরিদ্রের ব্যবধান হয়েছে আকাশচুম্বী। দেশের এক শতাংশ মানুষের হাতে রয়েছে দেশের মোট উপার্জনের ২২.৬ শতাংশ এবং মোট সম্পদের ৪০.১ শতাংশ। নীচের দিকের ৫০ শতাংশের গড় আয় বছরে ৭১ হাজার ১৩৬ টাকা, মাঝের ৪০ শতাংশের গড় আয় ১ লক্ষ ৬৫ হাজার ২৭৩ টাকা আর উপরের দশ শতাংশের গড় আয় ১৩ লক্ষ ৫২ হাজার ৯৮৫ টাকা। মাথাপিছু আয়ে ১৮৯টি দেশের মধ্যে ভারত রয়েছে ১৪১টি স্থানে। শেষ সাড়ে চার বছরে আয়কর দাতার সংখ্যা কমেছে ৬০ শতাংশ। আবার গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্স অনুযায়ী, ২০২৩-এ ক্ষুধাসূচকে বিশ্বের ১২৫টি দেশের মধ্যে ভারতের স্থান ১১১তম। কেমন আছেন মোদি পরিবারের মেয়েরা? এডিবি-র রিপোর্ট বলছে, কর্মরত মহিলাদের ১৬ শতাংশ নিয়মিত বেতন বা মজুরি পান, ২২ শতাংশ অস্থায়ী কর্মী, ২৫ শতাংশ স্বনিযুক্ত কর্মী এবং ৩৭ শতাংশ পারিবারিক শ্রমদানে নিযুক্ত উপার্জনহীন। শিশুমৃত্যুর হারেও এদেশ রেকর্ড করেছে। কর্তার সৌজন্যে এই তো পরিবারের হাল!
বিরোধীদের অভিযোগ, মোদির পরিবার দেশের ১৪০ কোটি জনগণের নয়। বরং গত দশ বছরে এমন অনেক ‘রত্নের’ মুখ দেখেছে দেশ যাঁরা মোদির পরিবার আলো করে রয়েছেন। যেমন সাংসদ প্রোজ্জ্বল রেভানা। বিজেপির শরিক জেডি (এস) এই সাংসদ এবারেও হাসান কেন্দ্রের প্রার্থী। যৌন হেনস্তায় অভিযুক্ত প্রোজ্জ্বলের বিরুদ্ধে প্রায় তিন হাজার ভিডিওতে কুর্কীতির (অভিযোগ) নাকি প্রমাণ রয়েছে। এসব জেনেও তাঁকে জেতাতে সভা করেছেন মোদি! উত্তরাখণ্ডের ১৯ বছরের তরুণী অঙ্কিতা ভাণ্ডারীর কথাই ধরা যাক। এক বিজেপি নেতার ছেলের বিরুদ্ধে অঙ্কিতাকে শারীরিক নির্যাতনের পর খুনের অভিযোগ রয়েছে। উত্তরপ্রদেশের হাতরাস, জম্মু-কাশ্মীরের কাঠুয়ায় নির্যাতনকারীদের বাঁচাতে মোদিবাহিনীর তৎপরতা দেখেছে দেশের মানুষ। দেশবাসী এও দেখেছে বিলকিস বানোর ধর্ষকদের মালা পরিয়ে জনসভার মঞ্চেও তোলেন বিজেপি নেতারা! সকলেরই জানা, বিজেপির আইটি সেলের তিন কর্মীর বিরুদ্ধে বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের বি.টেক পড়ুয়া এক তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগের কথা। মোদি সরকারের ‘বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও’ প্রকল্পের মুখ আন্তর্জাতিক পদকজয়ী কুস্তিগীর সাক্ষী মালিক এবং আরও কয়েকজন। বিজেপির সাংসদ ও বাহুবলী নেতা ব্রিজভূষণ শরণ সিংয়ের বিরুদ্ধে কুস্তিগীরদের কেউ কেউ যৌন নিগ্রহের অভিযোগ তোলায় তার কী ফল হয়েছে তা সকলেরই জানা। এই ভোটে ব্রিজভূষণের ছেলেকে প্রার্থী করে নিজেদের আসল স্বরূপ চিনিয়ে দিয়েছেন মোদিরা। তাই আবেগঘন গলায় মোদি যে দাবিই করুন না কেন, দেশবাসী নয়, মোদির পরিবার আসলে কারা তা স্পষ্ট।