শরীর-স্বাস্থ্যের প্রতি নজর দেওয়া প্রয়োজন। কর্মক্ষেত্রে উন্নতির সম্ভাবনা। গুপ্ত শত্রুতার মোকাবিলায় সতর্কতা প্রয়োজন। উচ্চশিক্ষায় বিলম্বিত ... বিশদ
শুক্রবার সকালে রামপুরহাট-১ ব্লকের নারায়ণপুর গ্রাম পঞ্চায়েত পরিদর্শন করে রামপুরহাটে নিজের অফিসে ফিরছিলেন মহকুমা শাসক। তিনি লক্ষ্য করেন, রামপুরহাট-দুমকা রোডের উপর বালিয়া গ্রামের কাছে রাস্তার বাঁক ঘোরার মুখে কিছু মানুষ জটলা পাকিয়ে রয়েছেন। গাড়ি থেকে নেমে তিনি খোঁজ নিতে গিয়ে দেখেন, দু’জন স্কুটি আরোহী দুর্ঘটনায় জখম হয়ে রাস্তার ধারে অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে রয়েছেন। তাঁদের জখম এতটাই গুরুতর যে, তড়িঘড়ি হাসপাতালে পৌঁছনো না গেলে এভাবে পড়ে থেকে প্রাণে মারা যেতে পারেন। পুলিসের গাড়ি বা অ্যাম্বুলেন্সে খবর দিলে রামপুরহাট থেকে আসতে অনেকটা সময় লেগে যাবে। এই অবস্থায় তিনি নিজে রক্তাক্ত জখমদের উদ্ধার করে নিজের গাড়িতে চাপিয়ে হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা দেন। গাড়িতে বসেই তিনি পুলিস ও মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে ফোন করে জানান। সেইমতো পুলিস ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তৈরি ছিল। যাওয়া মাত্র জখমদের সিটিস্ক্যান সহ নানা চিকিৎসা শুরু হয়ে যায়। চিকিৎসক জানান, সঠিক সময়ে জখমদের হাসপাতালে আনা হয়েছে। নইলে তাঁদের প্রাণে বাঁচানো অসম্ভব হয়ে যেত।
জানা গিয়েছে, জখমদের নাম আলম শেখ (৪৫) ও হাসিবুল শেখ (২৭)। বাড়ি সাঁইথিয়া থানার লহাট গ্রামে। তাঁদের এক আত্মীয় বদরে আলম নারায়ণপুর লাগোয়া তেঁতুলবাঁধি মাদ্রাসার শিক্ষক। বৃহস্পতিবার তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসেন ওই দু’জন। এদিন তাঁরা স্কুটিতে করে দুমকা-রামপুরহাট রোড ধরে বাড়ি ফিরছিলেন। বালিয়া গ্রামের কাছে রাস্তার বাঁক ঘুরতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে স্কুটির চাকা পিছলে তাঁরা গাড়ি নিয়ে পড়ে যান। হেলমেট না থাকায় দু’জনেই মাথায় আঘাত পেয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। স্থানীয় মানুষজন তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানোর জন্য যানবাহনের অপেক্ষা করছিলেন। ঠিক তখনই ওই রাস্তা দিয়ে নিজের অফিসে আসছিলেন মহকুমা শাসক। তিনি রক্ষাকর্তার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে জখম দু’জনকে উদ্ধার করে নিজের গাড়িতে চাপিয়ে হাসপাতালে পৌঁছে দেন। গ্রামবাসীরা বলেন, আমরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে হাত তুলে গাড়ি দাঁড় করানোর চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু, একটা গাড়িকেও দাঁড় করাতে পারিনি। মহকুমা শাসক না থাকলে হয়তো দু’জন এখানে পড়ে থেকেই মারা যেতেন।
বদরে আলম বলেন, মহকুমা শাসককে ধন্যবাদ দেওয়ার ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না। তিনি নিজের ব্যস্ততার মাঝেও যেভাবে বিপদের সময় পাশে দাঁড়ালেন এবং নিজের গাড়ি করে হাসপাতালে পৌঁছে দিলেন তা চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।
পুলিসের এক আধিকারিক জানান, ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’ নিয়ে লাগাতার প্রচার সত্ত্বেও অধিকাংশ বাইক চালক হেলমেট ব্যবহার করছেন না। ফলে, ছোটখাট দুর্ঘটনাতেও গুরুতর জখম হয়ে পড়ছেন বাইক আরোহীরা। মানুষকেও সচেতন হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।