অতি সত্যকথনের জন্য শত্রু বৃদ্ধি। বিদেশে গবেষণা বা কাজকর্মের সুযোগ হতে পারে। সপরিবারে দূরভ্রমণের যোগ। ... বিশদ
এ বিষয়ে কাটোয়ার মহকুমা শাসক প্রশান্তরাজ শুক্লা বলেন, পুরো বিষয়টি কী অবস্থায় আছে, তা খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে। বিষয়টি যাতে বাস্তবায়িত হয়, তার জন্য আমরা চেষ্টা করব।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সার্কিট ট্যুরিজম গড়ে তোলার জন্য এখনও সেভাবে আর্থিক অনুমোদনই মেলেনি। কবে কাজ শুরু হবে বা আদৌ কাজ হবে কি না, তা নিয়েও কোনও তথ্য মেলেনি প্রশাসনের কাছে। কাটোয়া শহর ও মহকুমার ঐতিহাসিক গুরুত্ব অনেক। এই কাটোয়া শহরেই ভাগীরথীর তীরে বসে মস্তকমুণ্ডন করে কেশব ভারতীর কাছে সন্ন্যাসধর্মে দীক্ষিত হয়েছিলেন শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু। ঠিক তেমনই আবার মুসলিম শাসকদের নানা কীর্তি ছড়িয়ে আছে মঙ্গলকোট, কেতুগ্রামের নানা অংশে। আবার মহকুমার মধ্যেই আছে একাধিক সতীপীঠ। মঙ্গলকোটে বিক্রমাদিত্যের ঢিবিও একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নক্ষেত্র। অর্থাৎ পর্যটনের সব রকম রসদ ঠাসা আছে কাটোয়া মহকুমাজুড়ে। তবুও কাটোয়া পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে সেভাবে উঠে আসতে পারেনি। কথা ছিল, সার্কিট ট্যুরিজমের জন্য কাটোয়া শহরের স্টেডিয়ামের পিছনে একটি সার্কিট হাউস গড়ে উঠবে। তাছাড়া বেহাল হয়ে যাওয়া ঐতিহাসিক স্মৃতি সৌধগুলির সংস্কার করা হবে। কিন্তু এখনও সেসব কিছুই এগয়নি। জানা গিয়েছে, ডিপিআর পাঠানো হলেও অর্থ বরাদ্দ না হওয়ায় সার্কিট ট্যুরিজমের কাজ এখন প্রায় বিশবাঁও জলে।
২০১৬ সালের শেষের দিকে মহকুমা প্রশাসন কাটোয়ার পর্যটন কেন্দ্রগুলিকে যুক্ত করে একটি সার্কিট ট্যুরিজম তৈরি করার উদ্যোগ নেয়। স্থানীয় বাসিন্দা, ইতিহাসপ্রেমীদের নিয়ে একটি কমিটিও তৈরি করা হয়। কমিটির উপর দায়িত্ব দেওয়া হয় সার্কিট ট্যুরিজমের খসড়া তৈরি করার। ওই কমিটির সদস্যরা দ্রুতগতিতে তা তৈরি করেন। কিন্তু তারপরেই থমকে যায় সবকিছু। এখনও পর্যন্ত সার্কিট ট্যুরিজম তৈরির কোনও কাজই শুরু করতে পারেনি প্রশাসন। একদিকে যেমন আছে কাটোয়ার গৌরাঙ্গ বাড়ি, মাধাইতলা, শাহি মসজিদ, দাঁইহাট বাগটিকরা মন্দির, জগদান্দপুর মন্দির। অন্যদিকে রয়েছে শ্রীখণ্ড শিবমন্দির, অগ্রদ্বীপের গোপীনাথ, মঙ্গলকোটের যোগাদ্যা, কোগ্রাম মন্দির, বিক্রমাদিত্যের ঢিবি, হোসেন শাহি ও হামিদ বাঙালির মসজিদ। এছাড়াও কেতুগ্রামের বাহুলাক্ষ্মী, অট্টহাস মন্দির সহ সমস্ত কিছুকে এক সুতোয় জোড়ার যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, আদৌ তা বাস্তবায়িত হবে কি না, সেটাই এখন লাখ টাকার প্রশ্ন। প্রশাসনের উদ্যোগে রাজ্যের পর্যটন মানচিত্রে কাটোয়ার স্থান উঠে আসার যে সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল, তাতে উচ্ছসিত হয়েছিলেন কাটোয়ার বাসিন্দা ও ইতিহাসপ্রেমীরাও। কিন্তু এতদিনেও কোনও কাজ না হওয়ায় হতাশা বাড়ছে। কাটোয়ার স্থানীয় বাসিন্দা ও ইতিহাসপ্রেমীদের একাংশ জানান, ভেবেছিলাম এবার ভালো কিছু হবে। কিন্তু কিছুই তো হল না এখনও। আদৌ কিছু হবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ হচ্ছে। এদিকে কাটোয়া মহকুমাজুড়ে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে উঠলে যে বিপুল মানুষের কর্মসংস্থান গড়ে উঠবে, তা বলাই বাহুল্য।